ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২

এই ৫ উপায়ে মিষ্টি খেলেও বাড়বে না রক্তে চিনির মাত্রা, জানুন এখনই

প্রকাশিত: ১৬:০০, ১৫ জুলাই ২০২৫

এই ৫ উপায়ে মিষ্টি খেলেও বাড়বে না রক্তে চিনির মাত্রা, জানুন এখনই

ছবি:সংগৃহীত

আমরা অনেকেই সচেতন বা অসচেতনভাবে প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে চিনি খেয়ে ফেলি। যেখানে দিনে সর্বোচ্চ ৯ চা চামচ চিনি খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়, সেখানে একজন আমেরিকান প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি গড়ে প্রতিদিন প্রায় ১৭ চা চামচ চিনি গ্রহণ করছেন।

এই অতিরিক্ত চিনির অনেকটাই আমরা অজান্তেই খেয়ে ফেলি, কারণ বাজারে ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ প্যাকেটজাত খাবার ও পানীয়তে চিনি কোনো না কোনোভাবে লুকিয়ে থাকে। শুধু মিষ্টি জাতীয় খাবার নয়—সস, স্যুপ, এমনকি ডিপের মধ্যেও থাকে উচ্চ ফ্রুক্টোজ কর্ন সিরাপ বা অ্যাসপারটেমের মতো উপাদান।

তবে চিনির আসক্তি থেকে মুক্তি পাওয়া অসম্ভব নয়। প্রথমেই, খাবারের লেবেল ভালোভাবে পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন—যে কোনো উপাদানের শেষে “-ose” থাকলে বুঝবেন সেটা চিনিরই এক ধরনের রূপ (যেমন: গ্লুকোজ, সুক্রোজ)। এরপর, যতটা সম্ভব প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন। আর মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছা হলে, রক্তে চিনির মাত্রা না বাড়িয়ে বিকল্প মিষ্টি উপায় বেছে নিন।

ভাগ্য ভালো, এমন কিছু প্রাকৃতিক বিকল্প রয়েছে যেগুলো মিষ্টি হলেও রক্তে গ্লুকোজ বাড়ায় না। নিচে এমন ৫টি জনপ্রিয় প্রাকৃতিক মিষ্টিকারকের কথা দেওয়া হলো, যাদের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI)—অর্থাৎ রক্তে গ্লুকোজ বৃদ্ধির মাত্রা—খুবই কম।

রক্তে গ্লুকোজ না বাড়িয়ে মিষ্টি করার ৫টি প্রাকৃতিক উপায়
১. আগাভ সিরাপ
আগাভ গাছের রস থেকে তৈরি এই তরল মিষ্টিকারকটির গ্লাইসেমিক ইনডেক্স মাত্র ১৫, যা সাদা চিনির তুলনায় তিনগুণ কম। এর স্বাদ হালকা মধুর এবং এটি সহজেই বিভিন্ন পানীয়, ড্রেসিং বা ডেজার্টে ব্যবহার করা যায়।

২. মধু 
যদিও এটি প্রাণিজ উৎস হওয়ায় অনেক ভেজান ব্যবহার করেন না, তবুও কাঁচা মধু চিনির একটি স্বাস্থ্যকর বিকল্প হতে পারে। GI মাঝারি হলেও (৫৫), এতে রয়েছে প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক গুণ, যা গলা ব্যথা উপশম থেকে শুরু করে ক্ষত সারাতে সহায়তা করে। মানুকা মধু এদিক থেকে বিশেষভাবে কার্যকর।

৩. নারকেল চিনি 
নারকেল ফুলের রস থেকে প্রস্তুত এই প্রাকৃতিক মিষ্টিকারকটির GI তুলনামূলকভাবে কম (৩৫)। এতে রয়েছে ইনুলিন নামে একধরনের প্রিবায়োটিক ফাইবার, যা হজমে সহায়তা করে। এর ক্যারামেল ঘেঁষা স্বাদ ডেজার্ট তৈরিতে বাড়তি আকর্ষণ এনে দেয়।

৪. মঙ্ক ফল
মঙ্ক ফল বা লোহান গো নামের এক ধরনের ফল থেকে তৈরি এই মিষ্টিকারকটি চিনির চেয়ে ২৫০ গুণ বেশি মিষ্টি হলেও এতে কোনো ক্যালোরি নেই, নেই কোনো কার্বোহাইড্রেটও। এতে থাকে মোগ্রোসাইড নামের যৌগ, যা রক্তে গ্লুকোজ বাড়ায় না। এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ০—অর্থাৎ এটি রক্তে চিনির কোনো প্রভাব ফেলে না।

৫. খেজুর সিরাপ 
খেজুরকে বলা হয় প্রাকৃতিক ক্যান্ডি, কারণ এর স্বাদ প্রাকৃতিকভাবেই মিষ্টি এবং ক্যারামেল ঘেঁষা। খেজুরের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স প্রায় ৪৭, যা সাদা চিনির অর্ধেক। খেজুর সিরাপেও থাকে প্রচুর মিনারেল—যেমন পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও আয়রন—এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইবারও রয়েছে।


জীবনে মিষ্টির জায়গা থাকতেই পারে—তবে সেটা যেন হয় স্বাস্থ্যকর ও ভারসাম্যপূর্ণ। প্রাকৃতিক বিকল্পগুলো ব্যবহার করে আপনি স্বাদ এবং সুস্থতা, দুটোকেই উপভোগ করতে পারবেন।

 

মারিয়া

×