ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৯ জুন ২০২৫, ১৫ আষাঢ় ১৪৩২

ইরান ১২টি পারমাণবিক বোমা তৈরি করতে পারবে এই মুহুর্তে!

প্রকাশিত: ১০:০৭, ২৯ জুন ২০২৫

ইরান ১২টি পারমাণবিক বোমা তৈরি করতে পারবে এই মুহুর্তে!

ছবি: সংগৃহীত

১২ দিনব্যাপী সংঘাত শেষে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে কার্যকর হয়েছে যুদ্ধবিরতি। তবে এই বিরতির মধ্যেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি। জানা গেছে, বর্তমানে ইরানের কাছে এত পরিমাণ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম রয়েছে, যা দিয়ে অন্তত ১২টি পারমাণবিক বোমা তৈরি করা সম্ভব।

ইসরায়েলি সামরিক আগ্রাসনের জবাবে আয়াতুল্লাহ খামেনির নেতৃত্বাধীন বাহিনী অন্তত ২২ দফা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এসব হামলায় ইসরায়েলের অর্থনীতিতে ৩,০০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন পশ্চিমা বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে তেল আবিব ও হাইফার মতো শহরগুলোর উপর পাল্টা হামলার পর ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

পশ্চিমা মিডিয়ার ভাষ্য অনুযায়ী, এই অর্থনৈতিক ক্ষতি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সরকারের জন্য বড় ধরনের রাজনৈতিক ধাক্কা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। আরব বিশ্বেও এই ঘটনাকে ইসরায়েলের জন্য ‘মনস্তাত্ত্বিক পরাজয়’ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

পারমাণবিক সক্ষমতা নিয়ে নতুন তথ্য

এই প্রেক্ষাপটে ইরানের পারমাণবিক ক্ষমতা নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (IAEA)। সংস্থার মহাপরিচালক রাফায়েল মারিয়ানো গ্রোসি ফ্রান্স ইন্টার রেডিওকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, ইরানের কাছে বর্তমানে এমন পরিমাণে ৬০% মাত্রার সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম রয়েছে, যা থেকে অন্তত ১২টি পারমাণবিক বোমা তৈরি সম্ভব।

গ্রোসি বলেন, ‘হামলায় পরমাণু স্থাপনাগুলোর কিছু ক্ষতি হলেও সেগুলোর মূল কার্যক্ষমতা এখনো রয়ে গেছে। এই কর্মসূচি ধ্বংস হয়েছেএমন ধারণা বিভ্রান্তিকর।’

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরান-ইসরায়েলের এই সাম্প্রতিক সংঘাত কেবল একটি প্রচলিত যুদ্ধ নয়, বরং এটি ছিল কৌশলগত শক্তি প্রদর্শন ও মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব বিস্তারের লড়াই। ইসরায়েল এই সংঘাতে ইরানের পরমাণু কাঠামো ধ্বংস করতে চাইলেও সফল হতে পারেনি। ইরানের বিশাল ভৌগোলিক বিস্তার, মধ্যপ্রাচ্যে তাদের মিত্রগোষ্ঠী ও প্রতিরোধ বাহিনীগুলো ইসরায়েলকে সীমিত আকারে আক্রমণে বাধ্য করেছে।

পশ্চিমা এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েল চেয়েছিল একটি নিরবিচ্ছিন্ন ও ব্যাপক অভিযানের মাধ্যমে ইরানকে দুর্বল করতে। কিন্তু বাস্তবতা বলছে, ইরানের প্রতিক্রিয়াশীল হামলায় ইসরায়েলকেই শেষ পর্যন্ত প্রতিরক্ষামূলক অবস্থানে যেতে হয়েছে।’

আইএইএ-ইরান সম্পর্কে উত্তেজনা

এদিকে, আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার সঙ্গে ইরানের সম্পর্কে টানাপোড়েন বেড়েছে। আইএইএ’র নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে তেহরান। সংস্থার অভিযোগ, ইরান এখন আন্তর্জাতিক তদারকি দলকে প্রায় কোনো তথ্যই দিচ্ছে না। বিশেষ করে ফোর্দোর ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রে সেন্ট্রিফিউজগুলো ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর সেখানে পর্যবেক্ষকদের প্রবেশও সীমিত করা হয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে অস্ত্র প্রতিযোগিতা এবং কূটনৈতিক উত্তেজনার আশঙ্কা বাড়ছে। যদি ইরান সত্যিই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করে, তাহলে তা শুধু ইসরায়েল নয়, সমগ্র অঞ্চলেই ভারসাম্যহীনতা তৈরি করবে।

 

সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=027iVgilqt8

রাকিব

×