ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৩ জুন ২০২৫, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

যেভাবে মোদির বিপদ বেড়েই চলছে

প্রকাশিত: ১৮:০৬, ১১ জুন ২০২৫

যেভাবে মোদির বিপদ বেড়েই চলছে

ছবি: সংগৃহীত।

ভারতের মণিপুর রাজ্যে ফের দাঙ্গা-সহিংসতার আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। রাজ্যের সবচেয়ে প্রভাবশালী নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী ‘মেইতেই’-র এক সদস্যসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তারের পর নতুন করে অশান্ত হয়ে উঠেছে পরিস্থিতি। রবিবার রাত থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়ায়, মশাল মিছিল, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ, এমনকি সরকারি দপ্তরে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে।

পূর্ব ইমফল জেলার মহকুমা শাসকের কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। ভবনটি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও অগ্নিসংযোগকারী দুষ্কৃতিকারীদের এখনো শনাক্ত করা যায়নি। ঘটনাস্থলে বাড়তি নিরাপত্তা মোতায়েন করা হয়েছে।

পূর্ব ইমফলের ওয়াংখেই ইয়াইরিপোক ও খুড়াই এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে তীব্র সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করলে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে। পশ্চিম ইমফলের কাকেইথেল ও সিংজাম এলাকাতেও একই ধরনের সংঘর্ষ ঘটে। সেখানে কাঁদানে গ্যাসের পাশাপাশি রাবার বুলেটও ব্যবহার করে নিরাপত্তা বাহিনী।

সোমবার সকালেও ইমফলের বিভিন্ন রাস্তায় পোড়া টায়ার পড়ে থাকতে দেখা যায়, যেগুলো থেকে তখনো ধোঁয়া উঠছিল। কিছু এলাকায় মাটির ঢিবি তৈরি করে পুলিশি অভিযান ঠেকানোর চেষ্টা করে বিক্ষোভকারীরা। সেকমাই ও কৈরেঙ্গে এলাকায় এমন চিত্র দেখা গেছে। পরিস্থিতি সম্পর্কে মণিপুর পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, ‘‘রাজ্যে উত্তেজনা এখনো অব্যাহত। অনেক স্থানে বাঁশ ও মাটি দিয়ে রাস্তাঘাট অবরোধ করা হয়েছে।’’

ইমফল বিমানবন্দরের দিকে যাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতেও নিরাপত্তা বাহিনী টহল জোরদার করেছে। এর আগে শনিবার মেইতেই গোষ্ঠীর সংগঠন ‘আরামবাই টেঙ্গোল’-এর এক কমান্ডোসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এনআইএ (NIA) ও সিবিআই (CBI)। এর পর থেকেই রাজ্যজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

সোমবার মণিপুর পুলিশ জানায়, ইমফল থেকে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন সাবেক পুলিশ সদস্য অসীম কানন সিং। তার বিরুদ্ধে অস্ত্রপাচারসহ একাধিক গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়াও ২০২৩ সালের ১৭ জানুয়ারি পুলিশের উপর হামলার মামলায় এনআইএ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে, যাদের মধ্যে দুইজন কুকি বিদ্রোহী সংগঠনের সদস্য বলে দাবি পুলিশের।

এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে মণিপুর সরকার বাসিন্দাদের সহিংসতায় না জড়াতে আহ্বান জানিয়েছে। উল্লেখ্য, গত দুই বছর ধরে মেইতেই ও কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে চলমান জাতিগত সংঘাতে এখন পর্যন্ত ২২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় ৬০ হাজার মানুষ।

নুসরাত

আরো পড়ুন  

×