
ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জানিয়েছে, ইসরায়েল ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোর ওপর সামরিক হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে- এমন সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
মঙ্গলবার (২০ মে) সিএনএন প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি ইসরায়েলি সামরিক তৎপরতা যেমন অস্ত্র সরানো ও আকাশ মহড়া চালানো ইত্যাদির ভিত্তিতে এই মূল্যায়ন করা হয়েছে। যদিও এখনও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি, মার্কিন কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন, এই পদক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্যে আরও বৃহত্তর সংঘাতের সম্ভাবনা সৃষ্টি করতে পারে।
এই ঘটনাপ্রবাহের পেছনে রয়েছে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির সাম্প্রতিক বক্তব্য, যেখানে তিনি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ করার মার্কিন দাবি প্রত্যাখ্যান করে একে “অযৌক্তিক” বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ইরানের পরমাণু কর্মসূচি তার অধিকার অনুযায়ী চলছে এবং এটি পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি (এনপিটি) অনুসারে বৈধ।
ইসরায়েলি কর্মকর্তারা ইঙ্গিত দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে যেকোনো দুর্বল বা “খারাপ” চুক্তি হলে তারা এককভাবে পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। এক ইসরায়েলি সূত্র সিএনএনকে জানায়, “যদি যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সঙ্গে খারাপ চুক্তি করে, তাহলে ইসরায়েল একাই পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।” তবে মার্কিন গোয়েন্দা মূল্যায়নে বলা হয়েছে, ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা ছাড়া-বিশেষ করে মাঝআকাশে জ্বালানি সরবরাহ ও ‘বাংকার বাস্টিং’ বোমার সহায়তা ছাড়া-ইরানের পরমাণু স্থাপনায় পূর্ণাঙ্গ হামলা চালানোর সক্ষমতা রাখে না।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কূটনৈতিক সমাধানকেই অগ্রাধিকার দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “আমি ওদের ওপর বোমা ফেলতে চাই না, চাই ওরা চুক্তিতে আসুক।” তবে ট্রাম্প সতর্ক করে বলেন, ইরান যদি চুক্তিতে না আসে, তাহলে সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণ করাও একটি সম্ভাবনা। ট্রাম্প প্রশাসন এমন একটি চুক্তির পক্ষে কাজ করছে, যাতে ইরান বেসামরিক উদ্দেশ্যে পারমাণবিক শক্তি ব্যবহার করতে পারে, তবে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ করতে পারবে না।
এই কূটনৈতিক উদ্যোগের পাশাপাশি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দেশীয় রাজনৈতিক চাপের মুখে রয়েছেন-যা তাকে ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে বাধা দিতে জোরালো অবস্থান নিতে বাধ্য করছে। নেতানিয়াহু বলেছেন, যেকোনো চুক্তির ফলে ইরানের পরমাণু কর্মসূচির পূর্ণাঙ্গ অবসান ঘটাতে হবে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নেতানিয়াহুর সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানকে প্রভাবিত করতে পারে।
বর্তমান পরিস্থিতি অতি জটিল ও সংবেদনশীল। একদিকে কূটনৈতিক আলোচনা চলছে, অন্যদিকে সামরিক প্রস্তুতি জোরদার হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গভীরভাবে নজর রাখছে কারণ এই অঞ্চলে যেকোনো সামরিক পদক্ষেপ গোটা বিশ্বে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
সূত্র: https://surl.li/jnowma
মিরাজ খান