
সকাল মানেই কাজের ব্যস্ততা। আর এই ব্যস্ততায় অনেকেই নাশতা খেতে ভুলে যান কিংবা ইচ্ছাকৃতভাবেই এড়িয়ে যান। তবে এই অভ্যাসই দীর্ঘমেয়াদে শরীরের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে বলে সতর্ক করেছেন চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা।
হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট ড. ত্রিশা পাসরিচা সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানান, আমাদের শরীর সকালের সময় খাবার গ্রহণের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত থাকে। ঘুম থেকে ওঠার পর শরীরের ইনসুলিন সংবেদনশীলতা সবচেয়ে বেশি কার্যকর থাকে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। অথচ রাতের দিকে মেলাটোনিন হরমোন সক্রিয় হয়ে ইনসুলিনের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এতে একই খাবার রাতের বেলায় খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা অনেক বেশি বেড়ে যেতে পারে।
তিনি বলেন, “নাশতা না খাওয়ার ফলে শুধু রক্তে শর্করার ভারসাম্যই বিঘ্নিত হয় না, বরং এতে স্মৃতিশক্তি দুর্বল হওয়া, মনোযোগে ঘাটতি ও দিনের বাকি সময় অস্বাস্থ্যকর খাবারের প্রতি আসক্তির আশঙ্কাও বাড়ে।”
ড. পাসরিচা সুপারিশ করেন, ঘুম থেকে ওঠার এক ঘণ্টার মধ্যেই কিছু পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা উচিত। এতে শরীর দ্রুত জ্বালানি পায় এবং দিনের কার্যক্ষমতা বাড়ে। স্বাস্থ্যকর নাশতার উদাহরণ হিসেবে তিনি সবজিভর্তি ওমলেট, বা ফল ও বাদামসহ ওটমিল খাওয়ার পরামর্শ দেন।
এ বিষয়ে হার্ভার্ড হেলথ পাবলিশিং কর্তৃক প্রকাশিত একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, নাশতা হলো দিনের প্রথম গুরুত্বপূর্ণ খাবার যা সারারাতের উপবাস ভাঙে। ঘুমের সময় দেহ তার ভেতরের কাজ চালিয়ে যায়, ফলে সকালে গ্লুকোজের ঘাটতি দেখা দেয়। এই ঘাটতি পূরণ না করলে মস্তিষ্ক ও শরীরের স্বাভাবিক কার্যকারিতা বিঘ্নিত হতে পারে।
গবেষণায় আরও উল্লেখ করা হয়, প্রতিদিন সকালের খাবার এড়িয়ে চললে দেহঘড়ির স্বাভাবিক ছন্দ ও বিপাকক্রিয়ার ভারসাম্য নষ্ট হয়। দীর্ঘমেয়াদে এর প্রভাব পড়ে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যে।
বিশেষজ্ঞরা তাই পরামর্শ দিচ্ছেন, কাজের ব্যস্ততা বা সময়ের অজুহাত নয়, বরং প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে যত দ্রুত সম্ভব একবাটি স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে দিন শুরু করাই হোক অভ্যাস।
নিয়মিত ও সঠিক সময়ে নাশতা করা শুধু শরীরের জ্বালানি যোগায় না, বরং আপনাকে রাখে সুস্থ, সজাগ ও সচেতন।
Mily