
ছবি: সংগৃহীত
সকালে ব্যায়াম করার সময় না পেলেও কিছু সহজ অভ্যাস মেনে চললে আপনি সারাদিন সুস্থ ও সতেজ থাকতে পারবেন। এগুলো আপনার দৈনন্দিন জীবনের অংশ করে নিলে স্বাস্থ্যের ওপর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
ব্যায়াম না করেও সুস্থ থাকার কার্যকর অভ্যাসগুলো:
১. পর্যাপ্ত পানি পান: সকালে ঘুম থেকে উঠেই এক গ্লাস পানি পান করুন। সারারাত শরীর পানিশূন্য থাকে, তাই সকালে পানি পান করলে শরীর দ্রুত হাইড্রেটেড হয়, মেটাবলিজম বাড়ে এবং শরীরের টক্সিন দূর হয়। দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করার চেষ্টা করুন।
২. স্বাস্থ্যকর নাস্তা গ্রহণ: সকালের নাস্তা দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার। পুষ্টিকর এবং ভারসাম্যপূর্ণ নাস্তা খেলে সারাদিন শক্তি পাওয়া যায়। চিনিযুক্ত বা প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে ফলমূল, ডিম, ওটস, বা পূর্ণ শস্যের রুটি খেতে পারেন।
৩. ছোট ছোট শারীরিক কার্যকলাপ: একটানা বসে থাকার অভ্যাস ত্যাগ করুন। প্রতি এক ঘণ্টা অন্তর কাজের ফাঁকে ৫-১০ মিনিটের বিরতি নিন। এই বিরতিতে একটু হেঁটে আসুন, হাত-পা স্ট্রেচ করুন বা হালকা কিছু ব্যায়াম যেমন স্কোয়াট করতে পারেন। লিফটের বদলে সিঁড়ি ব্যবহার করুন। দাঁত ব্রাশ করার সময় বা ফোনে কথা বলার সময় কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করতে পারেন।
৪. দিনের বেলা সক্রিয় থাকুন:
-
হাঁটাচলা: প্রতিদিন অন্তত ৫ হাজার স্টেপ হাঁটার চেষ্টা করুন। সকালে সময় না পেলে সন্ধ্যায় বা রাতে খাবারের পর কিছুক্ষণ হাঁটুন। এটি হজমে সাহায্য করবে এবং শরীরকে সচল রাখবে।
-
বাসা-বাড়ির কাজ: ঘরের কাজ যেমন ঘর মোছা, কাপড় ধোয়া, বাগান করা ইত্যাদিও এক ধরনের শারীরিক কার্যকলাপ, যা শরীরকে সক্রিয় রাখে।
৫. মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন:
-
মোবাইল থেকে বিরতি: সকালে ঘুম থেকে উঠেই মোবাইল ফোন দেখা এড়িয়ে চলুন। এটি মানসিক চাপ বাড়াতে পারে। এর পরিবর্তে কিছুক্ষণ মেডিটেশন বা গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করতে পারেন, যা মনকে শান্ত রাখবে।
-
পর্যাপ্ত ঘুম: প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন। ঘুমের অভাব শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ঘুমাতে যাওয়ার ১ ঘণ্টা আগে মোবাইল ফোন ব্যবহার বন্ধ করুন।
৬. সুষম খাদ্য গ্রহণ: শুধুমাত্র সকালে নয়, সারাদিনই সুষম খাবার গ্রহণ করা জরুরি।
-
ফল ও সবজি: আপনার প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় প্রচুর পরিমাণে টাটকা ফল ও শাকসবজি রাখুন। এগুলো ভিটামিন, খনিজ এবং ফাইবারে ভরপুর, যা শরীরকে সুস্থ রাখে।
-
চিনি ও লবণ নিয়ন্ত্রণ: চিনি, অতিরিক্ত লবণ, এবং স্যাচুরেটেড ফ্যাটযুক্ত খাবার কমিয়ে দিন।
-
হালকা রাতের খাবার: রাতে হালকা ও কম খাবার গ্রহণ করুন, কারণ রাতে হজমের জন্য শরীরকে বেশি পরিশ্রম করতে হয়।
৭. সূর্যের আলো গ্রহণ: দিনের কিছু সময় বাইরে কাটান এবং সূর্যালোকের সংস্পর্শে আসুন। এটি শরীরে ভিটামিন ডি উৎপাদনে সাহায্য করে, যা হাড়ের স্বাস্থ্য এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
৮. স্ট্রেচিং ও নমনীয়তা: সকালে হালকা কিছু স্ট্রেচিং অনুশীলন করুন, যা শরীরের নমনীয়তা বাড়াবে এবং পেশীগুলোকে সচল রাখতে সাহায্য করবে।
ব্যায়ামের বিকল্প না হলেও, এই অভ্যাসগুলো আপনার জীবনযাত্রায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে এবং আপনাকে সুস্থ ও কর্মক্ষম থাকতে সাহায্য করবে।
সাব্বির