ছবি: সংগৃহীত
কোষ্ঠকাঠিন্য বেশিরভাগ মানুষের এক সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিন যদি সকালে ভালোভাবে পেট পরিষ্কার না হয়, সারাদিন কোন কাজেই মন বসবে না। ভুল জীবনযাপন, খারাপ খাদ্যাভ্যাস, পানি স্বল্পতা, মানসিক চাপ এবং শারীরিক অনভ্যাস এই সমস্যার মূল কারণ।
রাতে ঘুমোনোর আগে কিছু নিয়ম মেনে চললেই সকালে ঘুম থেকে উঠে আপনাকে টয়লেট ছুটে যেতে হবে এবং পেট পরিষ্কার হয়ে যাবে। নিয়মগুলো হলো:-
প্রথমত, রাতে ঘুমোনোর আগে এক গ্লাস গরম পানি পান করতে হবে এবং আর্ধেক লেবুর রস মেশানো যেতে পারে। চাইলে এক চিমটে লবণ বা এক চা চামচ মধুও মেশাতে পারেন। লেবুর ভিটামিন সি এবং গরম জলের উষ্ণতা একসঙ্গে অন্ত্রের গতি বাড়িয়ে দেয় এবং দেহকে ডিটক্সিফাই করে।
দ্বিতীয়ত, ত্রিফলা চূর্ণ। যা হরীতকি, বহেরা এবং আমলকি দিয়ে তৈরি। একটি শক্তিশালী আয়ুর্বেদিক ওষুধ। রাতে ঘুমোনোর আগে এক থেকে দুই চামচ ত্রিফলা গরম জলের সঙ্গে খেলে অন্ত্রের গভীর পরিষ্কার হয় এবং নিয়মিত ব্যবহারে কোষ্ঠকাঠিন্য একেবারে দূর হয়।
তৃতীয়ত, ইসবগুল হল একটি প্রাকৃতিক ফাইবার সমৃদ্ধ উপাদান যা অন্ত্রকে পরিষ্কার করে। রাতে দুধ বা গরম জলে ১–২ চামচ ইসবগুল মিশিয়ে খেলে পুরনো কোষ্ঠকাঠিন্য থেকেও সহজে মুক্তি পাওয়া যায়। এটি সকালের মলত্যাগকে সহজ করে তোলে।
চতুর্থত, যদি আপনি গ্যাস, পেট ফাঁপা বা হজমের সমস্যায় ভোগেন, তাহলে জোয়ান ও মৌরির জল একটি দারুণ বিকল্প। এক গ্লাস জলে এক চা চামচ করে জোয়ান ও মৌরি ফুটিয়ে ছেঁকে হালকা গরম অবস্থায় পান করুন। এটি অন্ত্রকে আরাম দেয় এবং হজমশক্তি বাড়ায়।
পঞ্চমত, এক গ্লাস গরম দুধে এক চামচ ঘি মিশিয়ে রাতে ঘুমোনোর আগে খাওয়া একটি প্রাচীন ঘরোয়া পদ্ধতি। এটি অন্ত্রের আবরণকে মসৃণ করে তোলে, ফলে মলত্যাগ সহজ ও স্বাভাবিক হয়। একই সঙ্গে পেটের জ্বালা ও ফোলাভাব কমাতেও এটি কার্যকর।
এই ঘরোয়া টোটকার পাশাপাশি কিছু দৈনন্দিন অভ্যাসেও পরিবর্তন আনতে হবে। যেমন বেশি ফাইবারযুক্ত খাবার, ফল, শাকসবজি ও ওটস খাওয়া, দিনে অন্তত ৮–১০ গ্লাস জল পান করা, হালকা ব্যায়াম বা হাঁটাহাঁটি করা এবং মানসিক চাপ কমানোর জন্য ধ্যান ও যোগাভ্যাস। দীর্ঘদিন ধরে কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগলে এই ঘরোয়া পদ্ধতিগুলো মেনে চললে পেটের স্বাস্থ্য উন্নত হবে ও পরিপাকতন্ত্রও সুস্থ থাকবে।
দিল্লির গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট ডা. মেহেক সিংহ বলেন, "যেসব মানুষ দীর্ঘদিন কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছেন, তারা যদি ঘুমোনোর আগে এই ঘরোয়া টোটকাগুলো নিয়ম করে মেনে চলেন, তাহলে সকালে টয়লেট পরিষ্কার হওয়া এবং হজমশক্তির উন্নতি দুইই সম্ভব। তবে কারও যদি দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা থাকে, একবার চিকিৎসকের পরামর্শ অবশ্যই নেওয়া উচিত।"
শহীদ
