ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ৯ কার্তিক ১৪৩১

দক্ষিণ গাজায় আটকা ১০ লাখ ফিলিস্তিনি

প্রকাশিত: ২১:১২, ১৫ জুন ২০২৪

দক্ষিণ গাজায় আটকা ১০ লাখ ফিলিস্তিনি

.

ফিলিস্তিনের গাজার দক্ষিণাঞ্চলে ১০ লাখের বেশি বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি আটকা পড়েছেন। সেখানে তারা একদিকে যেমন চরম বিশুদ্ধ পানির অভাবে ভুগছেন, তেমনি নেই স্যানিটেশনের ব্যবস্থাও। শনিবার জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির উপ-নির্বাহী পরিচালক কার্ল স্কাউ তথ্য জানিয়েছেন। ইসরাইলি হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও অন্তত ২৫ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আহত হয়েছেন ৩০ জন। ইসরাইলি হামলায় এখন পর্যন্ত মোট ৩৭ হাজার ২৬৬ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৮৫ হাজার ১০৩ জন। খবর আলজাজিরার।

এদিকে বেশিরভাগ ইসরাইলিই আর বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চায় না। বদলে যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা থেকে সদ্য পদত্যাগ করা বেনি গান্তজকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চায় তারা। নতুন এক জরিপে এমন তথ্যই উঠে এসেছে। অন্যদিকে গাজায় অনাহারে থাকা মানুষদের জন্য নিয়ে যাওয়া মানবিক ত্রাণের বহরে হামলার জেরে ইসরাইলের একটি সংগঠনেরওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আট মাসের বেশি সময় ধরে চলা ইসরাইলি বর্বরতায় চরম মানবিক সংকটের মুখে নিরীহ গাজাবাসী। কিছুতেই যেন থামছে না মৃত্যুর মিছিল। জাতিসংঘে পাস হওয়া যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব যেন কাগজে কলমেই থেমে রয়েছে। বিশ্ববাসীর তোপের মুখে পড়েও নিজেদের সিদ্ধান্তে অটল নেতানিয়াহু প্রশাসন। এদিকে নিরাপদ খাদ্য, পানি জ্বালানি সংকটে চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে ফিলিস্তিনিরা। অপুষ্টিতে ভুগে এবং ক্ষুধার জ্বলায় এরইমধ্যে বেশ কয়েকটি শিশু মারা গেছে। এখনো মৃত্যু ঝুঁকিতে রয়েছে ২০০টিরও বেশি শিশু। রাফাহতে অভিযান চলার কারণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে ত্রাণ সরবরাহ। ইসরাইলের অবরোধের কারণে গাজায় বিনা চিকিৎসায় ফিলিস্তিনের প্রথম অলিম্পিয়ানের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে হামাসের হাতে অবরুদ্ধ গাজায় শতাধিক ইসরাইলি জিম্মি আছে। তবে উপত্যকাটিতে চলমান ইসরাইলি হামলায় ঠিক কতজন জিম্মি জীবিত আছেন তা কেউ জানে না বলে জানিয়েছেন হামাসের শীর্ষ নেতা ওসামা হামদান।

অন্যদিকে এবার এডেন উপসাগরে একটি কার্গো জাহাজ লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা। দুটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে এই হামলা চালানো হয়। হামলায় জাহাজটির এক নাবিক মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে। ওই এলাকায় মোতায়েন মার্কিন বাহিনীর সদস্যরা তাকে উদ্ধার করেছে। মার্কিন সামরিক বাহিনী এমনটা জানিয়েছে। মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের (সেন্টকম) এক বিবৃতিতে বলা হয়, হুতিদের হামলায় পালাউয়ের পতাকাবাহী এম/ভি ভারবেনা নামের জাহাজটিতে আগুন ধরে যায়। এতে একজন বেসামরিক নাবিক গুরুতর আহত হয়। ইউক্রেনের মালিকানাধীন জাহাজটি ইতালিতে কাঠ নিয়ে যাচ্ছিল। পথে এডেন উপসাগরে হামলার মুখে পড়ে।  হুতিরা ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে লোহিত সাগর এডেন উপসাগরে ইসরাইল দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক আছে এমন দেশগুলোর বিভিন্ন জাহাজ লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে আসছে। জাতিসংঘের স্যাটেলাইট সেন্টারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গাজার ৭০০ মাইল রাস্তা ধ্বংস হয়ে গেছে। যা ভূখ-টির মোট সড়ক পথের ৬৫ শতাংশ। ৮৮ শতাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পুরোপুরি ভেঙে গেছে। নষ্ট হয়েছে ১৩০টি অ্যাম্বুলেন্স। ৮০ শতাংশ ব্যবসায়িক ভবন ধসে গেছে।

এদিকে সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হামাসের শীর্ষস্থানীয় নেতা ওসামা হামদান বলেছেন, গাজায় বর্তমানে এক শতাধিক ইসরাইলি জিম্মি আছেন। তাদের মধ্যে ৭০ জনের বেশি জিম্মি জীবিত থাকতে পারেন। তবে ঠিক কতজন এখনো জীবিত আছেন, তা কেউই  নিশ্চিতভাবে জানে না। গত সপ্তাহে ইসরাইলি বাহিনীর উদ্ধার করা চার জিম্মিকে আট মাসের বেশি বন্দি অবস্থায় থাকলেও তাদের নির্যাতন করা হয়নি বলে দাবি করেন তিনি। বাকি জিম্মিদের অবস্থা এখন ইসরাইল হামাসের মধ্যে সম্ভাব্য চুক্তির আলোচনার ওপর নির্ভর করছে। টানা আট মাস ধরে গাজায় চলমান ইসরাইলি হামলায় নিহত হয়েছে ৩৭ হাজার ফিলিস্তিনি।

 

×