ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৮ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২

গ্লোবাল সাস্টেইনেবিলিটির পথে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে অনুষ্ঠিত হলো দুই দিনব্যাপী ইএসজি বুটক্যাম্প

প্রকাশিত: ১৪:০১, ২৮ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ১৪:০২, ২৮ জুলাই ২০২৫

গ্লোবাল সাস্টেইনেবিলিটির পথে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে অনুষ্ঠিত হলো দুই দিনব্যাপী ইএসজি বুটক্যাম্প

ছবি- দৈনিক জনকণ্ঠ

এনভায়রনমেন্ট, সোশাল ও গভারনেন্স (ইএসজি) কর্পোরেট রূপান্তরের লক্ষ্য নিয়ে, ‘ইএসজি ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ’ এর আয়োজনে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছে দুই দিনব্যাপি ইএসজি বুটক্যাম্প ২০২৫। সাস্টেইনেবিলিটি ও ইএসজি- এর প্রশিক্ষণ ও এক্সেকিউশানের বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান "ইএসজি ইন্সটিটিউট বাংলাদেশের" সম্প্রতি এই দুইদিন বুটক্যাম্পটি পরিচালনা করেন। যেখানে দেশের বিভিন্ন খাতের শতাধিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ অংশ নেয়, যাদের মধ্যে আছে; সি-স্যুট এক্সেকিউটিভস, সিনিয়র ডিরেক্টরস ও ডিপার্টমেন্টাল হেডস। 

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), ইউএন গ্লোবাল কম্প্যাক্ট নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ (ইউএন-জিসিএনবি), সুইস কন্ট্যাক্ট বাংলাদেশ-এর অংশীদারিত্বে এবং প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ, এসিআই লজিসটিক্স ও গ্রামীণ ডানোন-এর সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত এই বুটক্যাম্পে অংশগ্রহণকারীরা দেশের ইএসজি ও টেকসই উন্নয়নের বর্তমান ও ভবিষ্যত সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা ও মত-বিনিময় করেন।  

বুটক্যাম্পের উদ্বোধন করেন ইএসজি ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ-এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর শাদমান সাকিব আনিক। সেসময় তিনি কর্পোরেট খাতে টেকসই ও দায়িত্বশীল ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রো-ফর-প্রো’র ফাউন্ডার ও ইউনিলিভার বাংলাদেশ-এর সাবেক চেয়ারম্যান কামরান বকর। গ্লোবাল ইএসজি লিডারশিপে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হলে সবার লক্ষ্য ও উদ্যোগ আরও স্পষ্ট ও বাস্তবসম্মত হতে হবে বলে তিনি মতামত দেন।

বাংলাদেশ কীভাবে ইএসজি’র পরবর্তী গন্তব্য হতে পারে সে বিষয়ে ইএসজি ইনস্টিটিউট সিঙ্গাপুর-এর চেয়ারপার্সন জোয়ান ফ্লিন বলেন, “বাংলাদেশ এখন ইএসজি’র ক্ষেত্রে পরিচিতি অর্জন করছে। তরুণ জনগোষ্ঠী, শক্তিশালী প্রাইভেট সেক্টর ও নীতিগত অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রেখে দেশটি এশিয়ায় টেকসই উন্নয়নে নেতৃত্ব দিতে পারবে বলে আমি আশাবাদী।”  

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ ব্যাংক-এর সাস্টেইনেবল ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্ট-এর ডিরেক্টর চৌধুরী লিয়াকত আলী বলেন, “ইএসজি-কে কেন্দ্র করে এমন আয়োজন বাংলাদেশে এক নতুন ধারা তৈরি করেছে। আর্থিক ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো একসঙ্গে কাজ করলে আমরা আরও দায়িত্বশীল ও টেকসই ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে যেতে পারবো বলে আমার বিশ্বাস।” 

বুটক্যাম্পে এফএমসিজি, আরএমজি, ম্যানুফ্যাকচার, ব্যাংক ও আর্থিক খাত, জ্বালানি, অবকাঠামো ও ফার্মাসিউটিক্যালস খাত নিয়ে আলাদা আলাদা সেশন অনুষ্ঠিত হয়। দেশি-বিদেশি ইন্ডাস্ট্রি এক্সপার্টরা এসব আলোচনায় অংশ নিয়ে অংশগ্রহণকারীদের ইএসজি বাস্তবায়নের বিভিন্ন কৌশল শেখানো ও দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়।  

শনিবার (২৬ জুলাই) এক গালা ইভেন্টের মধ্য দিয়ে ইএসজি বুটক্যাম্প ২০২৫ সমাপ্ত হয়, যেখানে সমাপনী বক্তব্য রেখেছেন ইএসজি ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ-এর চেয়ারম্যান সাদিয়া সামিরা। 

গালার অনুষ্ঠানে, ইএসজি ইনস্টিটিউট এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি স্কুল অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিক্স (NSU SBE) এর যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশের প্রথম "ইএসজি কেসবুক" এর প্রথম সংস্করণ উন্মোচন করা হয়। এই কেসবুকে বুটক্যাম্পে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ তাদের সেরা টেকসই ব্যবসায়িক চর্চা এবং কেস স্টাডি শেয়ার করেছেন, যা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পরিসরে বাংলাদেশের সেরা টেকসই অনুশীলন হিসেবে প্রকাশ ও প্রচার করা হবে।

গালায় আয়োজকরা " ইএসজি এক্সেলেন্স অ্যাওয়ার্ডস"-এর ঘোষণা দেওয়া হয়, যা বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন এবং দায়িত্বশীল ব্যবসা অনুশীলনে অসাধারণ অগ্রগতি সাধনকারী প্রতিষ্ঠানদের সম্মাননা প্রদান করবে। অনুষ্ঠানে আরও ছিল একটি আকর্ষণীয় ফায়ারসাইড চ্যাট এবং প্যানেল সেশন, যেখানে অংশগ্রহণ করবেন ডেনমার্ক দূতাবাস, শান্তা হোল্ডিংস, গ্রামীণ ডানোন, এবং দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞগণ। 

এই বুটক্যাম্প বাংলাদেশের কর্পোরেট সেক্টরের ইএসজি’র জন্য একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে গণ্য হচ্ছে। সবুজ, দায়িত্বশীল ও বৈশ্বিক টেকসই লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাংলাদেশ যে এগিয়ে চলছে, এই আয়োজন সেই যাত্রার একটি উজ্জ্বল প্রমাণ।
 

নোভা

আরো পড়ুন  

×