ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৮ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২

দুর্ভোগে ১০ লাখ মানুষ

পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়ক খানাখন্দে ভরা

নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী, বরগুনা

প্রকাশিত: ২১:৪৪, ২৭ জুলাই ২০২৫

পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়ক খানাখন্দে ভরা

এভাবেই খানাখন্দে ভরা পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়ক

পটুয়াখালী-কুয়াকাটা ৭১ কিলোমিটার মহাসড়ক খানাখন্দে ভরপুর। গত দের মাস ধরে বিরামহীন বর্ষণে সড়ক খানাখন্দে ভরে গেছে। চালকরা জানান, বৃষ্টির পানিতে সড়কের পিচ আগলা হয়ে গাড়ি চাকায় ওঠে খানাখন্দ হয়েছে। এতে গাড়ি চালাতে বেশ সমস্যা হচ্ছে। সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে দক্ষিণাঞ্চলের অন্তত ১০ লাখ মানুষের চলাচলে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। দ্রুত সংস্কারের দাবি ভুক্তভোগীদের।
জানাগেছে, পটুয়াখালী-কুয়াকাটা ৭১ কিলোমিটার সড়ক। ২০০০ সালে সড়ক ও জনপথ বিভাগ এ সড়ক নির্মাণ করে। অভিযোগ রয়েছে নির্মাণ কালেই যথেষ্ট অনিয়মের আশ্রায় নিয়ে সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। ২০১৮ সালে সড়ক ও জনপথ বিভাগ এ সড়কের কিছু স্থানে দায়সারা সংস্কার করে। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ৯শ’ ১২ টি যানবাহন চলাচল করে। এর মধ্যে পরিবহন বাস, লোকাল বাস, ডিস্ট্্িরক্ট ট্রাক, মিনি ট্রাক, মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকার। এর বাহিরেও সহ¯্রাধিক অবৈধ মাহেন্দ্র, ট্রলি, সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোগাড়ি চলাচল করে বলে জানান পটুয়খালী সেতুর টোল আদায় কর্তৃপক্ষ।

গত দের মাস ধরে বিরামহীন বর্ষণে সড়কের পিচ নড়বড়ে হয়ে গেছে। ওই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন অন্তত দুই হাজার যানবাহন চলাচল করছে। গাড়ির চাকার চাপায় সড়কের পিচ ওঠে খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে যানবাহন চলাচল করতে সমস্যা হচ্ছে বলে জানান চালকরা। চালকরা জানান, ভারি বর্ষণে সড়কের পিচ নড়বড়ে হয়ে যাওয়ায় গাড়ির চাকায় নির্মাণ সামগ্রী উঠে খানাখন্দ হচ্ছে। খানাখন্দের কারণে প্রায়ই সড়কে ছোটখাট দুর্ঘটনা ঘটছে।

তাছাড়া সড়কে সময় নিয়ন্ত্রণ করে গাড়ি চালাতে পারছেন না চালকরা। পটুয়াখালী থেকে কুয়াকাটা থেকে দ্বিগুণ সময় গেলে যাচ্ছে। এতে যাত্রীদের যথেষ্ট সময় ব্যয় হচ্ছে। ফলে ভোগান্তিতে পরেছে আমতলী, তালতলী, কলাপাড়া, পর্যটক কেন্দ্র কুয়াকাটা ও মহিপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলের অন্তত ১০ লাখ মানুষ।  দ্রুত সড়ক সংস্কারের দাবি ভুক্তভোগীদের।
রবিবার সরেজমিনে দেখা গেছে,  পটুয়াখালী-কুয়াকাটা ৭১ কিলোমিটার সড়কের প্রায় স্থানেই ছোট ও মাঝারি ধরনের খানাখন্দ রয়েছে। প্রতি ৫০ গজ দূরে দূরে খানাখন্দ। আবার সড়কের এক এক স্থানে ডজনখানেক খানাখন্দ রয়েছে। সড়কের আমতলী চৌরাস্তা, মানিকঝুড়ি, শাখারিয়া, মহিষকাটা, চুনাখালী, সাহেববাড়ী, আমড়াগাছিয়া, পাটুখালী, বান্দ্রা ও পখিয়ায় মহাসড়ক জুড়েই রয়েছে খানাখন্দ।   
যাত্রী জিয়াউদ্দিন জুয়েল মৃধা, এনামুল হক ও রিপা বলেন, সড়কে খানাখন্দের কারনে পটুয়াখালী- কুয়াকাটার দুই ঘণ্টার পথ যেতে সময় লাগছে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা। তার ওপরে জীবনের ঝুঁকি তো রয়েছেই। দ্রুত সড়ক সংস্কার করা প্রয়োজন।   
শ্যামলী এনআর পরিবহনের চালক কেরামত আলী বলেন, সড়কে খানাখন্দের কারনে গাড়ি চালাতে সমস্যা হচ্ছে। সড়কে এত খানাখন্দ যে, গাড়ির স্টাডিং নিয়ন্ত্রণ করা খুবই কষ্টকর। 
তুহিন পরিবহন গাড়ির চালক কাওসার হাওলাদার বলেন, অবিরাম বৃষ্টির কারণে সড়কের পিচ নরবড়ে হয়ে গেছে। পিচ গাড়ির চাকার সঙ্গে উঠে যাচ্ছে। ফলে খানাখন্দের সৃষ্টি হচ্ছে।
পটুয়াখালী সেতুর টোল ইনচার্জ আল আমিন বলেন, এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৯ শতাধিক বৈধ যানবাহন চলাচল করে। তার বাইরে অবৈধ যানবাহন তো রয়েছেই। তিনি আরো বলেন, সড়কে যানবাহনের চাপ অনেক বেশি। 
আমতলী বাস মালিক সমিতির লাইন সম্পাদক অহিদুজ্জামান স্বজল মৃধা বলেন, পটুয়াখালী থেকে কুয়াকাটা যেতে সময় লাগে দুই ঘণ্টা ১০ মিনিট। সড়কে খানাখন্দ থাকায় এখন সময় লাগে সাড়ে তিন ঘন্টা। এতো সময় লাগায় যাত্রীদের সঙ্গে খারাপ সম্পর্ক সৃষ্টি হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, যাত্রীরা বিরক্ত হয়ে বাস উঠতে চাচ্ছে না। তারা বিকল্প পথে গন্তব্যে যাচ্ছেন। দ্রুত সড়ক সংস্কারের দাবি তার। 
পটুয়াখালী বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার ইমাম হোসেন নাশির বলেন, পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের বেহাল অবস্থা। সড়কের এ অবস্থার কারনে যাত্রী সেবা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। পর্যটক এলাকা কুয়াকাটায় ভ্রমণে আসাসহ দক্ষিণাণঞ্চলের অন্তত ১০ লাখ মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। 
বরগুনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কমারেশ বিশ্বাস বলেন, গত দের মাস ধরে অবিরাম বৃষ্টিতে সড়কের পিচ নড়বড়ে হয়ে গেছে। তার ওপর দিয়ে গাড়ি চলাচল করায় চাকার চাপে সড়ক  খানাখন্দ হয়েছে। প্রাথমিকভাবে মোবাইল টিম ওই খানাখন্দগুলো সংস্কার করছে। তিনি আরো বলেন, চলতি অর্থ বছরে বরাদ্দ পেলে পুরোদমে সংস্কার করা হবে।

প্যানেল হু

×