
ছবিঃ সংগৃহীত
ডিজিটাল যুগে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের একটি হলো শিশুর মোবাইল আসক্তি। বর্তমান সময়ে দেখা যাচ্ছে, অনেক শিশু পড়াশোনায় মনোযোগ না দিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মোবাইল গেম খেলে বা ভিডিও কনটেন্ট দেখে সময় পার করছে। এর ফলে বৃদ্ধি পাচ্ছে স্ক্রিন টাইম, যা শিশুদের জন্য সৃষ্টি করছে বিভিন্ন স্বাস্থগত ঝুঁকি।
শিশুদের স্মার্টফোন থেকে দূরে রাখতে চাইলে প্রথমেই বাবা-মায়েদেরও হতে হবে সচেতন। যদি অভিভাবকরাই শিশুর সামনে মোবাইল বা ডিজিটাল ডিভাইসে অধিক সময় ব্যয় করেন, তাহলে শিশুরাও সেটাকে স্বাভাবিক হিসেবে গ্রহণ করবে। তাই শিশুদের সামনে মোবাইল ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
পরিবারের সঙ্গে বেশি করে কোয়ালিটি টাইম কাটানো, শিশুদের খেলাধুলা ও সৃজনশীল কার্যক্রমে যুক্ত রাখা গুরুত্বপূর্ণ। মোবাইল ব্যবহারের জন্য নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করে দেওয়া উচিত এবং তা কঠোরভাবে মানা প্রয়োজন। যেমন—খাবারের সময় বা ঘুমাতে যাওয়ার আগে কোনোভাবেই মোবাইল বা ট্যাব ব্যবহার করতে দেওয়া যাবে না।
শিশুদের পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করাও মোবাইল আসক্তি দূর করার একটি কার্যকর উপায়। প্রতিদিন অন্তত ৮-৯ ঘণ্টা ঘুমের ব্যবস্থা করতে হবে, যা তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
পড়াশোনার পাশাপাশি শিশুদের নাচ, গান, সাঁতার, ছবি আঁকা বা যেকোনো প্রিয় সহ-শিক্ষামূলক কার্যক্রমে যুক্ত করা যেতে পারে। এতে শিশুদের মনোযোগ অন্যদিকে যাবে এবং মোবাইলের প্রতি নির্ভরতা কমবে। পাশাপাশি শিশুদের বই পড়ার প্রতি উৎসাহিত করতে হবে। এটি কার্টুন চরিত্রের গল্প, ছড়ার বই বা সায়েন্স ফিকশন হতে পারে। এভাবে তারা বিনোদনের একটি ইতিবাচক বিকল্প পাবে।
বিকেল বেলায় শিশুদের অন্যান্য বাচ্চাদের সঙ্গে খেলার সুযোগ করে দিতে হবে, যাতে তারা শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকে। স্মার্টফোন থেকে দূরে রাখার আরও একটি কার্যকর উপায় হলো, মাঝে মাঝে শিশুদের পার্ক বা প্রাকৃতিক পরিবেশে বেড়াতে নিয়ে যাওয়া। এতে তারা প্রকৃতি উপভোগ করতে পারবে এবং ডিভাইস থেকে দূরে থাকবে।
সর্বোপরি, শিশুদের মোবাইল থেকে দূরে রাখতে হলে পরিবারকেই হতে হবে সচেতন, ধৈর্যশীল ও প্রেরণাদানকারী। ছোট ছোট উদ্যোগেই গড়ে উঠতে পারে একটি সুস্থ, আনন্দময় এবং প্রযুক্তি-সচেতন আগামী প্রজন্ম।
ইমরান