ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২১ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের অবস্থান তুলে ধরতে বৈশ্বিক কূটনৈতিক সফরে এমপি ও কর্মকর্তারা

প্রকাশিত: ০৮:৩৭, ২১ মে ২০২৫; আপডেট: ০৮:৩৭, ২১ মে ২০২৫

সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের অবস্থান তুলে ধরতে বৈশ্বিক কূটনৈতিক সফরে এমপি ও কর্মকর্তারা

ছবি:সংগৃহীত

অপারেশন সিন্দুর-এর পর সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের দৃঢ় অবস্থান তুলে ধরতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শুরু হয়েছে ইতিহাসের অন্যতম বৃহৎ কূটনৈতিক প্রচারণা। এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে ভারতীয় সংসদ সদস্য, সরকারি শীর্ষ কর্মকর্তা ও প্রাক্তন কূটনীতিকদের সাতটি বহুদলীয় প্রতিনিধিদল আজ (২১ মে) থেকে বিভিন্ন দেশের রাজধানী সফরে রওনা দিয়েছেন। লক্ষ্য একটাই, বিশ্ববাসীর সামনে ভারতের শূন্য-সহনশীলতা নীতির বার্তা স্পষ্টভাবে তুলে ধরা এবং পাকিস্তানের সন্ত্রাস সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ তুলে ধরা।

 

 

প্রথম দুটি দল আজই জাপান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে রওনা দিয়েছে। বাকি পাঁচটি দলও আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বিশ্বের ৩২টি রাজধানী ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন সফরে যাবেন। এদের মধ্যে তৃতীয় প্রতিনিধিদল, জনতা দল (ইউ)-এর সংসদ সদস্য সঞ্জয় ঝার নেতৃত্বে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া এবং মালয়েশিয়া সফর করবে। এই দলে রয়েছেন বিজেপির অপরাজিতা সারাঙ্গি, তৃণমূলের অভিষেক ব্যানার্জি, সিপিআই(এম)-এর জন ব্রিট্টাস, কংগ্রেস নেতা সালমান খুরশিদ এবং প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত মোহন কুমারসহ আরও কয়েকজন সংসদ সদস্য।

অন্যদিকে, দ্বিতীয় প্রতিনিধিদলটি শিবসেনা সাংসদ শ্রিকান্ত শিন্ডের নেতৃত্বে ইউএই সফরে যাচ্ছে। এ দলে রয়েছেন বিজেপির বানসুরি স্বরাজ, আইইউএমএলের ই.টি. মোহাম্মদ বশীর, বিজেডির সস্মিত পাত্র, প্রাক্তন কূটনীতিক সুজন চিনয়সহ কয়েকজন প্রভাবশালী সংসদ সদস্য। চতুর্থ দলের সফরসূচিতে রয়েছে ইউএই, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো, সিয়েরা লিওন ও লাইবেরিয়া। যাত্রার আগে পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি প্রতিনিধিদলগুলোকে ব্রিফ করেন এবং পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদে ভূমিকা ও ভারত সরকারের কঠোর পদক্ষেপের বিষয়টি তুলে ধরেন।

 

সঞ্জয় ঝা বলেন, বিশ্বের সামনে ভারতের বার্তা হবে: “এবার যথেষ্ট হয়েছে”। পাকিস্তানকে আর বিশ্বাস করা যাবে না, কারণ তারা নিজের অপরাধে নিজেই তদন্তকারী সেজেছে। শ্রিকান্ত শিন্ডে জানান, তারা আন্তর্জাতিক মহলে পাকিস্তানের সন্ত্রাস সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ তুলে ধরবেন এবং জানাবেন যে, এই অপরাধ শুধু ভারতের বিরুদ্ধে নয়, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ।

এই সাতটি প্রতিনিধিদলে ৫১ জন সংসদ সদস্য ও কূটনীতিক রয়েছেন, যারা বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ও গণমাধ্যমের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। অন্যান্য দলের মধ্যে রয়েছেন বিজেপির বিজয়ন্ত জয় পাণ্ডা (মধ্যপ্রাচ্য সফর), রবিশঙ্কর প্রসাদ (ইউরোপ সফর), কংগ্রেসের শশী থারুর (লাতিন আমেরিকা ও যুক্তরাষ্ট্র), ডিএমকে’র কানিমোঝি (রাশিয়া ও পূর্ব ইউরোপ) এবং এনসিপি (এসপি) এমপি সুপ্রিয়া সুলে (আফ্রিকা ও মিশর)।

প্রসঙ্গত, ৭ মে ভারত পাকিস্তান ও পিওকে-তে সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটি লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায়, যাতে লস্কর ও জইশের অন্তত ৯টি ঘাঁটি ধ্বংস হয়। এই হামলার পেছনে কারণ ছিল ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পাহেলগামে হিন্দু তীর্থযাত্রীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা, যাতে ২৬ জন নিহত হন। হামলার পরবর্তী তিন দিন দুই দেশের মধ্যে সীমান্তে সংঘর্ষ হয় এবং ১০ মে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।

এই কূটনৈতিক সফরের মাধ্যমে ভারত বিশ্বকে জানাতে চায় যে, সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে দেশটির অবস্থান আর নরম নয়, ভারত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কঠোর এবং একতাবদ্ধ।

আঁখি

×