
ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্র নতুন এক অদ্ভুত কিন্তু বিজ্ঞানসম্মত পরিকল্পনায় নেমেছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী আকাশ থেকে শত শত কোটি মাছি ফেলা হবে। প্রথমে শুনতে অস্বাভাবিক মনে হলেও, এটি দেশটির পশুসম্পদ খাতকে রক্ষা করার একটি কৌশল। ভয়াবহ এক পরজীবী পোকা ‘নিউ ওয়ার্ল্ড স্ক্রুওয়ার্ম’ এর বিস্তার ঠেকাতেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এই স্ক্রুওয়ার্ম একটি মেটালিক রঙের মাছির লার্ভা। এটি জীবন্ত গবাদিপশুর ক্ষতের ভেতর ডিম পাড়ে এবং বাচ্চাগুলো পশুর দেহের মাংস খেয়ে বড় হয়। কয়েকদিনেই প্রাণীটি মারা যেতে পারে। একে ডাকা হয় “ফ্লেশ-ইটিং ম্যাগট” বা মাংসখেকো কীট।
সেন্ট্রাল আমেরিকায় ২০২৩ সাল থেকে ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়ছে এই পোকা। ইতিমধ্যেই পানামা, কোস্টা রিকা, হন্ডুরাস, গুয়াতেমালা ও মেক্সিকো-এ লাখ লাখ গবাদিপশু আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্ত প্রাণীর ৮৩% হচ্ছে গরু।
যুক্তরাষ্ট্র ১৯৬০-এর দশকে এই মাছি দমনে এক অভিনব পদ্ধতি ব্যবহার করেছিল—পুরুষ মাছিকে গামা রশ্মি দিয়ে বন্ধ্যা করে আকাশ থেকে ফেলা হয়। স্ত্রী মাছিরা জীবনে একবারই মিলিত হয়, ফলে বন্ধ্যা পুরুষদের সঙ্গে মিলনের ফলে নতুন বাচ্চা আর জন্মায় না। ধীরে ধীরে পুরো প্রজাতি বিলুপ্ত হয়।
আবার সেই কৌশলই ব্যবহার করছে USDA (United States Department of Agriculture)। এজন্য টেক্সাস-মেক্সিকো সীমান্তে $৩০০ মিলিয়ন বাজেটে একটি ‘ফ্লাই ফ্যাক্টরি’ তৈরি করা হচ্ছে, যেখান থেকে প্রতি সপ্তাহে ১০০ মিলিয়ন বন্ধ্যা মাছি ছড়ানো হবে।
টেক্সাস এএন্ডএম বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব প্রধান জানান, এটি এক নিরাপদ ও কার্যকরী কৌশল। গামা রশ্মি মানুষের বা প্রাণীর জন্য ক্ষতিকর নয়। এই মাছি শহরে যায় না, কারণ তারা শুধু পশুর ক্ষতের সন্ধানে গ্রামীণ এলাকায় বিচরণ করে।
পুরো প্রকল্পের খরচ পড়বে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলার, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ১০ বিলিয়ন ডলারের গবাদিপশু শিল্পকে বাঁচাতে এটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। ইতিমধ্যেই মেক্সিকোর কিছু বন্দর খুলে দেওয়া হয়েছে, কারণ ফ্লাই-ড্রপে ইতিবাচক অগ্রগতি মিলেছে।
মুমু ২