বৈঠকে বসেছেন ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা।
ইরানের নজিরবিহীন হামলার জেরে কী জবাব দেওয়া হবে, তা নিয়ে আলোচনা করতে বৈঠকে বসেছেন ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা।
তবে ইরানকে জবাব দেওয়ার বিষয়ে ইসরায়েল কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে কি না, তা প্রকাশ করেনি ইসরায়েলি যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা।
১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইসরায়েল। এই হামলায় ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর বিদেশে কার্যক্রম পরিচালনাকারী কুদস ফোর্সের জ্যেষ্ঠ কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ রেজা জাহেদিসহ কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তা নিহত হন।
বদলা হিসেবে ইরান গত শনিবার রাতভর ইসরায়েলে শত শত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। ইরানের বেশির ভাগ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলি ভূখণ্ডে পৌঁছানোর আগেই ধ্বংস করা হয় বলে দাবি তেল আবিবের।
১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। তাতে ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) বিদেশে কার্যক্রম পরিচালনাকারী কুদস ফোর্সের জ্যেষ্ঠ কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ রেজা জাহেদিসহ কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তা নিহত হন। এ হামলার বদলা নেওয়ার ঘোষণা দেয় ইরান।
ইসরায়েলের মিত্ররা ইরানের হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তবে তারা এই হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকারকে সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছে।
যদিও ইরান ইঙ্গিত দিয়েছে, তারা মনে করছে, ইসরায়েলে প্রতিশোধমূলক হামলার মধ্য দিয়ে বিষয়টির রফাদফা হয়ে গেছে। তবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর চিফ অব স্টাফ বলেছেন, ইরানের হামলার জবাব দেওয়া হবে।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল হারজি হালেভি বলেন, তাঁরা সামনের দিকে তাকাচ্ছেন। তাঁরা সম্ভাব্য পদক্ষেপগুলো বিবেচনা করছেন। ইসরায়েলের ভূখণ্ড লক্ষ করে ইরান যে এতগুলো ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে, তার জবাব দেওয়া হবে।
ইরানের হামলার জবাবে ইসরায়েল ঠিক কী পদক্ষেপ নেবে, তা নির্দিষ্ট করেননি জেনারেল হারজি। তা ছাড়া কবে, কখন ইসরায়েল এই জবাব দেবে, তার কোনো সময়সীমা উল্লেখ করেননি তিনি।
মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) সাবেক প্রধান ডেভিড পেট্রাউস বিবিসি রেডিও ফোর-এর ওয়ার্ল্ড টুনাইট অনুষ্ঠানে বলেন, ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক হামলার মধ্য দিয়ে বিশ্ব অর্থনীতি ঝুঁকিতে পড়ুক, তা চায় না ওয়াশিংটন।
জেনারেল পেট্রাউস ইরাক ও আফগানিস্তানে আন্তর্জাতিক বাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেন, ইরানের হামলা ‘খুব বড় ঘটনা’। ঘটনাটি ইসরায়েলের জন্য কতটা তাৎপর্যপূর্ণ, তা পশ্চিমাদের বুঝতে হবে।
জেনারেল পেট্রাউসের মতো, এখন চ্যালেঞ্জ হলো, পরবর্তী করণীয় নিয়ে কিছুটা ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। যদি কোনো কারণে অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়ে যায় কিংবা উপসাগরীয় অঞ্চলে অবাধে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচলে কোনো ঝামেলা হয়। ইতিমধ্যে ইরান একটি তেলবাহী জাহাজ জব্দ করেছে, যা উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।
জেনারেল পেট্রাউস এখন অবসরে আছেন। তিনি বলেন, ইরানের হামলার জবাব কীভাবে দেওয়া যায়, তা নিয়ে ইসরায়েল সরকারের ভেতরে বিতর্ক চলছে। যা উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দেবে না, আবার তা ইসরায়েলি প্রতিরোধ সক্ষমতাকেও প্রদর্শন করবে।
জেনারেল পেট্রাউস বলেন, ইরানকে জবাব দেওয়ার ক্ষেত্রে এখন ইসরায়েলের সামনে বেশ কিছু অপ্রতিসম বিকল্প আছে। এগুলো এমন বিকল্প, যার মাধ্যমে উত্তেজনা না বাড়িয়েও জবাব দেওয়া যাবে।
বিবিসি
তাসমিম