ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৪ মার্চ ২০২৩, ৯ চৈত্র ১৪২৯

monarchmart
monarchmart

বিএনপির পদযাত্রায় ড. মোশাররফ

গণশুনানি ছাড়াই বিদ্যুতের দাম বাড়ল

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:৪৯, ৩১ জানুয়ারি ২০২৩

গণশুনানি ছাড়াই বিদ্যুতের দাম বাড়ল

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ১০ দফা দাবিতে রাজধানীর গাবতলী থেকে মিরপুর ১০ পর্যন্ত

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ১০ দফা দাবিতে রাজধানীর গাবতলী থেকে মিরপুর ১০ পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার পথে দেড় ঘণ্টার নীরব পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি। বুধবার বিকেল আড়াইটা থেকে ৪টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচিতে দলটির বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত হন। এ কর্মসূচির কারণে মিরপুর এলাকার বিভিন্ন সড়কে তীব্র যানজটে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়। ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি আয়োজিত এই কর্মসূচি শুরুর আগে গাবতলী পেট্রোল পাম্প চত্বরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, দেশের সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা লুট করার জন্য আবারও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে।

সরকারের সমালোচনা করে ড. মোশাররফ বলেন, আওয়ামী লীগের বিদায়ের অগ্রযাত্রাই বিএনপির এ নীরব পদযাত্রা। আওয়ামী লীগের সময় শেষ। আগামী দিনের বাংলাদেশ হবে খালেদা জিয়ার। সেজন্য আমরা আপনাদের বিদায়ের অগ্রিম শোভাযাত্রা হিসেবে এই পদযাত্রা করছি। তিনি বলেন, সরকার বিরোধীদের কর্মসূচি দেখে আওয়ামী লীগ ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে। তাই বিএনপি রাজনৈতিক কর্মসূচি দিলেই আওয়ামী লীগও পাল্টা কর্মসূচি দেয়। দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ইস্পাত কঠিন গণঐক্য সৃষ্টি করে দ্রুত বর্তমান সরকারকে বিদায় দিতে হবে।
দেশবাসীকে উদ্দেশ করে ড. মোশাররফ বলেন, আপনারা জানেন, মাত্র ১৯ দিন আগে দেশে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। আবারও সরকার সরাসরি ৫ ভাগ দাম বাড়ায়।  নিয়ম আছে, বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করতে হলে এটা একটা কমিশনের মাধ্যমে করতে হয়, গণশুনানি লাগে। কিন্তু এই গণশুনানিকে উপেক্ষা করে তারা বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করল। আগেরবারও তাই করা হয়। 
ড. মোশাররফ বলেন, সরকার বলেছে যে, মাসে মাসে নাকি বিদ্যুতের দাম সমন্বয় করবে। অর্থাৎ আজকে তাদের হাতে টাকা নেই। দেশের সাধারণ মানুষ থেকে লুট করে টাকা নেওয়ার জন্য বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করছে। এছাড়া সরকার  গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করেছে, পানির দাম বৃদ্ধি করছে। আর দাম বাড়িয়েও সরকার জনগণকে বিদ্যুৎ দিতে পারে না, গ্যাস দিতে পারে না, পানি দিতে পারে না। তাই দেশের মানুষের অবস্থা আজকে অত্যন্ত দুর্বিষহ। 
ড. মোশাররফ বলেন, এ সরকারের পায়ের নিচে মাটি নেই। দেশ-বিদেশ থেকে এ সরকারকে চাপ দেওয়া হচ্ছে। আর সেজন্য বিএনপির কোনো কর্মসূচি দেখলে আওয়ামী লীগ ভয়ে ভীত হয়ে যায়। তিনি বলেন, দুুর্নীতিবাজ ও ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন ঘটানোর জন্য দেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে সবচেয়ে বেশি দায়িত্ব বিএনপির। আমাদের নেতা জিয়াউর রহমান দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র দিয়েছেন। আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন।

নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু হয় সেজন্য তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার করেছেন। আর এগুলো যারা ধ্বংস করে দিয়েছে তারা দেশে কোনো সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারবে না। সেজন্য এই সরকারকে বিদায় করতে হবে। আর বেশি সময় নেই, অতি দ্রুত আমরা এই সরকারকে বিদায় দিতে সক্ষম হবো।
দেশে দুর্নীতি বেড়েছে অভিযোগ করে ড. মোশাররফ বলেন, এত লেখালেখি হচ্ছে, বিদেশীরা চাপ দিচ্ছে তারপরও গত কয়েক মাসে দুর্নীতি বৃদ্ধি পেয়েছে।

সবাই জানেন, সারা পৃথিবীর বুকে দুর্নীতির একটা পরিলেখক আছে, সেই পরিলেখকে আমরা গতবছরও সর্বনি¤œ ১৩ নম্বরে ছিলাম। সেটা আরও এক ধাপ কমে আজকে দেখা গেল ১২ তে নেমে এসেছে। তাই দেশে দুর্নীতি দমন তো দূরের কথা আন্তর্জাতিক হিসাবেও দেখা যাচ্ছে যে, দুর্নীতি বৃদ্ধি পেয়েছে। যারা দুর্নীতি করে তারা আওয়ামী লীগের সিন্ডিকেট। তাই তাদের দুর্নীতি দমন করা সম্ভব নয়। তাই দেশের মানুষ এই সরকারের পদত্যাগ চায়, দ্রুত বিদায় করতে চায়।
ড. মোশাররফ বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বাড়ার কারণ বর্তমান সরকার। তারা আজকে পণ্য আমদানি করতে পারছে না। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যবাহী স্টিমার এসে বসে আছে, টাকা দিতে পারে না বলে মাল খালাস করতে পারে না। আবার বড় বড় কথা বলে। তিনি বলেন, কারা নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রবমূল্য বৃদ্ধি করছে? আওয়ামী লীগের সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা যারা বিদেশে টাকা পাচার করে আজকে দেশে দুর্ভিক্ষের অবস্থা সৃষ্টি করেছে, অর্থনীতি ধ্বংস করে দিয়েছে তারাই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে। 

খন্দকার মোশাররফ বলেন, সরকারের এত নির্যাতনের পরও বিএনপি ঘরে বসে যায়নি, দেশের জনগণও বসে যায়নি। বর্তমান সরকারকে বিদায় করার জন্য বিএনপি নেতাকর্মীরা রাস্তায় নেমেছে। আমরা রাস্তায় নেমে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। কিন্তু আওয়ামী লীগ ভয়ে ভীতি হয়ে আমাদের পথযাত্রাকে নানা নামে সমালোচনা করছে। তবে আওয়ামী লীগকে বলছি, আপনারা বিদায় নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিন। আপনারা যাই বলেন, আমাদের পদযাত্রা হচ্ছে আপনাদের বিদায়ের শোভাযাত্রা।

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে নীরব পদযাত্রাপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক প্রমুখ। পরে বেলা আড়াইটায় গাবতলী বাস স্ট্যান্ড থেকে নীরব পদযাত্রা শুরু হয়ে মাজার রোড দিয়ে মিরপুর এক নাম্বার হয়ে ১০ নম্বর গোল চত্বর গিয়ে শেষ হয়। 

monarchmart
monarchmart

শীর্ষ সংবাদ: