ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২

ফ্রান্সের পর ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে ভাবছে যেসব ক্ষমতাধর দেশ

প্রকাশিত: ১৯:০১, ২৭ জুলাই ২০২৫

ফ্রান্সের পর ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে ভাবছে যেসব ক্ষমতাধর দেশ

ছবি: সংগৃহীত।

গাজায় মানবিক সংকট প্রতিদিনই নতুন রূপ নিচ্ছে। একের পর এক ইসরাইলি হামলা, কঠোর অবরোধ ও খাদ্যসঙ্কটের কারণে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গোটা এলাকা। তবে এ ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আসতে শুরু করেছে আশার আলো। ফ্রান্সের পর এবার রাশিয়াও ভাবছে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানান, "মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার একমাত্র পথ হলো ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন। রাশিয়া বরাবরই দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের পক্ষে।"

তিনি বলেন, “ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের জন্য জাতিসংঘের প্রস্তাবগুলো মেনে চলা জরুরি। আমরা বিশ্বাস করি—শান্তি তখনই আসবে, যখন সব পক্ষ জাতিসংঘের সিদ্ধান্তকে গুরুত্ব দেবে।”

প্রসঙ্গত, ১৯৮৮ সালে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার সময় তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন (বর্তমান রাশিয়া) প্রথম দিকেই স্বীকৃতি দিয়েছিল।

এদিকে, জাতিসংঘ ইতোমধ্যে পূর্ব জেরুজালেম ও পশ্চিম তীরে ইসরাইলি দখলদারিত্বকে অবৈধ ঘোষণা করেছে। গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবি এবং সেনা প্রত্যাহারের আহ্বানও জানানো হয়েছে।

ফ্রান্স ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে, ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে। এর পর থেকেই যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির ওপর রাজনৈতিক চাপ বাড়ছে। দেশটির পার্লামেন্টের ২২০ জন এমপি, যাদের বেশিরভাগই লেবার পার্টির, প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারকে চিঠি দিয়ে দ্রুত ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টারমার জানিয়েছেন, "ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে হবে বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে। এটি দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের পথ প্রশস্ত করবে।"

তবে ইউরোপজুড়ে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়া নিয়ে মতবিরোধও দেখা যাচ্ছে। ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি বলেছেন, “ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের পক্ষে থাকলেও স্বীকৃতি আগে দেওয়া সমাধান নয়।” তার মতে, "যা এখনো বাস্তব নয়, তাকে স্বীকৃতি দিলে তা কেবল কাগজেই সীমাবদ্ধ থাকবে।"

ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রীও মন্তব্য করেছেন, ফিলিস্তিনকে তখনই স্বীকৃতি দেওয়া যাবে, যখন তারা ইসরাইলকেও রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে।

অন্যদিকে, জার্মানি জানিয়েছে, তারা এখনই ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে না। তবে দীর্ঘমেয়াদে দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধান বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করছে তারা।

গাজায় চলমান যুদ্ধের আবহে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি আন্তর্জাতিক পরিসরে নতুন করে জোরালো হচ্ছে। আগামী সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ অধিবেশনের আগে ফ্রান্স ও রাশিয়ার অবস্থান এই বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।

নুসরাত

×