ছবিঃ সংগৃহীত
অনেকেই এমন সমস্যার সম্মুখীন হন—কোনো কারণ ছাড়াই হাত-পা ঘামছে। অফিসে, ক্লাসে কিংবা সাধারণ চলাফেরায় এই অস্বস্তিকর পরিস্থিতি বিব্রত করে দেয় অনেককে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সমস্যা ‘হাইপারহাইড্রোসিস’ নামে পরিচিত, যার নির্দিষ্ট কারণ এখনও পুরোপুরি নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। তবে কিছু সম্ভাব্য কারণ ও প্রতিকার রয়েছে যেগুলো অনুসরণ করলে মুক্তি মিলতে পারে।
হাত-পা ঘামার সম্ভাব্য কারণ
চিকিৎসকদের মতে, বংশগতভাবে এই সমস্যা থাকা অন্যতম প্রধান কারণ। এছাড়া মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা, শরীরের স্নায়বিক উত্তেজনা, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা কিংবা শরীরে ভিটামিনের ঘাটতির কারণেও হাত-পা ঘামতে পারে। তাছাড়া পারকিনসন্স ডিজিজ, থাইরয়েড সমস্যা, ডায়াবেটিস, শরীরে গ্লুকোজের স্বল্পতা এবং মেনোপজ-পরবর্তী হরমোন পরিবর্তনও এই সমস্যার উৎস হতে পারে।
প্রাথমিক করণীয়
হাত-পা ঘামা একটি শারীরিক সংকেত হতে পারে, তাই সঠিক কারণ নির্ণয় না করে চিকিৎসা শুরু করা অনুচিত। চিকিৎসকদের পরামর্শ হচ্ছে—প্রথমে একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে এর মূল কারণ চিহ্নিত করা জরুরি।
সমাধানের উপায়
হাত-পা ঘামা প্রতিরোধে বর্তমানে তিনটি কার্যকর পদ্ধতি প্রচলিত:
- বিশেষ ধরনের লোশন: অ্যালুমিনিয়াম ক্লোরাইডযুক্ত লোশন নিয়মিত হাত-পায়ে ব্যবহার করলে ঘাম কমে আসতে পারে।
- বৈদ্যুতিক থেরাপি: ‘আয়নোফোরেসিস’ নামে পরিচিত এক ধরনের বৈদ্যুতিক যন্ত্রে নির্দিষ্ট সময় ধরে হাত-পা সেঁকে নিলে ঘাম কমে যায়। প্রয়োজনে এটি পুনরায় ব্যবহার করা যায়।
- সার্জারি: যাদের সমস্যা খুব জটিল, তাদের জন্য ‘সিমপ্যাথেকটমি’ নামে এক ধরনের নার্ভ কাটার অস্ত্রোপচারও করানো যেতে পারে, যা অনেক ক্ষেত্রেই স্থায়ী সমাধান দেয়।
শেষ কথা
হাত-পা ঘামা সাধারণ কোনো সমস্যা মনে হলেও এর পেছনে লুকিয়ে থাকতে পারে জটিল কোনো শারীরিক কারণ। তাই বিষয়টিকে হালকাভাবে না দেখে সময়মতো চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। সঠিক চিকিৎসা ও নিয়মিত পরিচর্যার মাধ্যমে এই বিব্রতকর সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
আলীম
