আনোয়ার রোজেন ॥ সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় প্রতিবন্ধীদের উন্নয়ন প্রক্রিয়ার মূল ধারায় নিয়ে আসার জন্য গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এর অংশ হিসেবে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য দেশজুড়ে নতুন আরও ১১টি আবাসিক ভবন (হোস্টেল) নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য গড়ে তোলা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশেই এসব হোস্টেল তৈরি করা হবে। এছাড়াও এসব শিশুর আবাসন সুবিধা বাড়াতে দেশজুড়ে বিদ্যমান ২০টি হোস্টেলের সম্প্রসারণও করা হবে। এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প প্রস্তাব জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী সভায় অনুমোদনের জন্য উপস্থাপনের কথা রয়েছে। প্রায় ৬০ কোটি ৬৫ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ের এ প্রকল্পটির উদ্যোক্তা সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়। একনেক সভায় অনুমোদন পেলে ২০১৯ সালের জুনের মধ্যে সমাজসেবা অধিদফতর প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষ করবে। পরিকল্পনা কমিশন ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে
সূত্র জানায়, উন্নয়ন অন্তর্ভুক্তিমূলক না হলে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন বাধাগ্রস্ত হবে। এজন্য প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় যুক্ত করার পরিকল্পনা সরকার নিয়েছে। তাছাড়া প্রতিবন্ধী কল্যাণ আইন অনুযায়ী দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিশুর সমন্বিত শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। আবাসিক সুবিধা নিশ্চিত করতে পারলে বিনোদন এবং পাঠ্যক্রমের বাইরে বিভিন্ন কর্মকা-ে এসব শিশুর অংশগ্রহণের অধিকার নিশ্চিতের সুযোগ সৃষ্টি হবে। একই সঙ্গে এসব শিশুর মানসিক বিকাশ ঘটিয়ে সমাজের মূল স্রোতধারায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রকল্প প্রস্তাব অনুযায়ী দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ছেলে শিশুদের জন্য পাঁচটি ও মেয়ে শিশুদের জন্য ছয়টি নতুন হোস্টেল ভবন নির্মাণ করা হবে। মেয়ে শিশুদের জন্য হোস্টেল নির্মাণের উদ্যোগ এটিই প্রথম। মেয়েদের জন্য যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হোস্টেল নির্মাণ করা হবে সেগুলো হলো- খুলনার গোয়ালখালী পিএচটি সেন্টার, সিলেট মূকবধির হাই স্কুল, দিনাজপুরের রাজবাটি সরকারী শিশু পবিরার, কিশোরগঞ্জের সরকারী শিশু পরিবার, কুমিল্লার সরকারী শিশু পরিবার সনগ্রেইস এবং ফরিদপুরের রাজবাড়ি মোড়ে অবস্থিত স্পিস এ্যান্ড হেয়ারিং ইমপেয়ার্ড স্কুল। ছেলে শিশুদের জন্য নির্মিতব্য নতুন হোস্টেল সুবিধাসম্পন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- ময়মনসিংহের এ্যাডওয়ার্ড ইনস্টিটিউট, জামালপুরের সিংহজানি বহুমুখী হাই স্কুল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া হাই স্কুল, সিরাজগঞ্জের রেলওয়ে কলোনি হাই স্কুল এবং মাগুরার পারনানডুলি হাই স্কুল। এছাড়াও দেশের ২০ জেলায় প্রতিবন্ধীদের পাঠদান সুবিধাসম্পন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২০টি হোস্টেলের সম্প্রসারণও করা হবে।