
সংগৃহীত
গর্ভাবস্থায় মায়ের আয়রনের মাত্রা শিশুর লিঙ্গ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে জানানো হয়েছে সাম্প্রতিক একটি গবেষণায়। আমরা সাধারণত জানি, শিশুর লিঙ্গ নির্ধারণ করে ডিএনএ-র ক্রোমোজোম — XY হলে ছেলে, আর XX হলে মেয়ে।
তবে সুইডেনের বিজ্ঞানীরা ইঁদুরের উপর পরিচালিত পরীক্ষায় দেখিয়েছেন, মায়ের আয়রনের ঘাটতি ভ্রূণের জেনেটিক নির্দেশনা অগ্রাহ্য করে লিঙ্গ পরিবর্তন ঘটাতে পারে।
গবেষকরা ইঁদুরের গর্ভে মায়ের আয়রনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে পরীক্ষা চালিয়েছেন। বিশেষত, যখন গর্ভবতী মায়ের শরীরে ফেরাস আয়রন (Fe²⁺) কম ছিল, তখন জেনেটিকভাবে পুরুষ (XY) ভ্রূণগুলোই নারীর মতো ডিম্বাশয় গঠন করতে শুরু করেছিল।
আয়রন এনজাইমগুলোকে কাজ করার জন্য সাহায্য করে, বিশেষ করে একটি এনজাইম KDM3A DNA-র উপর থাকা রাসায়নিক চিহ্ন সরাতে সাহায্য করে, যা হিস্টোন ডেমিথিলেশন নামে পরিচিত। এই প্রক্রিয়াটি অপরিহার্য,
কারণ এটি Sry নামক জিন সক্রিয় করে, যা অণ্ডকোষ গঠন শুরু করার নির্দেশ দেয়। কিন্তু মায়ের আয়রনের অভাবে KDM3A ঠিকমতো কাজ করতে না পারায়, Sry জিন নীরব থাকে এবং XY ভ্রূণ নারীসদৃশ ডিম্বাশয় তৈরি করে।
গবেষকরা দেখেছেন, গর্ভাবস্থায় লিঙ্গ নির্ধারণের সময় ইঁদুরের ভ্রূণের শরীর আয়রনের পথগুলো ব্যাপকভাবে সক্রিয় হয়। কিন্তু যখন বিভিন্ন পদ্ধতিতে মায়ের আয়রন হ্রাস করা হয় — যেমন, আয়রন পরিবহনের জিন মুছে ফেলা,
আয়রন-প্রতিরোধী ওষুধ প্রয়োগ, অথবা কম আয়রনযুক্ত খাবার দেওয়া — তখন কিছু জেনেটিক পুরুষ ভ্রূণ নারীসদৃশ দেহ গঠন করতে শুরু করে। এছাড়া সামান্য জিনগত পরিবর্তন মিলিয়ে আয়রনের অভাব আরও বেশি লিঙ্গ পরিবর্তনের দিকে পরিচালিত করেছিল।
গবেষকরা মনে করছেন, এই আবিষ্কার শিশুর লিঙ্গ বিকাশ শুধু জেনেটিক কোডের বিষয় নয়, বরং মাতৃভূমির পুষ্টি ও মৌলিক উপাদানের প্রভাবও গুরুত্বপূর্ণ। এটি ভবিষ্যতে মানবশিশুর লিঙ্গ নির্ধারণ এবং গর্ভাবস্থায় পুষ্টির ভূমিকা বোঝার ক্ষেত্রে নতুন দিশা দিতে পারে।
হ্যাপী