ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে 

প্রকাশিত: ২১:৪৭, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২

দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর 

আওয়ামী লীগ সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তাদের এখন রাষ্ট্র যন্ত্র ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে হচ্ছে। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর ছাত্র লীগের হামলার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিকেলে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে  ছাত্রদল আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সাম্প্রতিক বক্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি হাটুভাঙ্গা দল নয়, তবে আন্দোলনে জনসম্পৃক্তা দেখে আওয়ামী লীগের কোমড় ভেঙ্গে গেছে। 

আওয়ামী লীগ শুধু লাঠি নয়, রাম দা-তলোয়ার এবং পুলিশের বন্দুকের ওপর ভর করে এখন হাটছেন। আমরা লাঠি নেইনি। ২২ আগস্ট থেকে জনগনের দাবি নিয়ে আন্দোলন শুরু করেছি সেই আন্দোলনে যখন মানুষ জেগে উঠছে তখন তা দমন করবার জন্য সন্ত্রাসের আশ্রয় নিয়েছে। তারা ৫ জনকে গুলি করে হত্যা করেছে, মিথ্যা মামলা দিয়েছে ২৫ হাজারের বেশি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। আমাদের ৩ হাজারের মতো নেতাকর্মীকে আহত করেছে। 

সরকারের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, এখনো সময় আছে, উল্টো-পাল্টা কথা না বলে আপনারা পদত্যাগ করুন এবং ‘সেইভ এক্সজিট’ নেন এবং একটা নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন, সংসদ বিলুপ্ত করুন। 

তিনি বলেন, ১৫ বছর ধরে গুম. খুন অত্যাচার চলছে আমাদের ওপর।  তাই জনগনের যে উত্তাল তরঙ্গ শুরু হয়েছে তা থামবে না। আমি ছাত্র সমাজকে বলবো, দেশে যত পরিবর্তন হয়েছে, ছাত্রদের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, এবারো যে পরিবর্তন হবে তা দুর্বার আন্দোলনে ছাত্রদলের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে হবে।

ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ ইতোমধ্যে পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছে। তারা শান্তিপূর্ণ সমাবেশে, শান্তিপূর্ণ মিছিলে লাঠি, বন্দুক এবং টিয়ার গ্যাস নিয়ে আক্রমণ শুরু করেছে। আমাদের দায়িত্ব একটাই দেশের সকল ছাত্র সমাজকে, তরুন-যুব সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে, সকল মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে একটা দুর্বার গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে হবে। এটাই হবে প্রকৃত জবাব।
 
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আমরা লাঠি নিয়ে কোনো মিটিংয়ে যাই না, যেতেও চাই না। কিন্তু সরকার ঘোষণা দেবে লাঠি নিয়ে মিছিল করা যাবে না। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ আমাদের লাঠি দিয়ে পেটাবে এটা সঠিক কথা হলো না। আওয়ামী লীগ ওয়ান-ইলেভেনের সময় দেখিয়েছে কিভাবে লাঠিপেটা করে মানুষ হত্যা করতে হয়। এই নারকীয় কান্ড কখনোই দেশের  মানুষ ভুলবেন না।

ছাত্র দলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, দলের নেতা নাজিম উদ্দিন আলম, কামরুজ্জামান রতন, এবিএম মোশাররফ হোসেন, আজিজুল বারী হেলাল, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, এসএম জিলানী, মোনায়েম মুন্না, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।

আন্দোলন কর্মসূচিতে বাধা এলে প্রতিরোধ করা হবে- গয়েশ্বর: বিএনপির আন্দোলন কর্মসূচিতে বাধা এলে প্রতিরোধ করা হবে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। 

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জিয়া মঞ্চের ২৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান। 

গয়েশ্বর বলেন, আন্দোলনে পথে পথে বাধা আসবেই। নিহত নেতাকর্মীদের রক্ত বৃথা যাবে না। তাই বাধা অতিক্রম করেই মানুষ অধিকার আদায়ে রাজপথে নামতে হবে। বিএনপির আন্দোলনে সারাদেশে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। তাই জনগণই আন্দোলন সফল করবে। সরকার পতনের এ আন্দোলন গুলি-টিয়ারগ্যাসে বন্ধ করা যাবে না। 

তিনি বলেন, যতক্ষন পর্যন্ত আমাদের লক্ষ্য অর্জন না হবে, যতক্ষন পর্যন্ত মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত না হবে, যতক্ষণ পর্যন্ত একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি না হবে বিএনপির আন্দোলন চলবে ততক্ষণ পর্যন্ত।

 এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, জিয়া মঞ্চের সভাপতি ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, সাধারণ সম্পাদক মো. ফয়েজুল্লাহ ইকবাল, সহ-সভাপতি আবু তালেব প্রমুখ।  
 

এমএস

সম্পর্কিত বিষয়:

×