
অবৈধ দখলদারদের হুঁশিয়ারি দিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি)
অবৈধ দখলদারদের হুঁশিয়ারি দিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেছেন, সরকারি খাল-বিল দখল করে যারা ঘুমাচ্ছেন, তাদের ঘুমানোর সময় শেষ। বুধবার মোহাম্মদপুর হাইক্কার খালে (কাটাসুর) অবৈধ ভবন উচ্ছেদে অভিযানে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
অভিযান পরিচালনা করেন ডিএনসিসির অঞ্চল-৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, ডিএনসিসির সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা খানম এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহীদুল ইসলাম। অভিযানে হাইক্কার খালে অবৈধভাবে গড়ে তোলা একটি দোতলা ভবন সম্পূর্ণ এবং তিনতলা ভবনের আংশিক গুঁড়িয়ে দিয়েছে ডিএনসিসি। এছাড়াও পাঁচটি টিনের ঘর ভেঙে দেওয়া হয়েছে। সকালে অভিযান শুরু হয়ে বিকেল পর্যন্ত চলে।
অভিযানে গিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়ে ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান এবং একসময় বঙ্গবন্ধুর নামে ক্লাব করেই কিন্তু ঢাকা শহরের খাল, জলাধার ও পাবলিক প্লেসগুলো দখল করা হয়েছিল। আমি ঢাকাবাসীকে বলে দিতে চাই, যারা এখনো সরকারি খাল-বিল দখল করে নাকে তেল দিয়ে নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছেন, তাদের ঘুমানোর সময় শেষ। যারা সরকারি জমি, খাসজমি দখল করে স্থাপনা বানিয়ে ভোগদখল করছেন, তাদের বলে দিচ্ছি, ঘুম থেকে জেগে দখল করা জায়গাটা ছেড়ে দিতে হবে।
তিনি বলেন, অবৈধ দখলদারদের কোনো নোটিস দেব না, সরাসরি উচ্ছেদ করা হবে। অবৈধ দখলের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান আমাদের চলমান প্রক্রিয়া। আমরা উচ্ছেদ অভিযান করে ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় মাঠ দখলমুক্ত করছি, অবৈধ দোকান ও হকার উচ্ছেদ করছি এবং ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা চলাচল বন্ধে অভিযান শুরু করেছি। বাড়ি তিনতলা হোক, ১০ তলা হোক, আমরা সব ভেঙে দেব, একটা একটা করে। আমাদের লোকবল কম, ধারাবাহিকভাবে উচ্ছেদ করা হবে। আজকে নিরাপত্তা বাহিনী, আর্মি আছে, অন্যান্য ভারি যন্ত্রপাতি রেখেছি। আমরা কোনো ছাড় দেব না।
এই খালের (হাইক্কার) অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে আমরা খাল খনন করে লাউতলা খালের সঙ্গে সংযোগ করে দেব। ডিএনসিসির কবরস্থানের দেওয়ালও ভেঙে দিয়ে পানির প্রবাহ নিশ্চিত করা হবে। ফলে বৃষ্টির পানি, বন্যার পানি খাল দিয়ে প্রবাহিত হয়ে তুরাগে যাবে। প্রশাসক বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরেই মোহাম্মদপুরের এই খাল পরিদর্শনে এসে দেখি, খালে বালু ফেলে ভরাট করছে। খালের ভেতরে অনেকগুলো স্থাপনা হয়ে গেছে।
আমি তাৎক্ষণিক অবৈধ ভবনগুলো ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দিলে ভবনের মালিকরা আমাকে জানিয়েছে, এগুলো খালের সীমানায় পড়ে নাই, তারা চ্যালেঞ্জ করেছে। পরে আমাদের সার্ভেয়ার এবং তাদের সার্ভেয়ার যৌথভাবে সার্ভে করেছে। যৌথ সার্ভেতে দেখা গেছে, একটি দোতলা বাড়ি, একটি তিনতলা বাড়ি এবং মসজিদের একটি অংশসহ বেশ কয়েকটি টিনের ঘর খালের সীমানায় পড়েছে।
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, তেজগাঁও ট্রাক স্ট্যান্ডে রাস্তায় ট্রাকের পার্কিং বন্ধে স্থায়ী সমাধানের জন্য আমরা কাজ করছি। আশা করছি, আগামী কোরবানির ঈদের আগে এটি সমাধান করতে পারব। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মিরপুর-১০ এবং ফার্মগেট ইন্দিরা রোড সম্পূর্ণভাবে ফুটপাতের হকার ও টেসলামুক্ত (ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা) হবে। আমি অভিযান শুরু করেছি। রাতে ও দিনে অভিযান চালানো হবে।