স্ত্রীর সঙ্গে আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর
নীরবেই চলে গেলেন বাংলাদেশের সর্বকনিষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধাদের অন্যতম যোদ্ধা আবু নঈম মো. আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর। বুধবার (১৩ জুলাই) রাতে লন্ডনের ডেভোনের হসপিটালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই কৃতিমান প্রকৌশলী। দীর্ঘদিন তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর।
১৯৭১ সানে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর ছিলেন স্কুলের ছাত্র। মাত্র ১৪ বছর বয়সে তিনি মুক্তিযুদ্ধে যোগা দেন। ১৯৭১ সালে যারা মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন তিনি ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধাদের একজন। রাজধানীর বাসাবোর শহীদ আলাউদ্দিনের কমান্ডারের অধীনে তিনি নয় মাস মুক্তিযুদ্ধ করেছেন।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীরসহ অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাকে বাসাবোতে সংবর্ধনা দেয়া হয়েছিল। সেই সংবর্ধনায় যোগ দিয়েছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরেও তার ছবি সংরক্ষিত আছে।
ছাত্র হিসাবে তিনি ১৯৭৪ সালে পড়াশোনা করতে যুক্তরাজ্যে চলে যান। সেখানে তিনি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াশোনা করেন। কৃতিত্বের সঙ্গে পাশ করে প্রকৌশলী হন। কর্মময় জীবনে তিনি হারিরি কাউন্সিলের প্রধান প্রকৌশলী ছিলেন। তিনি লন্ডনের ফ্লাইওভার ও হাইওয়ের অনেক আইকোনিক ডিজাইন করেছেন।
যুক্তরাজ্যে অবস্থান করলেও স্বাধীন দেশের প্রতি তার মতত্ববোধ ছিল অকৃত্রিম। তিনি অসম্ভব দেশ প্রেমিক ছিল। সুযোগ পেলে দেশে বেড়াতে আসতেন। আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীরের বাবা ছিলেন এজিবির সরকারী কর্মকর্তা। তার গ্রামের বাড়ি সিলেট।
ইংল্যান্ডের ডেভোনে মরিনটনে তার বাড়ির কাছে শুক্রবার (১৫ জুলাই) বাদ জুমা তাকে সম্মানের সঙ্গে সমাধিস্থ করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনারসহ বহু উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, প্রবাসী বাংলাদেশীরা তার জানাজায় অংশগ্রহণ করেছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পতাকা দিয়ে তাকে সমাহিত করা হয়। মৃত্যুকালেও তিনি রেখে গেছেন দুই মেয়ে, এক ছেলেসহ বহু গুণগ্রাহী।
তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের মতিঝিল উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যাচ একাত্তর। আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর এই স্কুলেই পড়াশোনা করেছেন।
এসআর