
ছবি: সংগৃহীত
স্ট্রোকের কারণে প্রতিদিন হাজারো মানুষ মারা যান। বিশেষ করে ‘ইসকেমিক স্ট্রোক’, যেখানে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতদিন ধরে চিকিৎসা ছিল ঝুঁকিপূর্ণ ও অনেকাংশে ব্যর্থ। তবে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এমন একটি নতুন ডিভাইস আবিষ্কার করেছেন, যা চিকিৎসাবিজ্ঞানে এক বিপ্লবের সূচনা করতে যাচ্ছে।
কিভাবে কাজ করে এই ‘মিলি-স্পিনার’?
বর্তমানে প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতি ‘থ্রম্বেকটমি’-তে ক্যাথেটার ব্যবহার করে রক্ত জমাট টেনে বের করা হয়। কখনও জাল বা ভ্যাকুয়াম ব্যবহার করে ক্লট (জমাট রক্ত) সরানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু এই পদ্ধতিতে ক্লট ভেঙে অন্য অংশে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থেকে যায়, যা মারাত্মক হতে পারে।
অন্যদিকে, 'মিলি-স্পিনার' একটি ঘূর্ণনশীল ছোট টিউব, যার ভেতরে ব্লেড ও স্লিট রয়েছে। এটি ক্যাথেটার দিয়ে মস্তিষ্কে ঢুকিয়ে ক্লটকে ধীরে ধীরে কেটে ফেলে এবং ভ্যাকুয়ামের মতো টেনে বের করে।
স্ট্যানফোর্ডের নিউরোইমেজিং বিশেষজ্ঞ জেরেমি হেইট বলেছেন, “আমরা যা দেখেছি, তা অবিশ্বাস্য। আগে যেসব জটিল ক্লট আমরা মাত্র ১১ শতাংশ ক্ষেত্রে সরাতে পারতাম, এখন মিলি-স্পিনার দিয়ে প্রথম চেষ্টাতেই ৯০ শতাংশ সফলতা পাচ্ছি। এটা চিকিৎসায় এক 'সি-চেঞ্জ'।”
প্রধান গবেষক ও যন্ত্রের নির্মাতা রেনি ঝাও বলেন, “আগের যন্ত্রগুলো ক্লটের আকার ছোট করতে পারে না। বরং তা ছিঁড়ে ফেলে। কিন্তু মিলি-স্পিনার ক্লটকে সংকুচিত করে তার আয়তন অনেকটাই কমিয়ে ফেলে।”
দলের গবেষণায় দেখা গেছে, এই ডিভাইস ক্লটের আকার ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে ফেলতে পারে!
যদিও এখন এটি স্ট্রোকজনিত ক্লট অপসারণে ব্যবহার হচ্ছে, তবে গবেষক ঝাও মনে করেন, “মিলি-স্পিনারের নকশা ভবিষ্যতে অন্যান্য চিকিৎসায় এমনকি চিকিৎসার বাইরেও কাজে লাগানো যেতে পারে।”
এখন এটি প্রাথমিক পরীক্ষা পর্যায়ে রয়েছে, তবে এর কার্যকারিতা এতটাই প্রতিশ্রুতিশীল যে, চিকিৎসা জগতে এক নতুন যুগের সূচনা হতে পারে বলেই ধারণা।
মুমু ২