
ছবি: সংগৃহীত
গলায় জ্বলা ভাব বা অস্বস্তি বিভিন্ন কারণে হতে পারে, যেমন অ্যাসিড রিফ্লাক্স, গলা ব্যথা, শুষ্ক কাশি, বা অ্যালার্জি। এই সমস্যা হলে কিছু ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করে সাময়িক স্বস্তি পেতে পারেন, তবে যদি এটি দীর্ঘস্থায়ী হয়, গুরুতর হয় বা অন্য কোনো উপসর্গের সাথে দেখা দেয়, তাহলে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
এখানে কিছু সাধারণ করণীয় উল্লেখ করা হলো:
১. উষ্ণ লবণ-পানি দিয়ে গার্গল: এটি গলায় জ্বালা কমাতে এবং সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে।
- এক গ্লাস উষ্ণ পানিতে ১/৪ থেকে ১/২ চা চামচ লবণ মিশিয়ে নিন।
- এই পানি দিয়ে দিনে কয়েকবার গার্গল করুন।
২. পর্যাপ্ত তরল পান: গলা শুকিয়ে গেলে জ্বালাভাব বাড়তে পারে। পর্যাপ্ত পানি পান করলে গলা ভেজা থাকে এবং আরাম পাওয়া যায়।
- সাধারণ পানি, উষ্ণ পানি, ভেষজ চা (যেমন আদা চা, মধু চা) পান করুন।
- ঠান্ডা পানীয় বা অ্যাসিডিক জুস (যেমন কমলার রস) এড়িয়ে চলুন, কারণ এগুলো জ্বালা বাড়াতে পারে।
৩. গলার আরামের জন্য লজেন্স বা ক্যান্ডি: গলার লজেন্স বা হার্ড ক্যান্ডি চুষলে লালা উৎপাদন বাড়ে, যা গলাকে আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে এবং সাময়িক স্বস্তি দেয়।
৪. মশলাদার ও অ্যাসিডিক খাবার এড়িয়ে চলুন: মশলাদার খাবার, টক ফল, টমেটো বা কফি খেলে অ্যাসিড রিফ্লাক্স বাড়তে পারে, যা গলায় জ্বালা সৃষ্টি করে। এগুলো এড়িয়ে চলা উচিত।
৫. মাথা উঁচু করে ঘুমানো: যদি অ্যাসিড রিফ্লাক্সের কারণে গলায় জ্বালা হয়, তাহলে ঘুমানোর সময় বালিশ দিয়ে মাথা কিছুটা উঁচু করে রাখলে অ্যাসিড খাদ্যনালীতে ফিরে আসা কমে।
৬. আদা ও মধু: আদা প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণসম্পন্ন এবং মধু গলাকে আরাম দিতে পারে।
- এক কাপ উষ্ণ পানিতে আদার টুকরো মিশিয়ে পান করতে পারেন।
- মধু সরাসরি খেতে পারেন বা উষ্ণ পানিতে মিশিয়ে পান করতে পারেন।
৭. ধুলো-বালি ও ধোঁয়া এড়িয়ে চলুন: ধুলো, সিগারেটের ধোঁয়া, বা দূষিত বাতাস গলায় জ্বালা বাড়াতে পারে। এগুলি থেকে দূরে থাকুন।
৮. হিউমিডিফায়ার ব্যবহার: যদি ঘরের বাতাস খুব শুষ্ক থাকে, তাহলে একটি হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করে বাতাসকে আর্দ্র রাখতে পারেন, যা গলার শুষ্কতা ও জ্বালা কমাতে সাহায্য করবে।
৯. বিশ্রাম: শরীরকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম দিলে তা সুস্থ হতে সাহায্য করে, বিশেষ করে যদি জ্বালাভাব কোনো সংক্রমণ থেকে আসে।
কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন?
যদি গলায় জ্বালাভাব নিচের লক্ষণগুলোর সাথে দেখা দেয়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন:
- কয়েকদিন পরও জ্বালাভাব না কমে বা আরও খারাপ হয়।
- জ্বালার সাথে তীব্র গলা ব্যথা, জ্বর, শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া, বা খাবার গিলতে অসুবিধা হয়।
- গলার স্বর পরিবর্তন হয়ে যাওয়া বা কাশি দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকে।
- বুকের মাঝখানে জ্বালা বা টক ঢেকুর আসে, যা অ্যাসিড রিফ্লাক্সের ইঙ্গিত হতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ দ্রষ্টব্য: এই তথ্যগুলো শুধুমাত্র সাধারণ পরামর্শ। আমি একজন স্বয়ংক্রিয় বুদ্ধিমত্তা, কোনো স্বাস্থ্য পেশাদার নই এবং আমি চিকিৎসার পরামর্শ দিতে পারি না। আপনার স্বাস্থ্যের বিষয়ে যেকোনো উদ্বেগের জন্য সর্বদা একজন যোগ্য চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করুন।
সাব্বির