ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২

এবার নিষেধাজ্ঞা মানেই যুদ্ধ, ইরানের হুঁশিয়ারি

প্রকাশিত: ১৬:৪৬, ১৫ জুলাই ২০২৫

এবার নিষেধাজ্ঞা মানেই যুদ্ধ, ইরানের হুঁশিয়ারি

ছবিঃ সংগৃহীত

বিপদজনক এক কূটনৈতিক খেলায় নতুন করে উত্তাপ ছড়াচ্ছে ইরান ও ইউরোপের সম্পর্ক। যদি চুক্তি ভাঙেন তবে সম্পর্ক ভাঙবে। ইরান স্পষ্ট করে বলছে—আবার যদি ‘স্ন্যাপব্যাক’ নামে পুরনো নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়, তবে এই অঞ্চলে কূটনীতি নয়, শুরু হবে নতুন বাস্তবতা। দ্বিধাহীন ভাষায় তেহরান জানিয়ে দিয়েছে—আর কোনও যুক্তিভিত্তিক প্রতারণা নয়, এবার কূটনৈতিক প্রতিরোধের যুগ।

সাম্প্রতিক তেহরানে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মুখোমুখী হলেন দেশ-বিদেশী কূটনীতিকেরা। আর ঠিক সেখানেই ইরানি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাই স্পষ্ট জানিয়ে দেন, স্ন্যাপব্যাক মেকানিজমের নামে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করা হলে তেহরান আর বসে থাকবে না।

ফরাসি কূটনৈতিক সূত্র অনুসারে, ইউরোপীয় দেশগুলো এখন নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারমাণবিক চুক্তিতে দ্রুত পৌঁছাতে ব্যর্থ হলে তারা জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা ফিরিয়ে আনতে পারে। এবং ঠিক এখানেই শুরু হয় উত্তেজনার সূত্রপাত।

২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত ‘জয়েন্ট কম্প্রিহেন্সিভ প্ল্যান অফ অ্যাকশন’ অর্থাৎ জেসিপিওএ এক চুক্তি, যা পারমাণবিক সীমাবদ্ধতার বিনিময়ে তুলে নিয়েছিল আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু এখন সেই চুক্তিরই একটি গোপন অস্ত্র—স্ন্যাপব্যাক মেকানিজম—ফেরানোর হুমকি দিচ্ছে ইউরোপ।

ইরান বলছে, এই হুমকির আইনি ভিত্তি নেই, রাজনৈতিক ভিত্তিও নেই। এবং যদি তারা এ পথে যায়, তা হবে ইরান ও ইউরোপের কূটনৈতিক সম্পর্কের ইতিহাসের সবচেয়ে অন্ধকার সময়।

ইসমাইল বাঘাই জানান, তারা নিজেদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে। এখন আবার সেই চুক্তিকে হাতিয়ার বানাতে চাইছে। কিন্তু এবার ইরানের জবাব হবে—কঠোর, সমুচিত এবং সময় উপযোগী।

তিনি আরো বলেন, ইরানের পরমাণু কার্যক্রম শান্তিপূর্ণ। তাদের অধিকার তারা ছাড়বে না। চাপ এলে সম্পর্ক ছিন্ন হবে।

২০১৮ সালে ট্রাম্প প্রশাসন একতরফাভাবে চুক্তি থেকে সরে গিয়েছিল। এরপর থেকেই জেসিপিওএর ভবিষ্যৎ ছিল অনিশ্চিত।

গত মাসে ইসরাইলের হামলায় ইরানের পারমাণবিক, সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনায় যে ক্ষতি হয়েছে, তার প্রতিক্রিয়ায় তেহরান এখন অনেক বেশি সংবেদনশীল। অবশ্য যুদ্ধবিরতির পর যুক্তরাষ্ট্র মধ্যস্থতায় ফের আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিল।

কিন্তু এখন নিষেধাজ্ঞার হুমকির মধ্যে ইরান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে—আলোচনা হবে, তবে তাদের শর্তে। পারমাণবিক কর্মসূচির বাইরে আর কিছু নয়।

এছাড়াও এক প্রশ্নে বাঘাই জানান, স্টে উইটক ও আব্বাস আরাকচির মধ্যে আলোচনা হবে কিনা তা এখনো অনিশ্চিত। কারণ স্ন্যাপব্যাকের হুমকি দিয়ে সংলাপ টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়।

সব মশার বিরুদ্ধে সুরক্ষা দিতে এল বসুন্ধরা এক্সট্রিম। মশার বিরুদ্ধে এক্সট্রিম সুরক্ষা।

স্ন্যাপব্যাক এখন কেবল একটি নীতিগত প্রশ্ন নয়, বরং এটি হয়ে উঠেছে সম্মান ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন। ইরানের বার্তা স্পষ্ট—আর তা হলো: সংলাপ চাইলে সম্মান দেখিয়ে আসুক, নয়তো এই অঞ্চলে সম্পর্ক নয়, প্রতিরোধই হবে নতুন রাজনীতি।

কূটনীতি আর চাপ—এই দুইয়ের ভারসাম্য এখন আর টানাটানির জায়গায় নেই। সময় এসেছে স্পষ্ট সিদ্ধান্তের। যুক্তিরক্ষা না সম্পর্ক উচ্ছিন্ন—এমন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে তেহরান, যেখানে পরবর্তী শব্দ প্রতিক্রিয়া নয়, হতে চলেছে পরিবর্তন।
 

তথ্যসূত্রঃ https://youtu.be/_7VO8bzqa1s?si=fAjwGBX_I7DFjDfh

 

মারিয়া

×