ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২১ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২

প্রস্রাব চেপে রাখা মানেই, শরীরে রোগ পুষে রাখা!

প্রকাশিত: ০০:৫৫, ২১ জুলাই ২০২৫

প্রস্রাব চেপে রাখা মানেই, শরীরে রোগ পুষে রাখা!

সংগৃহীত

অনেকেই ব্যস্ততা, লজ্জা বা অবহেলার কারণে দীর্ঘ সময় প্রস্রাব চেপে রাখেন। কিন্তু আপনি জানেন কি, এই অভ্যাস শুধু অস্বস্তি নয়, বরং শরীরের জন্য হতে পারে ভয়ংকর বিপদের কারণ? চিকিৎসকদের মতে, দীর্ঘ সময় ধরে মূত্র চেপে রাখলে পুরুষ ও নারীদের শরীরে নানা জটিলতা দেখা দিতে পারে।

 কী হতে পারে দীর্ঘসময় প্রস্রাব ধরে রাখলে?
প্রাথমিক লক্ষণ:

  • তলপেটে ব্যথা বা ভারী অনুভব
  • প্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়া
  • প্রস্রাবের ধরনে পরিবর্তন
  • বমিভাব বা মাথা ঘোরা

দীর্ঘমেয়াদি ঝুঁকি:

  •  ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (UTI):
  • দীর্ঘসময় প্রস্রাব আটকে রাখলে মূত্রথলিতে ব্যাকটেরিয়া জমে ইউরিন সংক্রমণ হতে পারে। নারীদের ক্ষেত্রে এটা বেশি সাধারণ।

 কিডনির ক্ষতি:

  • যদি মূত্রথলি থেকে প্রস্রাব ঠিকভাবে বের না হয়, তাহলে কিডনির উপর চাপ পড়ে। এতে কিডনি ফেইলিউরের ঝুঁকি তৈরি হয়।

 মূত্রথলির ক্ষতি ও দুর্বলতা:

  • চেপে রাখার ফলে মূত্রথলির পেশি দুর্বল হয়ে যায়। ফলে ভবিষ্যতে ঠিকভাবে মূত্র ধরে রাখতে না পারার (incontinence) সমস্যা দেখা দেয়।

মূত্রথলিতে পাথর:

  • চেপে রাখা মূত্রে খনিজ পদার্থ জমে মূত্রথলিতে পাথর তৈরি হতে পারে।

পুরুষদের জন্য অতিরিক্ত ঝুঁকি:

  • প্রস্রাব আটকে রাখার ফলে প্রস্টেট বড় হয়ে যেতে পারে।
  • রাতে ঘন ঘন প্রস্রাব লাগা বা সম্পূর্ণ মূত্রত্যাগে অসুবিধা হতে পারে।

 নারীদের জন্য অতিরিক্ত সমস্যা:

  • প্রস্রাব চেপে রাখার ফলে ইউরেথ্রা ও ব্লাডার ইনফেকশনের ঝুঁকি অনেক বেশি।
  • গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে এটা গর্ভধারণে জটিলতা তৈরি করতে পারে।

করণীয়:

  • দিনে কমপক্ষে ৬–৮ বার প্রস্রাব করা স্বাস্থ্যকর।
  • পানি পান করুন নিয়মিত, তবে প্রয়োজন বুঝে।
  • পাবলিক টয়লেট ব্যবহারে ভয় না পেয়ে পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করুন।
  • শিশুদের শুরু থেকেই ‘চেপে রাখার’ বদঅভ্যাস থেকে বিরত রাখুন।

আপনার মূত্রথলি কোনো ব্যাংক নয় যেখানে ইচ্ছেমতো সঞ্চয় রাখা যায়। শরীরের সিগন্যালকে অবহেলা না করে নিয়মিত প্রস্রাব করার অভ্যাস গড়ুন। নয়তো আজকের ব্যস্ততা কাল হয়ে উঠতে পারে স্থায়ী রোগের কারণ। স্বাস্থ্যই সম্পদ আর তার শুরু হয় ছোট অভ্যাস থেকে।

হ্যাপী

×