
পরিবর্তন হচ্ছে জীবনের একটি অনিবার্য আইন, যা আমাদের অস্তিত্বের শর্তসমূহকে নিয়মিতভাবে পুনঃস্থাপন ও পুনর্নির্মাণ করে। প্রতি মুহূর্তে আমাদের জীবন পরিবর্তনের মধ্যে থাকে, এবং এ পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে চলতে আমাদের প্রত্যাশাগুলো পুনঃস্থাপন করা প্রয়োজন। কিশোরবেলা হলো এমন একটি সময়, যেখানে একটি শিশু ধীরে ধীরে তরুণে পরিণত হয়, এবং এটি অভিভাবকদের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জের সৃষ্টি করে।
প্রত্যাশার শক্তি
কিশোর-কিশোরীর পরিবর্তন সম্পর্কে অভিভাবকদের সঠিকভাবে মানসিক প্রস্তুতি নেয়া গুরুত্বপূর্ণ। অভিভাবকরা সাধারণত তিন ধরনের প্রত্যাশা রাখতে পারেন:
ভবিষ্যদ্বাণী – “এটা আমি ভাবছি ঘটবে।”
আকাঙ্ক্ষা – “এটা আমি চাই যে ঘটুক।”
অবস্থা – “এটা আমি বিশ্বাস করি ঘটবে।”
যখন অভিভাবকের প্রত্যাশা পূর্ণ হয়, তারা প্রস্তুত অনুভব করেন, কিন্তু যদি তা পূর্ণ না হয়, তবে তা আবেগিকভাবে কষ্টদায়ক হতে পারে।
কিশোরবেলার চারটি ধাপ
আপনার সন্তানের কিশোর বয়সের পরিবর্তনগুলির জন্য প্রস্তুতি নিতে, চারটি সম্ভাব্য ধাপ বিবেচনা করুন।
প্রথম ধাপ: শৈশব থেকে বিচ্ছিন্নতা (৯-১৩ বছর)
এই সময়কালেঅভিভাবকরা যে পরিবর্তনগুলো আশা করতে পারেন তা হলো:
জীবনের বিশৃঙ্খলা বৃদ্ধি, যা তাদের বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে।
পুরনো শিশুসুলভ আচরণ ও পরিচিতির প্রতি অসন্তোষ বৃদ্ধি।
পিতামাতার কর্তৃত্বের প্রতি প্রশ্নোত্তর এবং বিতর্কের প্রবণতা।
স্বাধীনতা ও বড় হয়ে ওঠার জন্য আরো সুযোগের প্রয়োজন।
দ্বিতীয় ধাপ: বন্ধুদের মধ্যে পরিবার গঠন (১৩-১৫ বছর)
এই সময়কালেঅভিভাবকরা যে পরিবর্তনগুলো আশা করতে পারেন তা হলো:
সামাজিক স্বাধীনতার জন্য অধিক সংঘর্ষ।
মিথ্যা কথা বলা এবং দুইটি জীবন বাঁচানোর প্রবণতা।
শারীরিক পরিবর্তন নিয়ে আত্মসচেতনতা বৃদ্ধি এবং গোপনীয়তা চাওয়া।
বন্ধুদের চাপ, সামাজিক নিষ্ঠুরতা এবং শোষণ।
তৃতীয় ধাপ: প্রাপ্তবয়স্কদের মতো আচরণ (১৫-১৮ বছর)
এসময় অভিভাবকরা আশা করতে পারেন:
বড়দের মতো কাজের প্রতি আগ্রহ যেমন পার্ট-টাইম চাকরি, ড্রাইভিং, ডেটিং।
সম্পর্কের ক্ষেত্রে গভীর আবেগ (এবং কখনো কখনো যৌন) জড়িত হওয়া।
পরিবারের বাইরে স্বাধীনতা চাওয়া এবং পরিবারের থেকে বের হয়ে যাওয়ার ইচ্ছা।
উচ্চ বিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েশন নিয়ে উদ্বেগ ও স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুতি।
চতুর্থ ধাপ: নিজস্ব স্বাধীনতার দিকে যাত্রা (১৮-২৩ বছর)
এই সময়কালে অভিভাবকরা যে পরিবর্তনগুলো আশা করতে পারেন তা হলো:
জীবনের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পরিচালনায় অক্ষমতা, দেরি করা, দায়িত্বের প্রতি অবহেলা।
ভবিষ্যৎ সম্পর্কে উদ্বেগ এবং আত্মবিশ্বাসের অভাব।
সামাজিক বিভ্রান্তি, সমস্যা এড়িয়ে চলা এবং মাদকাসক্তির প্রতি আকর্ষণ।
আবার পরিবারে ফিরে আসা যখন স্বাধীন জীবন পরিচালনা করতে ব্যর্থ হয়।
যদিও প্রতিটি কিশোরের উত্তরণ আলাদা, তবে কিছু মৌলিক উন্নয়নগত চ্যালেঞ্জ সাধারণভাবে দেখা যায়।
রাজু