
ছবি: সংগৃহীত
চীন সম্প্রতি এমন এক গুপ্তচর ড্রোন উন্মোচন করেছে, যার আকার একটি মশার মতো। ড্রোনটি তৈরি করেছে হুনান প্রদেশে অবস্থিত ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব ডিফেন্স টেকনোলজি (NUDT)। এটি একটি মাইক্রো ফ্ল্যাপিং-উইং এরিয়াল ভেহিকেল (MAV)—যার আকার মাত্র ১-২ সেন্টিমিটার, ওজন প্রায় ০.৩ গ্রাম।
এই ড্রোনের গঠন এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে এটি দেখতে মশার মতো লাগে—দুটো স্বচ্ছ পাখা, তিনটি সরু পা, ও একটি কালো উল্লম্ব দেহ রয়েছে এতে। সিসিটিভিতে সম্প্রচারিত ভিডিওতে দেখা গেছে, এটি একজন ছাত্রের আঙুলের উপর মশার মতো বসে আছে। ড্রোনটি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে এটি মানুষের ত্বকের উপর বা অতি ছোট জায়গায় নীরবে অবস্থান করতে পারে।
ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব ডিফেন্স টেকনোলজি-এর একজন ছাত্র লিয়াং হেশিয়াং জানান, এটি “মশা-আকৃতির রোবট”, যা যুদ্ধক্ষেত্রের গোয়েন্দাগিরি এবং বিশেষ অভিযানে ব্যবহারযোগ্য হতে পারে। যদিও এখনই এটির ক্ষমতা সীমিত, তবে ভবিষ্যতে এটি বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
কারিগরি সীমাবদ্ধতা
এই ড্রোন এখনো পূর্ণাঙ্গভাবে যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত নয়। কিছু গুরুত্বপূর্ণ সীমাবদ্ধতা হলো—
- ব্যাটারি লাইফ খুবই কম, কেবলমাত্র অল্প সময়ের ইনডোর উড়ানের উপযোগী।
- পেলোড লিমিটেড, অর্থাৎ এতে ক্যামেরা বা মাইক্রোফোন বসানো এখনো সম্ভব নয়।
- বাইরের পরিবেশে ব্যবহারে সমস্যা হয়, কারণ হালকা বাতাসেও এটি দিক হারায়।
ভবিষ্যতের ঝুঁকি ও আশঙ্কা
যদিও এখনো এটি ল্যাব পর্যায়ের প্রোটোটাইপ, কিন্তু ড্রোনটির উদ্ভাবন অনেক বড় প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে:
- গোপন নজরদারি: রাজনৈতিক নেতা, অ্যাকটিভিস্ট বা ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের উপর নজরদারিতে ব্যবহার হতে পারে।
- নতুন নিরাপত্তা হুমকি: এত ছোট আকারের ডিভাইসকে চিহ্নিত করাও কঠিন—সাধারণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা দিয়ে প্রতিহত করা সম্ভব নয়।
- আন্তর্জাতিক আইন ও নৈতিকতা: চোখে দেখা যায় না এমন ডিভাইস দিয়ে নজরদারি বর্তমান আইন ও মানবাধিকার বিধিকে চ্যালেঞ্জ জানায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মিলিমিটার ও মিলিগ্রাম-এ পরিমাপযোগ্য গোয়েন্দা প্রযুক্তির যুগে প্রবেশ করছি আমরা। যুক্তরাষ্ট্রের DARPA RoboBee বা চীনের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ও এই ধরনের গবেষণায় এগিয়ে আছে। ফলে শুধু অস্ত্র নয়, ভবিষ্যতের যুদ্ধ ও গোয়েন্দা লড়াই হবে ‘নিরব’, ক্ষুদ্র ও মারাত্মক।
মুমু ২