
ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চাইলে ভারতকে আগে তিস্তার পানি দিতে হবে, এমন বার্তা দিয়ে এবার শক্ত হয়ে রুখে দাঁড়িয়েছে তিস্তা নদীর ন্যায্য হিস্যা থেকে বহু বছর ধরে বঞ্চিত বাংলাদেশের মানুষ।
শেখ হাসিনা সরকারের আমলে ন্যায্য হিস্যার দাবিতে প্রতিবাদ হলেও, কানে তোলেনি ভারতের কেন্দ্র কিংবা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। এবার সেই অপমানের জবাব কড়ায়-গন্ডায় দেবে বাংলাদেশ।
তিস্তা নদীতে নেমে ভারতের পানি আগ্রাসনের প্রতিবাদ জানাচ্ছে বাংলাদেশের মানুষ। চীনের রাষ্ট্রদূত স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নে তৈরি তারা। তিনি বলেছেন, তিস্তা পাড়ের মানুষের দুঃখ বোঝে চীন। সরকারের গ্রীন সিগন্যাল পেলেই তিস্তা নিয়ে কাজ শুরু হবে। তিস্তা নদীকে ঘিরে প্রকল্প শুরুর বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের সাড়া পেতে দুই বছর ধরে অপেক্ষায় ছিল চীন। এই কথা বলে মানুষের কষ্ট লাগবে দ্রুততার সঙ্গে সেই কাজে নেমে পড়ার উপর গুরুত্ব দেন ঢাকায় দেশটির রাষ্ট্রদূত ইয়াওয়েন।
তিস্তা নদী রক্ষার দাবিতে উত্তরাঞ্চলের পাঁচ জেলায় ৪৮ ঘন্টার কর্মসূচির সময়ে এক ব্রিফিং এ তিনি বলেছেন, তিস্তাপাড়ের মানুষের কষ্টের কথা তিনি জানেন। চীন চায় এই প্রকল্প দ্রুততার সঙ্গে বাস্তবায়ন হোক। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে কাজ অব্যাহত রাখবে চীন। এখন উত্তরের অপেক্ষায় বেইজিং।
তিস্তা প্রকল্পে নদীটির উপকূল ব্যবস্থাপনায় অবকাঠামো নির্মাণ ছাড়াও, বন্যা নিয়ন্ত্রণ এবং গ্রীস্মকালে পানি সংকট দূর করতে বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামো গড়ে তোলা হবে বলে সে সময় এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল বিবিসি।
প্রকল্পের আদ্যপান্ত তুলে ধরে চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, আমরা অনেক বছর ধরে আলোচনা করেছি। তবে আমাদের মূল্যায়নে এটা বিশাল প্রকল্প। এ কারণে আমরা বাংলাদেশকে প্রস্তাব দিয়েছি ধাপে ধাপে করার জন্য। প্রথম ধাপ হিসেবে বন্যা প্রতিরোধ ও মোকাবেলা প্রকল্পের পরামর্শ দিয়েছিল চীন।
আমরা ২০২৩ সালে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে ফিডব্যাক দিয়েছি। এরপর দু বছর পার হলেও বাংলাদেশের দিক থেকে প্রতি উত্তর না পাওয়ার তথ্য তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, সুতরাং আমরা বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই প্রকল্পের বিষয়ে উত্তর পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছি।
তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেছেন তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি। মঙ্গলবার বেলা দেড়টার দিকে লালমনিরহাটের তিস্তা রেল সেতুর কাছে নদীতে নেমে প্রতিবাদ করেন কয়েক হাজার মানুষ।
আন্দোলনকারীরা বলেন, ভারত বছরের পর বছর ধরে তিস্তা নদীর পানি একতরফা ভাবে প্রত্যাহার করেছে, যার মাসুল দিচ্ছে বাংলাদেশের পাঁচ জেলার অন্তত দুই কোটি মানুষ। শুষ্ক মৌসুমে এসব এলাকার মানুষ ফসল ফলাতে পারে না। আবার বন্যার সময় হঠাৎ করে পানি ছেড়ে দেওয়ায় ভাঙ্গনের শিকার হচ্ছে নদী পাড়ের মানুষ।
মো. মহিউদ্দিন