ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

অনুষ্ঠিত হলো চট্টগ্রাম সমিতি-ঢাকা’র ঐতিহ্যবাহী মেজবান ও মিলনমেলা

প্রকাশিত: ১৯:৩৫, ২৮ নভেম্বর ২০২২

অনুষ্ঠিত হলো চট্টগ্রাম সমিতি-ঢাকা’র ঐতিহ্যবাহী মেজবান ও মিলনমেলা

মিলনমেলার সবচেয়ে বড় আকর্ষণ বলীখেলার শুভ উদ্বোধন করেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ

উৎসবের আমেজ। হাজার হাজার লোকের পদচারনা। পরস্পরের সঙ্গে নিজেদের আঞ্চলিক ভাষায় মন খুলে কথা বলা। ঢাকার বুকে যেন একখন্ড চট্টগ্রাম। গত শনিবার দিনব্যাপী রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সরকারি শারীরিক শিক্ষা কলেজ মাঠে চট্টগ্রাম সমিতি-ঢাকার উদ্যোগে ঐতিহ্যবাহী ‘মেজবান ও মিলনমেলা-২০২২’ আয়োজন ছিল ঠিক এমনি। বিভিন্ন পেশা,শ্রেণী ও নানান বয়সী প্রায় ত্রিশ হাজার লোকের সমাগমে মুখরিত হয়ে উঠে কলেজের আঙ্গিনা। শুধু চট্টগ্রামের বাসিন্দা নয়, বিভিন্ন জেলার লোকও অতিথি হিসেবে মেজবানে অংশগ্রহণ করেন। অষ্ঠাদশ শতক থেকে পুরোপুরি চট্টগ্রামে চালু হয় এ মেজবানির আয়োজন। শতবছরের অধিক পুরোনো চট্টগ্রাম সমিতি ঢাকা চট্টগ্রামবাসীর এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে প্রতি দু’বছর পর পর মেজবানের আয়োজন করে থাকে। 

সারাদিনব্যাপী নানান অনুষ্ঠান আয়োজনের মধ্যে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক জব্বারের বলিখেলার আদলে বলিখেলার অয়োজন। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলের আটজন বলী এ খেলায় অংশ নেন। ২০২২ সালে জব্বারের বলী খেলার চ্যাম্পিয়ন টেকনাফের জীবন বলী এখানেও অংশ নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। বলীখেলার শুভ উদ্বোধন করেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, এমপি। 

উদ্বোধনী ভাষণে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, মেজবান ও বলীখেলা চট্টগ্রামের ঐতিহ্য হিসেবে সুদীর্ঘকাল কাল থেকে পরিচিতি, আমাদের কৃষ্টি - সংস্কৃতি- ঐতিহ্যগুলো নতুন প্রজন্মরের কাছে তুলে ধরতে হবে। চট্টগ্রামবাসীর এ ঐতিহ্যকে ধারণ করে প্রতিবারের মতো আজকের এই মেজবান ও মিলন মেলা আয়োজন করেছে চট্টগ্রাম সমিতি ঢাকা, তবে এবারের মেজবানে বলী খেলার আয়োজন করে ঢাকায় অবস্থানরত চট্টলাবাসীকে আলাদা আনন্দ ও পরিচিতি দিয়েছে। তিনি বলেন, চট্টগ্রামের রয়েছে সমৃদ্ধ ইতিহাস ও ঐতিহ্য এবং ভাষাগত স্বাতন্ত্র্য, চট্টগ্রামবাসী এ সমৃদ্ধ ঐতিহ্যকে সবসময় লালন ও ধারন করে থাকে। এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনে সমিতির জীবন সদস্যবৃন্দসহ আয়োজক কমিটির সকলকে তিনি ধন্যবাদ জানান।

সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন জামাল এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন হিরোর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, কম্পট্রোলার এন্ড অডিটর জেনারেল মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সাবেক মুখ্যসচিব ড. মোঃ আবদুল করিম, পুলিশ মহা পরিদর্শক (আইজিপি)চৌধুরী আবদুল্লাহ আল- মামুন, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম। এছাড়া সরকারের সচিব, সরকারী উর্দ্ধতন কর্মকর্তা, শিক্ষাবিদ, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, ব্যবসায়ী, প্রকৌশলী,বিচারপতি,আইনজীবী, চিকিৎসক, বেসরকারী সংস্থার কর্মকর্তাসহ নানান পেশাজীবীরা অংশগ্রহণ করেন। 
অনুষ্ঠানের শুরুতে ঐতিহ্যবাহী প্রকাশনা ‘চট্টলশিখা’র মোড়ক উন্মোচন করা হয় এবং প্রতিবারের মতো এবারও সমাজের নানাক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য পাঁচজন বিশিষ্টজনকে ‘চট্টগ্রাম সমিতি পদক’ প্রদান করা হয়েছে। 

