ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৮ জুন ২০২৫, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২

যাজকদের যৌন নিপীড়নের শিকার সন্ন্যাসিনীরা

প্রকাশিত: ১০:০৫, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

যাজকদের যৌন নিপীড়নের শিকার সন্ন্যাসিনীরা

পোপ ফ্রান্সিস মঙ্গলবার বলেছেন, রোমান ক্যাথলিক গির্জাগুলো দীর্ঘদিন ধরে একটা সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এখানে সন্ন্যাসীরা প্রিস্ট, এমনকি বিশপদের যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে অব্যাহতভাবে। পোপ এই প্রথম প্রকাশ্যে বিষয়টা স্বীকার করলেন। খবর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। ভারত, আফ্রিকা ও ইতালিতে ক্যাথলিক সন্ন্যাসিনীরা সাম্প্রতিক যৌন নির্যাতনের অভিযোগ এনেছেন যাজকদের বিরুদ্ধে এবং ভ্যাটিকানের একটি ম্যাগাজিন গত সপ্তাহে লিখেছে, সন্ন্যাসিনীরা তার ফলে গর্ভপাত ঘটান বা যাজকদের সন্তান জন্ম দেন। কিন্তু ফ্রান্সিস এর আগে এ বিষয়টা কখনও উল্লেখ করেননি। তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রথম সফর শেষে মঙ্গলবার রোম ফেরার পথে তার বিমানে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রথমবারের মতো এ কথা বলেন। তিনি বলেন, বিষয়টা সত্য। প্রিস্ট ও বিশপরা এর সঙ্গে জড়িত। এ সমস্যা অব্যাহতভাবে বিরাজ করছে। ভ্যাটিকান এ সমস্যা সমাধানে কাজ করছে এবং কয়েকজন যাজককে অস্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ফ্রান্সিস বলেন, হ্যাঁ, আরও পদক্ষেপ নেয়া হবে। আমাদের সে ইচ্ছা আছে। কিন্তু আমরা শুরু করে দিয়েছি এর মধ্যেই প্রশ্নের উত্তরে ফ্রান্সিস তার পূর্বসূরি ষোড়ষ বেনিডিক্টকে স্মরণ করে বলেন, তিনি ছিলেন দৃঢ়ও অনমনীয় ব্যক্তি। তিনি এ প্রিস্টদের সরাতে চেষ্টা করেছেন, তিনি যৌন নিপীড়ন এবং এমনকি যৌন দাসত্ব অবসানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলেন। ফ্রান্সিস বলেন, তিনিও সন্ন্যাসিনীদের ওপর যাজকদের এ নির্যাতন অবসান উদ্যোগ গ্রহণে অগ্রসর হতে চান। তিনি বলেন, এ জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তিনি এ ইচ্ছাও প্রকাশ করেন যে, ভেনিজুয়েলায় দু’পক্ষ সম্মত থাকলে তিনি দেশটির রাজনৈতিক সঙ্কটে মধ্যস্থতা করবেন এবং তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতে তার ঐতিহাসিক সফর সম্পর্কেও কথা বলেন। কিন্তু ইয়েমেনে যুদ্ধে সংযুক্ত আরব আমিরাতের জড়িত থাকার বিষয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার আলোচনা বা চার্চে যৌন নিপীড়ন অবসানে তার প্রচেষ্টার বিষয়ে স্পষ্টভাবে কিছু জানাতে সাধারণত এড়িয়ে গেছেন তিনি। তিনি বলেন, তার স্বাগতিক দেশের অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে বিমূঢ় হয়ে পড়েননি। জেট ফাইটার গুরো তখন আকাশে বিকট শব্দ করছিল। আমি ধরে নিয়েছি আমাকে অভ্যর্থনা জানানোর সব ইঙ্গিত ও উদ্যোগ আমার প্রতি শুভেচ্ছারই প্রতীক। পোপের এ সফরের অধিকাংশটাই জুড়ে ছিল মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে আন্তঃধর্মীয় সংলাপ। তিনি এ বিষয়ও সুস্পষ্ট করেন যে, এ অঞ্চলে খ্রীস্টানদের ওপর নির্যাতন সম্পর্কে তিনি তার উদ্বেগ প্রকাশে সোচ্চার থেকেছেন অব্যাহতভাবে। মঙ্গলবার সকালের দিকে পোপ আবুধাবিতে জায়েদ স্পোর্টস সিটি স্টেডিয়ামে প্রায় ১ লাখ ৩৫ হাজার ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের উপস্থিতিতে গণ প্রার্থনা অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন ভারত। ফিলিপিন্স ও দক্ষিণ আমেরিকার অভিবাসী। তারা আমিরাতে এসেছেন কাজ করতে। এ মুসলিম দেশটির ইতিহাসে এখানে এটি ছিল খ্রীস্টান ধর্মীয় বৃহত্তম গণ অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন ৪ হাজার মুসলমানও। দেশটিতে অন্য ধর্ম সম্প্রদায়ের অনুষ্ঠানে সহিষ্ণুতা রয়েছে কিন্তু এতটা প্রকাশ্যে সাধারণত বিষয়টা দেখা যায় না।
×