ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৪ মে ২০২৫, ২১ বৈশাখ ১৪৩২

সাগর-রুনি হত্যায় অংশ নেয় দুইজন, আলামত নষ্টে বাধা তদন্তে

প্রকাশিত: ২২:১২, ৩ মে ২০২৫

সাগর-রুনি হত্যায় অংশ নেয় দুইজন, আলামত নষ্টে বাধা তদন্তে

ছবি: সংগৃহীত

সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি আত্মহত্যা করেননি, বরং পরিকল্পিতভাবে খুন হয়েছেন। হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছিল দুইজন। হত্যার আগে এক খাটে সন্তান মেঘকে নিয়ে শুয়ে ছিলেন তারা। প্রথমে খুন করা হয় সাগরকে, পরে রুনিকে।

এই তথ্য উঠে এসেছে হাইকোর্টে জমা দেওয়া নবগঠিত টাস্কফোর্সের অগ্রগতি প্রতিবেদনে। তবে ডিএনএ পরীক্ষায় অস্পষ্টতা থাকায় এখনো সুনির্দিষ্টভাবে হত্যাকারীদের শনাক্ত করা যায়নি বলে জানানো হয়েছে।

টাস্কফোর্স প্রধান ও পিবিআই প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. মোস্তফা কামাল শনিবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “হাইকোর্ট জানতে চেয়েছিল কী অগ্রগতি হয়েছে। আমরা যা কাজ করেছি, তা জানানো হয়েছে।”

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাগর-রুনির দাম্পত্য কলহ, পেশাগত শত্রুতা কিংবা চুরির উদ্দেশ্যে হত্যার কোনো প্রমাণ মেলেনি। রান্নাঘরের ছুরি ও বটি দিয়েই তাদের খুন করা হয়।
হত্যার সময় রুনি ছিলেন জীবিত অবস্থায়, তবে সাগরের হাত-পা বাঁধা হয়, কারণ তিনি বাধা দিতে পারতেন। রুনিকে নারী হিসেবে দুর্বল ভাবায় তার হাত-পা বাঁধা হয়নি।

রাত ৩টা থেকে ৫টার মধ্যে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে ধারণা টাস্কফোর্সের। হত্যার পরদিন সকালে সকাল ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা পৌঁছান ঘটনাস্থলে। এর আগেই গণমাধ্যমকর্মী ও স্থানীয়দের পায়ের ছাপে অনেক গুরুত্বপূর্ণ আলামত নষ্ট হয়ে যায়, যা তদন্তে বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়ায়।

রান্নাঘরের বারান্দার ভাঙা অংশটি (১৪.৫ × ৮.৫ ইঞ্চি) নতুন হওয়ায় তদন্তকারীদের ধারণা, সেখান দিয়েই ঢুকেছে হত্যাকারীরা। তবে সুস্পষ্ট কোনো পায়ের ছাপ পাওয়া যায়নি।

সিআইডি ও টাস্কফোর্সের যৌথ ডিএনএ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, নমুনায় ৫-৬ জনের ডিএনএ থাকায় নির্দিষ্ট কাউকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। সাধারণত ২-৩ জনের ডিএনএ থাকলে বিশ্লেষণ সম্ভব হয়।

উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে নিজ বাসায় খুন হন মাছরাঙা টিভির বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার ও এটিএন বাংলার রিপোর্টার মেহেরুন রুনি। পরে রুনির ভাই নওশের আলম বাদী হয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন।

টানা তদন্তে অগ্রগতি না হওয়ায় ২০২৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট র‌্যাবের কাছ থেকে তদন্তের দায়িত্ব সরিয়ে অভিজ্ঞ তদন্তকারীদের নিয়ে নতুন টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ দেয়। ৩১ মার্চের মধ্যে তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দেওয়ার কথা থাকলেও তদন্ত এখনো শেষ হয়নি।

টাস্কফোর্স নতুন করে ৭ সাংবাদিকসহ ১২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে বলে জানানো হয় প্রতিবেদনে।

এসএফ 

×