
ছবি: সংগৃহীত
জলবায়ু পরিবর্তনের এই সংকটময় সময়ে নবায়নযোগ্য শক্তি হিসেবে সৌরবিদ্যুৎকে দেখা হচ্ছে ভবিষ্যতের অন্যতম সম্ভাবনাময় জ্বালানি হিসেবে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কার্বন মুক্ত পরিবেশবান্ধব শক্তি উৎপাদনের জন্য গড়ে তোলা হচ্ছে বিশাল সোলার ফার্ম। তবে এই আশার আলোর মধ্যেই দেখা দিয়েছে অদৃশ্য এক বিপদ—বিপন্ন হচ্ছে পাখিসহ বিভিন্ন পরিবেশবান্ধব প্রাণী।
বর্তমানে বিশ্বজুড়ে দ্রুতগতিতে বাড়ছে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ। মরুভূমি, সমভূমি, এমনকি পরিত্যক্ত ভবনের ছাদেও বসানো হচ্ছে সোলার প্যানেল। তবে এসব প্রকল্পের বিস্তৃতির কারণে ব্যাপকহারে জমি দখল হচ্ছে এবং এতে প্রাকৃতিক বাস্তুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
অস্ট্রেলিয়ার মারডক বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশবিদ ট্রিস ফ্লেমিং এর গবেষণা বলছে, সৌর প্রকল্পের জন্য বিশ্বজুড়ে ইতোমধ্যেই ১৪ হাজার ৭০০ বর্গমাইল জমি দখল হয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের সমান। এতে শুধু বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্যই বিঘ্নিত হচ্ছে না, বরং সৌর প্যানেলের প্রতিফলিত আলো ও কালো রঙের কারণে অনেক পাখি ও প্রাণী বিভ্রান্ত হয়ে পড়ছে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে, পাখিরা পানির উৎস ভেবে সোলার প্যানেলে অবতরণ করছে, ফলে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছে তারা।
গবেষণায় আরও দেখা গেছে, সৌরশক্তি কেন্দ্রীভূত হওয়ার ফলে স্থানীয়ভাবে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অতিরিক্ত তাপ ও আলোয় পাখি পুড়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বসানো বৈদ্যুতিক বেষ্টনীতে আটকে পড়ছে ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী।
পরিবেশবিদরা বলছেন, প্রতি মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজন পড়ে ২ থেকে ৬ হেক্টর জমি, যা ব্যাপক জমি দখলের পাশাপাশি প্রাকৃতিক বাসস্থান ধ্বংস করছে। তবে সমস্যার সমাধানে বিজ্ঞানীরা পরামর্শ দিচ্ছেন ন্যানোটেক্সচার্ড সোলার প্যানেল ব্যবহারের, যা বিভ্রান্তিকর আলোর প্রতিফলন কমিয়ে দিতে পারে।
সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=CO_9gsU7gJQ
রাকিব