
ছবি : সংগৃহীত
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। তিনি বলেন, “ভারত যদি আরেকটি হামলার দুঃসাহস করে, তবে যা কিছু অবশিষ্ট আছে, তাও ধ্বংস হয়ে যাবে।”
বুধবার (১৪ মে) সিয়ালকোটের নিকট পাসরুর সামরিক ছাউনি পরিদর্শনকালে এই মন্তব্য করেন তিনি।
এই সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা আসিফ, পরিকল্পনা মন্ত্রী আহসান ইকবাল এবং তথ্যমন্ত্রী আত্তা তারার। সামরিক পর্যায়ে উপস্থিত ছিলেন সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির এবং বিমানবাহিনীর প্রধান জহির বাবর সিদ্দিকি।
“অহংকার ও মিথ্যার ভিত্তিতে আগ্রাসন”
শেহবাজ শরিফ বলেন, “ভারত মিথ্যা, অহংকার ও আত্মম্ভরিতার ভিত্তিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আগ্রাসন চালিয়েছে। আমরা তদন্তের প্রস্তাব দিয়েছিলাম, কিন্তু তারা ইচ্ছাকৃতভাবে বৈরিতার পথ বেছে নিয়েছে।” তিনি অভিযোগ করেন, ভারতের হামলায় শিশু, নারী ও বয়স্ক নাগরিকরা শহিদ হয়েছেন এবং নিরীহ মানুষদের ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দেওয়া আন্তর্জাতিক আইন ও নীতিমালার সম্পূর্ণ লঙ্ঘন।
“সশস্ত্র বাহিনী জাতির মুকুট”
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী দ্রুত জবাব দিয়ে ভারতের আগ্রাসন প্রতিহত করেছে। “আমাদের শহিদরা দেশের সম্মান বাঁচিয়েছেন। সশস্ত্র বাহিনীর বীরত্বে গোটা জাতি গর্বিত।” তিনি জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটির চেয়ারম্যান, সেনাপ্রধান, বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনীর প্রধানদের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।
জেনারেল আসিম মুনিরের কৌশলগত নেতৃত্বের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যুদ্ধের সময় আমি তার সঙ্গে বৈঠক করেছি এবং তার পরিকল্পনায় আমি গর্বিত। আমাদের বাহিনী শুধু শত্রুকে পরাজিতই করেনি, বরং জাতির আত্মবিশ্বাসও ফিরিয়ে এনেছে।”
জলযুদ্ধ ও জবাবি হামলার হুঁশিয়ারি
শেহবাজ শরিফ কড়া ভাষায় ভারতকে সতর্ক করে বলেন, “আমাদের পানির উপর হস্তক্ষেপ করা রেড লাইন। মি. মোদি, মনে রাখবেন, ১৯৭১ সালে মুজিব বাহিনীকে কারা প্রশিক্ষণ দিয়েছিল? জাফর এক্সপ্রেস বিস্ফোরণের সূত্র তেহরিক-ই-তালেবান ও বিএলএর মাধ্যমে ভারতের দিকে যায়। কুলভূষণ যাদব কীভাবে বেলুচিস্তানে এলো?”
তিনি আরও বলেন, “ভারতের রাত্রিকালীন হামলা ছিল এক চোরের মত। আর যদি এমন কাজ করে বসেন, তাহলে সর্বনাশ নিশ্চিত। আমরা শান্তি চাই, তবে যুদ্ধ চাপিয়ে দিলে জবাব দিতে প্রস্তুত।”
“নদীর বাঁধ ধ্বংসের চেষ্টা করলে পাল্টা ধ্বংস হবে”
শেহবাজ আরও বলেন, “ভারত যদি আমাদের নীলম-ঝেলুম বাঁধ ধ্বংস করতে সফল হতো, তবে আমরাও ভারতের সব বাঁধ উড়িয়ে দিতাম। যুদ্ধ ও শান্তি—দুটি পথেই প্রস্তুত আছি। সিদ্ধান্ত ভারতকেই নিতে হবে।”
তিনি একাধিকবার বলেন, “আমরা শান্তি চাই, অগ্রগতি চাই, সমৃদ্ধি চাই — কিন্তু আমাদের এই ইচ্ছাকে দুর্বলতা ভাবা হবে মারাত্মক ভুল।”
পাকিস্তানের সর্বোচ্চ রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্বের এই বক্তব্যে উপমহাদেশে নতুন করে উত্তেজনার সঞ্চার হয়েছে। তবে শেহবাজ শরিফ বারবারই দ্বিপাক্ষিক শান্তি ও আলোচনার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন—শর্ত সাপেক্ষে।
সূত্র - if-you-dare-attack-again-what-s-left-will-also-be-destroyed-pm-shehbaz-warns-modi
সা/ই