ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২০ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

সময় ধরে সত্যিকারের সম্পদ তৈরি করে এমন ৫টি অভ্যাস

প্রকাশিত: ২০:০৩, ২০ মে ২০২৫

সময় ধরে সত্যিকারের সম্পদ তৈরি করে এমন ৫টি অভ্যাস

ছবিঃ সংগৃহীত

আমরা যখন ‘সম্পদ’-এর কথা ভাবি, তখন প্রথমেই মাথায় আসে টাকা-পয়সা, ভালো চাকরি, কিংবা লাভজনক বিনিয়োগ। কিন্তু প্রকৃত অর্থে দীর্ঘমেয়াদে যে সম্পদ আমাদের জীবনে স্থায়ী প্রভাব ফেলে, তার অনেকটাই টাকার সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। কিছু অভ্যাস আছে, যেগুলো আর্থিক নয়—তবুও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এগুলো আমাদের জীবনে শান্তি, সফলতা ও স্থায়িত্ব এনে দেয়।

চলুন জেনে নেওয়া যাক এমনই ৫টি অভ্যাস যা আসল সম্পদ তৈরি করে—টাকার বাইরেও।

১. জ্ঞান ও শিক্ষায় বিনিয়োগ
শিক্ষা কোনো নির্দিষ্ট পর্যায়ে শেষ হয়ে যায় না—এটা এক ধরনের আজীবন বিনিয়োগ। ডিগ্রি অর্জন হোক বা বই পড়া, নতুন কিছু শেখা কিংবা দক্ষতা বাড়ানো—জ্ঞান সবসময়ই আপনার শক্তি বাড়ায়। এটা আপনার আয় বৃদ্ধির সম্ভাবনা বাড়ায়, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা উন্নত করে, এবং সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে সাহায্য করে। জীবনের যেকোনো পর্যায়ে জ্ঞানই সবচেয়ে বড় পুঁজি।

২. নিজের স্বাস্থ্য ও মনের যত্ন নেওয়া
স্বাস্থ্য ভালো না থাকলে টাকা-পয়সা দিয়ে খুব একটা লাভ হয় না। শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য সময় ও মনোযোগ দেওয়া খুব জরুরি। নিয়মিত ব্যায়াম, পুষ্টিকর খাবার, পর্যাপ্ত ঘুম আর মানসিক চাপ ব্যবস্থাপনার অভ্যাস—এইসব কিছু আপনাকে আরও কর্মক্ষম ও ইতিবাচক করে তোলে। সুস্থ দেহ ও মন জীবনের সব ক্ষেত্রেই আপনার সাফল্যের ভিত্তি।

৩. সম্পর্ক গড়ে তোলা ও সংযোগ তৈরি করা
জীবনের আসল সম্পদ অনেক সময়ই আশেপাশের মানুষজন। পরিবার, বন্ধু, সহকর্মী বা মেন্টরের সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ক আপনার জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। এই সংযোগগুলো শুধু আবেগগত সহায়তাই দেয় না, বরং ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে এগিয়ে যাওয়ার পথ তৈরি করে দেয়। ভালো সম্পর্ক মানেই সমর্থন, সুযোগ আর মানসিক শান্তি।

৪. নিজেকে ভেতর থেকে গড়ে তোলা
ব্যক্তিত্বের বিকাশ মানেই শুধু ক্যারিয়ার নয়, বরং পূর্ণাঙ্গ জীবনের পথ। আত্মবিশ্বাস, আবেগীয় বুদ্ধিমত্তা, নেতৃত্বের গুণাবলি, যোগাযোগ দক্ষতা—এসবই জীবনের জটিলতা সহজে সামাল দিতে সাহায্য করে। নিজের প্রতি সচেতনতা বাড়ানো, নিজের লক্ষ্য ঠিক রাখা ও তা অর্জনের জন্য কাজ করাই হচ্ছে আসল আত্মোন্নয়ন।

৫. সময় ব্যবস্থাপনা শেখা
সময় হলো জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ—এবং এটা একবার গেলে আর ফিরে আসে না। সময় ব্যবস্থাপনায় দক্ষ হলে আপনি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর জন্য সময় দিতে পারেন, কম চাপ নিয়ে বেশি কাজ করতে পারেন। কীভাবে সময় কাজে লাগাতে হবে সেটা শিখে গেলে জীবনের প্রতিটি খাতে আপনি আরও ফলপ্রসূ হতে পারবেন। সময়ের সঠিক ব্যবহার জীবনে ধাপে ধাপে বিশাল সাফল্য এনে দেয়।


সম্পদের মানে শুধু টাকা নয়—বরং তা আপনি কেমন জীবনযাপন করছেন, কী শিখছেন, কতটা সুস্থ থাকছেন, কীভাবে সম্পর্ক গড়ছেন এবং কীভাবে সময় কাজে লাগাচ্ছেন, তার ওপর নির্ভর করে। এই অমূল্য অভ্যাসগুলো হয়তো তৎক্ষণাত ফল দেয় না, কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এগুলোই জীবনে প্রকৃত সাফল্য আর পরিপূর্ণতা এনে দেয়।
 

মারিয়া

×