ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রীর বরণ ॥ সাফজয়ী ফুটবল-কন্যা

অপরাজিতা প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০১:২৪, ১৮ নভেম্বর ২০২২

প্রধানমন্ত্রীর বরণ ॥ সাফজয়ী ফুটবল-কন্যা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফজয়ী নারী ফুটবলারদের সম্মানিত করলেন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফজয়ী নারী ফুটবলারদের সম্মানিত করলেন। অভিনন্দন আর প্রশংসার জোয়ারে ভাসিয়ে তাদের হাতে আর্থিক সম্মাননা তুলে দিলেন। দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন গ্রহণ করলেন এমন অভাবনীয় পুরস্কার। আর প্রধানমন্ত্রী আনন্দ আর উৎসবের আমেজে নারী খেলোয়াড়দের স্মরণ করিয়ে দিলেন ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ। অকুণ্ঠিত চিত্তে বললেন, যুদ্ধে জিতেছি খেলায়ও জিততে হবে।

লাল সবুজের পতাকাকে যেভাবে বঙ্গললনারা হিমালয়ের চূড়ায় উঠিয়ে দিলেন তাকে যথাযথ সম্মানে খেলোয়াড়দের বরণও করলেন। সত্যিই কোমলমতি অনিন্দ্যসুন্দর বাংলার দুর্দান্ত নারীরা যে মাত্রায় আলোকের ঝর্ণাধারায় সিক্ত হলেন তেমন ইতিহাস তো শুভক্ষণের মাঙ্গলিক বার্তা। অধিনায়ক সাবিনা, কৃষ্ণা রানী ও সানজিদাসহ পুরো টিমের দুর্দান্ত পারদর্শিতায় যে রাজমুকুট দেশকে উপহার দেওয়া হলো তার দাম কোন কিছুর বিনিময়ে হয় না।

নিজের দেশের মাটি নয়, স্বাগতিক দেশের ভিন্ন পরিবেশ ও মাঠে খেলে জয় ছিনিয়ে আনা সত্যিই এক উপভোগ্য বার্তা। অধিনায়ক সাবিনা শুধু যে দলকে নেতৃত্ব দিলেন তা কিন্তু নয় আরও নজরকাড়াভাবে সর্বোচ্চ গোলদাতাও তিনি। অসম সাহসের অভাবনীয় কীর্তি। প্রধানমন্ত্রী নিজেও আনন্দ-আবেগে আপ্লুত। অস্ত্র হাতে যুদ্ধের ময়দান মোকাবিলা করার মতোই খেলার মাঠে বল সামলানোও অনেক কঠিন ব্যাপার।

তেমন কাঠিন্যকে বাংলার দামাল নারীরা শুধু মোকাবিলাই নয়- চ্যাম্পিয়নশীপ অর্জন করে শিরোপা ছিনিয়ে আনা এক দুর্দান্ত পারদর্শিতা। প্রধানমন্ত্রী সাফজয়ী নারী ফুটবল দলের সাব খেলোয়াড়দের ৫ লাখ করে টাকা হস্তান্তর করেন। এছাড়া কর্মকর্তাদের দেন ২ লাখ টাকা করে। তবে প্রধানমন্ত্রী খেলোয়াড়দের আরও বেশি প্রশিক্ষণের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। প্রশিক্ষণ যত বাড়বে, খেলার মানও তত উৎকর্ষতার দিকে এগিয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রী শুধু শহরকেন্দ্রিক খেলাকে নয় বরং তৃণমূল থেকে নতুন খেলোয়াড় তৈরি হওয়ার ওপর বিশেষ জোর দিলেন।

খেলাধুলা শুধু বিনোদন নয়, শারীরিক চর্চারও এক বিশেষ বিষয়। কারণ শারীরিকভাবে সুস্থ সবল নাগরিকই আগামীর বাংলাদেশের যোগ্য উত্তরসূরি হবে। সেখানে নারীরাও সমান অংশীদারিত্বে নিজেদের ভূমিকায় অম্লান থাকবে। তবে সাম্প্রতিককালে শিশু কিশোরদের ফ্ল্যাট বাড়িতে আটকে থাকার বিষয়টাও প্রধানমন্ত্রীকে মর্মাহত করে। তার চেয়েও বেশি মনোক্ষুণœ হন নতুন প্রজন্ম যখন খেলার মাঠে না গিয়ে মুঠো ফোনে আসক্তি হয়ে পড়ে। সেটাকে কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যাবে না।

ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নিজেদের গড়ে তুলবে যথার্থ বিকাশমান পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে। সেখানে শরীরচর্চা থেকে শুরু করে জ্ঞান-গরিমায় পারদর্শী হয়ে আধুনিক বাংলাদেশকে মানসম্মতভাবে এগিয়ে নেওয়াও বর্তমান পরিস্থিতির বিশেষ চাহিদা। বিশ্বসভায় বাংলাদেশের স্থান নজরকাড়া করতে সমতাভিত্তিক সমাজকে আরও জোরালোভাবে এগিয়ে নেওয়াও অত্যন্ত জরুরি। যার জন্য নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাইকে যোগ্যতার মাপকাঠিতে প্রস্তুত হতে হবে।

সবশেষে অধিনায়ক সাবিনাসহ অন্যান্য নারী খেলোয়াড় প্রধানমন্ত্রীর হাতে ‘সাফ উইমেন চ্যাম্পিয়নশীপ ২০২২’ ট্রফিটা তুলে দেন। নারী ক্রিকেট দল বিশ্বকাপে অংশ নিয়ে পাকিস্তানকে হারানোর কৃতিত্বও পুনরায় স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের প্রতি খেলোয়াড়দের বিভিন্ন রকম সহযোগিতা করার উদাত্ত আহ্বান জানান।
অপরাজিতা প্রতিবেদক

×