
ছবি: সংগৃহীত।
একসময় যিনি সরাসরি ভারতকে 'দখলদার শক্তি' বলে অভিযুক্ত করেছিলেন, এখন তিনিই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আমন্ত্রণ জানালেন স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের মঞ্চে। মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জুর এই কূটনৈতিক ‘ইউ-টার্ন’ গোটা উপমহাদেশে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে নির্বাচনী প্রচারে ‘ইন্ডিয়া আউট’ আন্দোলনের হোতা ছিলেন মুইজ্জু। দিল্লির হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে জোরালো অবস্থান নিয়ে ভোটে জয়ী হয়ে ভারতের বিপরীতে চীনের ঘনিষ্ঠতায় ঝুঁকেছিলেন তিনি। কিন্তু বাস্তবতার কড়াচাবুক খেয়ে অবশেষে আবারও দিল্লির ছায়ায় ফিরলেন তিনি।
সম্প্রতি মালদ্বীপের ৬০তম স্বাধীনতা দিবসে রাষ্ট্রীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নরেন্দ্র মোদি। মালেতে তার সফরকালে দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছে প্রতিরক্ষা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও আবহাওয়া বিষয়ক একাধিক চুক্তি। ভারত প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ৫ হাজার কোটি টাকার লাইন অব ক্রেডিট, এরই মধ্যে হস্তান্তর করেছে ৭২টি হেভি ভেহিকলও। স্বাক্ষর হয়েছে চারটি সমঝোতা স্মারক (MoU) ও তিনটি সরকারি চুক্তি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, মুইজ্জুর অভ্যন্তরীণ দুর্বলতা ও চীনের সীমিত সহায়তা কাজে লাগিয়ে দিল্লি আবারও মালদ্বীপকে মিত্র করার কৌশলে সফল হয়েছে।
মালদ্বীপের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান ভারত মহাসাগরের বুকে এক গুরুত্বপূর্ণ স্ট্র্যাটেজিক জায়গায়। তাই দিল্লি বহুদিন ধরেই চায় দেশটিকে পাশে রাখতে। কিন্তু মুইজ্জু চীনঘেঁষা অবস্থান নিয়ে সেই ধারায় ছেদ ফেলেছিলেন। এখন আবার সেই চীনপন্থী রাষ্ট্রপ্রধান দিল্লিমুখী হওয়ায় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মোদিকে কূটনৈতিক ‘মাস্টারস্ট্রোক’ মারার কৃতিত্ব দিচ্ছেন অনেকে।
তবে এই ঘনিষ্ঠতা বেইজিংয়ের জন্য এক রকম দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে প্রভাব বিস্তার নিয়ে ভারত ও চীনের মধ্যে প্রতিযোগিতা নতুন মাত্রা পেতে পারে।
নুসরাত