
ছবিঃ সংগৃহীত
এক মার্কিন ফেডারেল বিচারক একটি গুরুত্বপূর্ণ আদেশ জারি করেছেন যা ট্রাম্প প্রশাসনকে বিদেশি শিক্ষার্থীদের যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা ও কাজ করার বৈধ মর্যাদা বাতিল করতে বাধা দিচ্ছে।
বৃহস্পতিবার, ক্যালিফোর্নিয়ার অকল্যান্ডে ইউএস ডিস্ট্রিক্ট জাজ জেফরি হোয়াইট একটি দেশব্যাপী আদেশ জারি করেন। এই আদেশে বলা হয়েছে, প্রশাসন যেন কোনও বিদেশি শিক্ষার্থীর আইনি মর্যাদা বাতিল করার আগে ব্যক্তিগতভাবে প্রতিটি কেস পর্যালোচনা করে এবং যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল আইনে নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে।
এর আগে, ট্রাম্প প্রশাসন হাজার হাজার বিদেশি শিক্ষার্থীর রেকর্ড স্টুডেন্ট অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ভিজিটর ইনফরমেশন সিস্টেম (SEVIS) থেকে বাতিল করে দেয়। প্রশাসনের দাবি ছিল, তারা অপরাধে জড়িত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে।
হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের মুখপাত্র ট্রিসিয়া ম্যাকলাফলিন বলেন, “এই আদেশ ন্যায়বিচারকে বিলম্বিত করছে এবং প্রেসিডেন্টের সাংবিধানিক ক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করছে।” তিনি আরও বলেন, “আমরা শিক্ষার্থী ভিসা ব্যবস্থায় সাধারণ বোধ ফিরিয়ে আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং আশা করছি উচ্চতর আদালত আমাদের পক্ষে রায় দেবে।”
একই দিনে, ট্রাম্প প্রশাসন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়কে স্টুডেন্ট অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ভিজিটর ইনফরমেশন প্রোগ্রাম (SEVP) সার্টিফিকেশন বাতিলের নোটিশ দেয়। এর ফলে হার্ভার্ড নতুন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারবে না। যদিও বিচারক হোয়াইটের আদেশ ব্যক্তিগত শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য নয়। হার্ভার্ড এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শুক্রবার মামলা করেছে।
SEVIS রেকর্ড বাতিলের অর্থ হচ্ছে শিক্ষার্থীরা আর বৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করতে পারবে না। এর ফলে তারা গ্রেপ্তার, আটক বা এমনকি নির্বাসনের ঝুঁকিতে পড়েন।
গত মাসে, আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে মার্কিন কর্তৃপক্ষ হাজার হাজার শিক্ষার্থীর বাতিলকৃত মর্যাদা পুনর্বহাল করে। কিন্তু বিচারক হোয়াইট বলেন, প্রশাসন বিচারের আওতা এড়াতে ইচ্ছাকৃতভাবে অবস্থান পরিবর্তন করছে। তিনি মন্তব্য করেন, “এই হুইসেল মারামারির খেলা কখন শেষ হবে তা অনিশ্চিত, যদি না আদালত বাধা দেয়।”
হোয়াইট বলেন, যেসব শিক্ষার্থী মামলা করেছেন, তাদের অবস্থান বাতিল ‘ইচ্ছাকৃত ও খামখেয়ালি’ ছিল বলেই মনে হচ্ছে। আদালতের আদেশ অনুযায়ী, মামলা চলাকালীন এই শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার, আটক বা অন্য কোনো আইনগত ক্ষতির সম্মুখীন করা যাবে না।
এই রায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বড় স্বস্তির বার্তা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, বিশেষ করে যাঁরা যুক্তরাষ্ট্রে পড়ালেখা ও পেশাগত উন্নয়নের জন্য এসেছেন। এখন দেখার বিষয় উচ্চ আদালত কী সিদ্ধান্ত দেয়।
নোভা