
আজকাল আমরা এমনভাবে মুঠোফোনের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি যে, খাওয়া-ঘুম তো দূরের কথা, এমনকি টয়লেটেও সেটি সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছি। অথচ এই অভ্যাসটি কেবল অস্বাস্থ্যকর নয়, বরং শরীরের জন্য বিপজ্জনকও বটে। বিশেষ করে, দীর্ঘ সময় ধরে কমোডে বসে মুঠোফোন চালানো পাইলসের ঝুঁকি বহুগুণে বাড়িয়ে দিতে পারে। এ বিষয়ে সতর্ক করেছেন স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেডের জেনারেল সার্জারি বিভাগের কনসালট্যান্ট ডা. ইসরাত ফয়সাল।
পাইলস কীভাবে হয়?
মলদ্বারে থাকা রক্তনালিগুলো যখন ফেঁপে যায় বা স্ফীত হয়, তখন তাকে সাধারণভাবে পাইলস বলা হয়। মূলত দীর্ঘ সময় ধরে মলদ্বারে চাপ প্রয়োগ করার ফলেই এটি হয়ে থাকে।
টয়লেটে মুঠোফোন চালিয়ে পাইলস বাড়ানোর দুটি প্রধান কারণ—
১. অপ্রয়োজনে দীর্ঘ সময় বসে থাকা
কমোডে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকলে শরীরের রক্ত সঞ্চালন ব্যাহত হয় এবং রক্তনালিতে অতিরিক্ত চাপ পড়ে, যা পাইলসের কারণ হতে পারে।
২. মলত্যাগে মনোযোগের অভাব ও কোষ্ঠকাঠিন্য
মুঠোফোনে মনোযোগ থাকার কারণে মলত্যাগ প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়। ফলে মল কঠিন হয়ে মলাশয়ে জমা হতে থাকে, কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়, এবং এতে পাইলসের ঝুঁকি বাড়ে।
কীভাবে এ অভ্যাস থেকে নিজেকে রক্ষা করবেন?
* টয়লেটে কখনোই মুঠোফোন, বই বা পত্রিকা নিয়ে যাবেন না।
* টয়লেটে দীর্ঘ সময় বসে থাকবেন না।
* মলত্যাগ না হলে জোর না দিয়ে উঠে গিয়ে হাঁটাহাঁটি করুন।
* প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করুন এবং আঁশযুক্ত খাবার, যেমন শাকসবজি, কলা ও খোসাসহ ফলমূল খেতে চেষ্টা করুন।
* প্রয়োজনে রাতে এক গ্লাস পানিতে এক চা–চামচ ইসপগুলের ভুসি মিশিয়ে খেয়ে ফেলুন।
* নিয়মিত শরীরচর্চা করুন।
* মলত্যাগের বেগ এলে তা কখনোই চেপে রাখবেন না।
মনে রাখবেন, একটু অসতর্ক অভ্যাস যেমন টয়লেটে মুঠোফোন ব্যবহার—দীর্ঘমেয়াদে আপনার জন্য কষ্টদায়ক রোগ ডেকে আনতে পারে। তাই এখনই সচেতন হন।
মুমু