
প্রায় ৩৪ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে বেক্সিমকো গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান
প্রায় ৩৪ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে বেক্সিমকো গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান অটাম লুপ অ্যাপারেলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ওয়াসিউর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। এদিকে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার কণ্ঠ নকল করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আদায়ের অভিযোগে মোতাল্লেমহোসেন ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ১৩টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এ তথ্য জানান।
বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন জানান, অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যের আড়ালে প্রায় ৩৪ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে বেক্সিমকে গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান অটাম লুপ অ্যাপারেলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও শেয়ারহোল্ডার ওয়াসিউর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে। বৃহস্পতিবার মধ্যবাড্ডার ডিআইটি প্রজেক্ট এলাকার অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।
জসীম উদ্দিন খান জানান, মতিঝিলের দিলকুশার জনতা ব্যাংকের লোকাল অফিস শাখা থেকে অটাম লুপ অ্যাপারেলস লিমিটেড তিনটি এলসি/সেলস কন্ট্রাক্ট গ্রহণ করে। প্রতিষ্ঠানটি ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ১০ সেপ্টেম্বর সময়কালে আমদানির নামে পণ্য রপ্তানি করে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী রপ্তানির চার মাসের মধ্যে রপ্তানি মূল্য দেশে ফেরত আনার বাধ্যবাধকতা থাকলেও প্রতিষ্ঠানটি তা ফেরত আনেনি। সিআইডির তদন্তে আরও উঠে আসে অটাম লুপ অ্যাপারেলস লিমিটেড ইচ্ছাকৃতভাবে রপ্তানিমূল্য দেশে ফেরত না এনে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী অর্থ পাচারে লিপ্ত হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত ওয়াসিউর রহমান প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও শেয়ারহোল্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি ও অন্য আসামিরা পরিকল্পিতভাবে স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে প্রায় ৩৪ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেন। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মতিঝিল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। বর্তমানে মামলাটি সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটে তদন্তাধীন রয়েছে।
সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, গ্রেপ্তারকৃত ওয়াসিউর রহমানকে আদালতে সোপর্দ করে তার বিরুদ্ধে রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। একই সঙ্গে তিনি ও তার সহযোগীদের বিদেশে কোনো অবৈধ সম্পদ রয়েছে কি না সে বিষয়ে অনুসন্ধান কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
এ ছাড়া বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানির বেক্সিমকো গ্রুপ) প্রতিষ্ঠাতা ও ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমানের ভূমিকা নিয়েও তদন্ত চলছে। অভিযোগ রয়েছে তিনি আত্মীয়স্বজনদের নামে একাধিক প্রতিষ্ঠান খুলে বিদেশে অর্থ পাচারের সুযোগ সৃষ্টি করেছেন।
খালেদা জিয়ার কণ্ঠ নকল করে চাঁদাবাজি ॥ সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কণ্ঠ নকল করে এবং তার লিয়াজোঁ অফিসার পরিচয় দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আদায়ের অভিযোগে মোতালেম হোসেন ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ১৩টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করেছে সিআইডি। আদালতের আদেশ অনুযায়ী এসব হিসাবে মোট ৫ কোটি ৩ লাখ ৩ হাজার ৭৮২ টাকা অস্থায়ীভাবে জব্দ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, সিআইডির অনুসন্ধানকালে পাওয়া বিভিন্ন রিপোর্ট ও ডকুমেন্ট এবং ব্যাংক হিসাব পর্যালোচনায় দেখা যায়, মোতাল্লেম হোসেন এবং তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের হিসাবে প্রায় ২৬ দশমিক ৮৪ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। অর্থ পাচার এবং অবৈধ উপায়ে অর্জিত সম্পদের সঙ্গে এর সম্পৃক্ততা খতিয়ে দেখতে তার স্থাবর সম্পত্তি ও আর্থিক কার্যক্রম পর্যালোচনার কাজও চলমান রয়েছে।
এ ছাড়া প্রতারণার শিকার ব্যক্তিদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ এবং এ ঘটনায় জড়িত সংঘবদ্ধ চক্রের অন্য সন্দেহভাজনদের শনাক্ত করার কার্যক্রমও অব্যাহত রেখেছে সিআইডি।
প্যানেল হু