.
দাবদাহ চারপাশে! কথাটা শুনলেই চোখ কপালে উঠে যায়! বাস্তবতাটা আসলেই তাই। ছোট্টবেলায় দাদির মুখে শুনেছি জ্যৈষ্ঠ হচ্ছে জেঠামাস। তীব্র গরমের জন্য এমন বলা হতো। আর ভাদ্রের গরমে তাল পাকে। মানে এর তেজও কোন অংশে কম নয়। এই যে গা চিটচিটে ভ্যাপসা গরম, অতিষ্ঠ জনজীবন। না ঘরে শান্তি, না বাইরে। মাঝে মাঝে একটু বৃষ্টি হলেও তাতে গরম আরও বেড়ে যায়। যাদের নিত্যদিন বাইরে যেতেই হয়, তাদের কষ্ট সীমাহীন। ঘরে যেনতেনভাবে থাকা গেলেও, স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত বা বিশেষ কোথাও গেলে ভাল পোশাক পরতেই হয়। তাই সেক্ষেত্রে একটু ঢিলেঢালা পোশাক পরাই শ্রেয়। এই গরমে প্রচুর ঘাম হয়। রোদে পুড়ে, ঘেমে-নেয়ে শরীরে দুর্গন্ধ ছড়ায়। বাসে চড়লে তো কথাই নেই। অনেক সময় নিজের গায়ের গন্ধ নিজে বুঝা যায় না।
তাই বাসা থেকে বের হওয়ার আগে গোসল করে নেয়া উত্তম। এতে দিনের শুরুটা আরামের হয়। এরপর ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করবেন। বাজারে বিভিন্ন রকম ডিওডোরেন্ট পাওয়া যায়। নিজের পছন্দমতো সুগন্ধ দেখে কিনে নিতে পারেন। বডি স্প্রে, পারফিউম, পাউডার, ডিওডোরেন্ট যে কোনটা ব্যবহার করতে পারেন। রাতে গায়ে পাউডার মেখে ঘুমালে আরাম পাবেন। ঠা-ার সমস্যা না থাকলে সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে বা রাতে ঘুমানোর আগে আরেকবার গোসলও করে নিতে পারেন। তবে গোসলের পর চুল অবশ্যই ভাল করে শুকিয়ে নেবেন, বিশেষ করে যাদের চুল লম্বা। না হয় ভেজা চুল ঘামে আঠালো হয়ে যায়। আর পোশাকের মধ্যে এ সময় ছেলে-মেয়ে, ছোট-বড় সবার জন্য সুতিই আরাম। এখন সবাই ফ্যাশন সচেতন। তাই যে কোন শপিং মলে ঋতুভিত্তিক পোশাক পাওয়া। বুটিক শপগুলো এদিক দিয়ে অনেক এগিয়ে আছে। এমনকি পার্টিতে পড়ার মতো সুতি পোশাকও রয়েছে। ছেলেদের জন্য এ সময় হাফ হাতা গেঞ্জি, শার্ট, টি-শার্ট, পোলো শার্ট আরামদায়ক। চেক, ব্লক, বাটিকের কাপড় কিনে বানিয়েও নিতে পারেন হাফ হাতা শার্ট বা ফতুয়া। অফিস ছাড়া যে কোন জায়গায় ফতুয়া পড়তে পারেন। অনেকে শর্ট পাঞ্জাবিও পরেন। পায়ে মুজা পরা আপাতত বাদ দিতে পারেন। এতে গরম কম লাগবে। আর যাদের মোজা ছাড়া চলে না, তারা হাফ মোজা পরতে পারেন। শুধু পায়ের নিচটা ঢাকা থাকবে। রোদ থেকে বাঁচতে সানগ্লাস, ক্যাপ ব্যবহার করতে পারেন। যদি ছাতা ব্যবহার করতে না চান।
মেয়েদের পোশাকের শেষ নেই। বিভিন্ন রকম কুর্তি, কামিজ, পাঞ্জাবি, কাফতান, টপস ইত্যাদি অনেক কিছুই রয়েছে। যারা জামা বা শাড়িতে অভ্যস্ত তারা সুতি, লিনেন, লোন, জর্জেট, ভিসকস ইত্যাদি কাপড় বেছে নিতে পারেন। আর বের হওয়ার আগে অবশ্যই সানস্কিন বা সানব্লক ব্যবহার করবেন। চুল বেঁধে নিবেন। যারা হিজাব পরেন এই গরমে নরম সুতি বা জর্জেটের হিজাব বেছে নিন। বোরকা পরলে চেরি কাপড়ের বোরকা আরামদায়ক। আর অবশ্যই প্রচুর পানি এবং পানীয় পান করবেন। কোল্ডড্রিঙ্কস এড়িয়ে চলবেন। তার চেয়ে ডাব খেতে পারেন। ঘরে তৈরি বিভিন্নরকম ফলের জুস খেতে পারেন। যাদের উচ্চ রক্তচাপ নেই, তারা মাঝে মাঝে একটা স্যালাইনও খেতে পারেন। গরমে ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে যে পরিমাণ পানি বের হয়ে যায়, এসব পানীয় তার ঘাটতি পূরণ করবে। আর চেষ্টা করবেন রোদ এড়িয়ে চলতে। যাদের অফিস নেই, তারা জরুরী প্রয়োজন ছাড়া বের হবেন না।