
ছবি: সংগৃহীত
অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং উপপ্রধানমন্ত্রী রিচার্ড মার্লেস শনিবার সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিতব্য আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সম্মেলন শাংগ্রি-লা ডায়ালগে বিশ্বের সামনে একটি গুরুতর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করতে যাচ্ছেন। তিনি বলবেন, ইউরোপ ও এশিয়ায় পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তারের একটি নতুন, ভয়াবহ চক্র শুরু হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে—যা সৃষ্টি হয়েছে চীনের অস্বাভাবিক পারমাণবিক আধুনিকীকরণ, রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার পারস্পরিক কৌশলগত সংযোগ এবং অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তির অবসানের ফলে।
মার্লেস তাঁর ভাষণে উল্লেখ করবেন, ঠান্ডা যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ের অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ছিল মূলত সংখ্যাগত সীমা, ওয়ারহেডের ধরন এবং অস্ত্র পরিবহণের পদ্ধতি নির্ধারণে কেন্দ্রীভূত। কিন্তু বর্তমান বিশ্বে যেখানে মহাকাশে অস্ত্রায়ন, সাইবার আক্রমণ ও স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের সঙ্গে পারমাণবিক সমন্বয়ের সক্ষমতা বাড়ছে, সেখানে সেই পুরনো কাঠামো আর উপযোগী নয়।
চীনের কার্যক্রম উদ্বেগজনক
তিনি বলেন, চীন এমন এক গতিতে পারমাণবিক অস্ত্র উন্নয়ন করছে, যার উদ্দেশ্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমতা অর্জন করা, এমনকি তাকে ছাড়িয়ে যাওয়া। এটাই প্রমাণ করে, ভবিষ্যতের কৌশলগত অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাকে পুনর্জীবিত করা এখন সময়ের দাবি।
রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার সম্পর্ক নিয়ে শঙ্কা
রাশিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে মার্লেস বলেন, তারা ইউক্রেন যুদ্ধের সময় পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দিয়েছে, অথচ ইউক্রেন বহু আগেই তার পারমাণবিক অস্ত্র পরিত্যাগ করেছিল। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, রাশিয়া যদি সত্যিই উত্তর কোরিয়াকে পারমাণবিক প্রযুক্তি হস্তান্তর করে, তবে তা দক্ষিণ কোরিয়ার নিরাপত্তার ওপর ভয়াবহ চাপ সৃষ্টি করবে।
‘নতুন সাম্রাজ্যবাদ’-এর যুগ
আমরা এখন এমন এক সময়ে প্রবেশ করেছি, যেখানে বৈশ্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গিয়ে নতুন করে পারমাণবিক প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন রাষ্ট্র নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য আবারও পারমাণবিক অস্ত্রে ঝুঁকছে,—মার্লেসের ভাষণের খসড়ায় এমনই বলা হয়েছে।
AUKUS ও অস্ট্রেলিয়ার অবস্থান
অস্ট্রেলিয়া যে পারমাণবিক শক্তিচালিত (কিন্তু প্রচলিত অস্ত্রসজ্জিত) সাবমেরিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে AUKUS চুক্তির আওতায় পাচ্ছে, তা নিয়ে সমালোচনার জবাবে তিনি বলেন, এই সাবমেরিনগুলো জাতিসংঘের পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি (NPT) মেনেই তৈরি হচ্ছে। এতে কোনো ধরনের অস্ত্রবিরোধী আইন লঙ্ঘন হচ্ছে না।
শাংগ্রি-লা ডায়ালগে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী, সামরিক ও কূটনৈতিক প্রতিনিধি এবং নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা অংশ নিচ্ছেন। এবারের সম্মেলন ৩০ মে থেকে ১ জুন পর্যন্ত সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
ফরিদ