ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১০ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২

বাংলাদেশ সীমান্তে কড়া প্রহরা! বাঙলাকে সতর্ক থাকার নির্দেশনা জারি মমতার

প্রকাশিত: ০৮:২২, ১০ মে ২০২৫; আপডেট: ০৮:২৩, ১০ মে ২০২৫

বাংলাদেশ সীমান্তে কড়া প্রহরা! বাঙলাকে সতর্ক থাকার নির্দেশনা জারি মমতার

ছবিঃ সংগৃহীত

ভারতের পাকিস্তান এবং পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীর (POK) লক্ষ্য করে সামরিক হামলার পর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি রাজ্যকে উচ্চ সতর্ক অবস্থায় রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই পদক্ষেপটি তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে যোগ দেওয়ার পর নেন, যেখানে দেশের অন্যান্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।

রাজ্যজুড়ে প্রস্তুতি এবং সতর্কতা

মমতা তার নির্দেশনায় রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করার পাশাপাশি রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় জরুরি প্রস্তুতি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এর অংশ হিসেবে ১১টি জেলায় ৩২টি স্থানে যুদ্ধকালীন প্রস্তুতির জন্য mock drill (অনুশীলন) অনুষ্ঠিত হয়েছে, যাতে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে সব জরুরি সেবা ব্যবস্থা তৎপর থাকে।

মমতা বলেন, “পুলিশ এবং জেলা ম্যাজিস্ট্রেটরা সতর্ক রয়েছেন,” এবং আরও যোগ করেন, “সব সরকারি ছুটি বাতিল করা হয়েছে।” রাজ্য সরকার উত্তরবঙ্গসহ সীমানা ঘেঁষা এলাকায় বিশেষভাবে সতর্ক অবস্থায় রেখেছে, যেখানে ২৪ ঘণ্টা কন্ট্রোল রুম চালু থাকবে।

স্কুলগুলো ইতিমধ্যেই গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে চলে গেছে, তবে মমতা বেসরকারি স্কুলগুলোকে একইভাবে বন্ধ রাখার জন্য অনুরোধ করেছেন।

বাংলার ঐতিহাসিক নিরাপত্তা এবং ঐক্য

মমতা বাংলার ঐতিহাসিক ভূমিকা তুলে ধরে বলেন, “বাংলা সবসময় দেশটির জন্য ত্যাগ করেছে। আমরা আমাদের দেশকে ভালোবাসি এবং আমাদের সতর্ক থাকতে হবে কারণ আমাদের প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে।” তিনি আরও জানান, রাজ্য সরকারের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী দেশ রক্ষায় একযোগে কাজ করবেন।

বাংলাদেশের চিন্তা ও সতর্কতা

বাংলাদেশও ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের উত্তেজনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ, যা পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবর্তী দেশ, তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানে হামলার পর দ্রুত উত্তেজনা প্রশমিত করার আহ্বান জানিয়েছে। তারা বলেছে, “বাংলাদেশ শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য উভয় দেশের মধ্যে সংযমের প্রতি আহ্বান জানায় এবং কূটনৈতিকভাবে সমস্যার সমাধান চায়।”

বাংলাদেশের এই উদ্বেগের কারণ শুধু রাজনৈতিক নয়, কারণ ভারত-পাকিস্তানের উত্তেজনা গোটা অঞ্চলের অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে, যা বাণিজ্য, অভিবাসন এবং সীমান্ত ব্যবস্থাপনাকে প্রভাবিত করে, যা সরাসরি বাংলাদেশকেও প্রভাবিত করতে পারে।

মমতার মিডিয়া সতর্কতা

মমতা মিডিয়াকেও দায়িত্বশীল আচরণের পরামর্শ দিয়েছেন, বিশেষ করে এমন সময়ে যখন উত্তেজনা তুঙ্গে। তিনি সংবাদমাধ্যমকে মিথ্যা তথ্য প্রচার থেকে বিরত থাকতে সতর্ক করেছেন এবং বলেন, “এটা আমাদের দেশের জন্য একটি সংকটময় সময়, তাই মিডিয়া এমন কোনো খবর প্রচার করবে না যা মানুষের মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে।” তিনি আরও বলেন, “এটা TRP বাড়ানোর সময় নয়, এটা দেশের জন্য দাঁড়ানোর সময়। টিভি চ্যানেলগুলো যেন দায়িত্বশীল মন্তব্য না করে।”

একটি অস্থির পরিস্থিতি

মমতার এই পদক্ষেপটি আসছে পাকিস্তান-ভারত সম্পর্কের মধ্যে বাড়তে থাকা উত্তেজনার মধ্যে। বাংলাদেশের মতো প্রতিবেশী দেশগুলোও পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে, কারণ একে অপরের মধ্যে উত্তেজনা গোটা অঞ্চলের জন্য বিপদজনক হতে পারে।

এভাবেই, মমতা পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে একত্রিত হতে এবং সতর্ক থাকতে বলেছেন, এবং রাজ্যকে প্রস্তুত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন, কারণ পরিস্থিতি এখনও বেশ অস্থির এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে উদ্বেগ অব্যাহত।

মারিয়া

×