ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৩ আগস্ট ২০২৫, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২

প্রস্টেট ক্যান্সারের এই ৬টি ইঙ্গিত অনেকেই অবহেলা করে যা মৃত্যুর কারণ

প্রকাশিত: ১১:২৫, ৩ আগস্ট ২০২৫

প্রস্টেট ক্যান্সারের এই ৬টি ইঙ্গিত অনেকেই অবহেলা করে যা মৃত্যুর কারণ

ছবিঃ সংগৃহীত

বিশ্বজুড়ে পুরুষদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বাধিক ক্যান্সার এবং পঞ্চম বৃহৎ মৃত্যুর কারণ হিসেবে প্রস্টেট ক্যান্সারকে চিহ্নিত করেছে গবেষণা। সমস্যাটি শুরু হয় নিঃশব্দে— কোনো সাইরেন বা চোখে পড়ার মতো ইঙ্গিত ছাড়াই।

প্রাথমিক পর্যায়ে এই ক্যান্সারের লক্ষণগুলো এতটাই সূক্ষ্ম হয় যে অনেকেই তা সাধারণ বার্ধক্যজনিত সমস্যা মনে করে উপেক্ষা করেন। কিন্তু শরীরের এই ছোট পরিবর্তনগুলোর মধ্যেই লুকিয়ে থাকতে পারে বিপদের বার্তা। নিচে এমন ৬টি লক্ষণ তুলে ধরা হলো, যেগুলো প্রস্টেট ক্যান্সারের ইঙ্গিত হতে পারে এবং বেশিরভাগ সময়েই উপেক্ষিত হয়।

রাতে বারবার প্রস্রাবের জন্য ওঠা – শুধু বার্ধক্য নয়?
রাতে একাধিকবার প্রস্রাবের জন্য উঠলে অনেকে তা বয়স বাড়ার স্বাভাবিক লক্ষণ বলে মনে করেন। তবে এটি প্রস্টেট গ্রন্থির পরিবর্তনের প্রথম দিককার সংকেতও হতে পারে।
প্রস্টেট বড় হয়ে গেলে বা ক্যান্সারে আক্রান্ত হলে মূত্রনালির ওপর চাপ সৃষ্টি করে, ফলে প্রস্রাবের ধারা ব্যাহত হয়। হঠাৎ এমন সমস্যা শুরু হলে তা অবহেলা করা উচিত নয়।

প্রস্রাব শুরুর সময় বিলম্ব
প্রস্রাব শুরু করতে গেলে যদি একটি “পজ” অনুভব হয়, তা প্রস্টেট সমস্যা হতে পারে। এটি ব্যথাহীন হতে পারে, তবে নিয়মিত হলে গুরুত্ব দেওয়া জরুরি।
প্রস্টেট ক্যান্সারে মূত্রনালির চারপাশের পেশি দুর্বল বা সংকুচিত হয়ে পড়তে পারে, ফলে প্রস্রাব শুরু বা বন্ধ করতে সমস্যা হয়।

দুর্বল বা থেমে থেমে প্রস্রাব হওয়া
যখন প্রস্রাবের ধারা হঠাৎ দুর্বল হয়ে যায় বা মাঝপথে বন্ধ হয়ে যায়, তখন অনেকেই তা সাময়িক সমস্যা বা পানির ঘাটতির ফল মনে করেন।
কিন্তু প্রস্টেটের টিউমার মূত্রনালির আংশিক রোধ ঘটালে এমনটা হতে পারে। ব্যথা না থাকলেও এটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ।

প্রস্রাবের পরও মূত্রথলিকে খালি মনে না হওয়া
প্রস্রাব করার পরও মনে হয় যেন পুরোপুরি খালি হয়নি— এটি প্রস্টেট বড় হয়ে গেলে ব্লাডার বা ইউরেথ্রার ওপর চাপের ফল।
ফলে বারবার প্রস্রাবের তাগিদ অনুভূত হয়, যদিও প্রকৃতপক্ষে ব্লাডার খালি থাকে।

হালকা ব্যথা বা জ্বালাভাব প্রস্রাবের সময়
অনেকেই প্রস্রাবের সময় হালকা জ্বালা বা অস্বস্তিকে ইউরিনারি ইনফেকশন (UTI) বা পানিশূন্যতার ফল মনে করেন।
তবে এটি প্রস্টেট ক্যান্সারজনিত প্রদাহের লক্ষণও হতে পারে। যদি অ্যান্টিবায়োটিক বা চিকিৎসা সত্ত্বেও সমস্যাটি না যায়, তাহলে অবশ্যই পরীক্ষা প্রয়োজন।

প্রস্রাবে বা বীর্যে রক্ত দেখা
মূত্র বা বীর্যের সঙ্গে রক্তের হালকা রেখা ভয়ঙ্কর মনে হলেও দ্রুত মিলিয়ে গেলে তা অনেক সময় উপেক্ষিত হয়।
তবে এমনকি একবার হলেও এই লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত, বিশেষ করে যদি কোনো আঘাত বা সুস্পষ্ট কারণ না থাকে।

পেলভিক বা কোমরে অজানা ব্যথা
নিচের পেট বা পিঠে আসা-যাওয়া করা হালকা ব্যথা অনেক সময় খারাপ বসার অভ্যাস বা ক্লান্তির জন্য মনে হলেও, তা প্রস্টেট ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে।
এই ব্যথা যদি বারবার ফিরে আসে বা বাড়তে থাকে, তা উপেক্ষা করা উচিত নয়।

দ্রষ্টব্য: এই প্রতিবেদনটি কেবল সাধারণ তথ্যের উদ্দেশ্যে লেখা। এটি চিকিৎসকের পরামর্শ, নির্ণয় বা চিকিৎসার বিকল্প নয়। যে কোনো স্থায়ী উপসর্গ বা স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

ইমরান

×