পদকপ্রাপ্তরা হলেন:- শিক্ষা-সংস্কৃতি ও সমাজকল্যাণে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী (মরণোত্তর); শিল্প, বাণিজ্য ও সমাজকল্যাণে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু (মরণোত্তর); চট্টগ্রাম সমিতিতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ আবু আলম চৌধুরী; ‘সাহিত্যে’ অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ আহমদ মমতাজ (মরণোত্তর) এবং কৃষি সাংবাদিকতায় অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ শাইখ সিরাজ-কে সম্মাননা পদক প্রদান করা হয়। পদকপ্রাপ্তদের মধ্যে আবু আলম চৌধুরী অনুভূতি ব্যক্ত করে বক্তব্য রাখেন। এরপর ঐতিহ্যবাহী মেজবানি খাবার দ্বারা আগত সকল অতিথিদের আপ্যায়ন করা হয় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেশীয় এবং  চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গান পরিবেশন করা  হয়।

অনুষ্ঠানে সমিতির উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল করিম, সদস্য সচিব এড. মাসুদ আলম চৌধুরী, ট্রাস্টি বোর্ডের সেক্রেটারি সাইফুদ্দিন মোহাম্মদ খালেদ ও হাসপাতাল কমিটিসহ তিন কমিটির সদস্যবৃন্দ এবং নির্বাহী পরিষদের সকল সদস্য ও মেজবান কমিটির বিভিন্ন উপকমিটির আহ্বায়ক, সদস্য সচিব ও সদস্যবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল মাবুদ, নির্বাহী পরিষদের সহসভাপতি ইঞ্জিনিয়ার তাজুল ইসলাম চৌধুরী, এএম মনসুর উল আলম, মুঃ মোহসিন চৌধুরী, মোঃ মহিউল ইসলাম মহিম, রাজীবুল হক চৌধুরী, আলহাজ্ব মোঃ খোরশেদুল আলম, অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ নাছের (নাছির), যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহ্মুদ সালাহ্উদ্দীন চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক এড. আনিচ উল মাওয়া (আরজু), প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মোস্তফা ইকবাল চৌধুরী (মুকুল), শিক্ষা ও পাঠাগার সম্পাদক রাহুল বড়ুয়া, সাহিত্য ও সেমিনার সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার জাহিদ আবছার চৌধুরী, ক্রীড়া সম্পাদক সৈয়দ আলম, সাংস্কৃতিক সম্পাদক মোহাম্মদ তৌহিদুর রহমান, দপ্তর সম্পাদক আজম উদ্দীন তালুকদার, স্বাস্থ্য ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক মোহাম্মদ মনসুর আলী চৌধুরী, আন্তর্জাতিক সম্পাদক মহিউদ্দিন আহমদ চৌধুরী, মানবসম্পদ উন্নয়ন সম্পাদক আলম ইশরাক চৌধুরী, মহিলা ও শিশু বিষয়ক সম্পাদক ডা. রেহেনা আক্তার, আইন বিষয়ক সম্পাদক এড. মোহাম্মদ আবুল হাশেম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও নির্বাহী সদস্য মোঃ গিয়াস উদ্দীন খান, নাছির উদ্দিন, নির্বাহী সদস্য এম. সাইফুদ্দিন আহমদ (বাবুল), শফিকুর রহমান শফিক, মোঃ তানভীর খান, এড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, মোহাম্মদ আব্দুল হালিম, আবরাজ নুরুল আলম, মোঃ মামুনুর রশীদ রাসেল, মুহাম্মদ পিয়ারু, মোঃ গিয়াস উদ্দীন, পারভেজ মো. চৌধুরী, মোহাঃ আবু নাসের তালুকদার, মোহাং বদিউল আলম, মোমেন আকসা, মোকছেদ আলম মনজু, মোহাম্মদ লোকমান ফারুকী প্রমুখ।
 

×