
ছবি: প্রতীকী
ব্যাংক ঋণ খেলাপি হলে কিংবা বন্ধক রাখা সম্পত্তির বিপরীতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঋণ পরিশোধ না করলে সেই সম্পত্তি নিলামে উঠতে পারে—এমনটাই জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার লিমা আঞ্জুমান। সম্প্রতি একটি ভিডিওবার্তায় তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেন এবং সাধারণ মানুষকে আগেভাগে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন।
ব্যারিস্টার লিমা বলেন, অনেকেই প্রশ্ন করেন—‘আমি কী এমন করলাম যে আমার সম্পত্তি নিলামে উঠল?’ আসলে এটি কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নয়, বরং আইনি ও আর্থিক প্রক্রিয়ার একটি স্বাভাবিক ধাপ। মূলত ঋণ পরিশোধে ব্যর্থতার কারণেই ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান নিলামের মাধ্যমে টাকা উদ্ধারের পথ খোঁজে।
তিনি জানান, কেউ যদি ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করেন এবং সেই ঋণের সুরক্ষায় ফ্ল্যাট, জমি বা ভবন বন্ধক রাখেন, তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কিস্তি পরিশোধ না করলে প্রথমে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিলামের ঘোষণা দেওয়া হয়। এটি নিলাম প্রক্রিয়ার প্রাথমিক ধাপ।
এরপরেও যদি পাওনা আদায় না হয়, তাহলে অর্থঋণ আদালতে মামলা করতে পারে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান।
শুধু ব্যাংক নয়, ব্যক্তি পর্যায়েও কেউ যদি ঋণ দিয়ে বন্ধক হিসেবে কোনো সম্পত্তি গ্রহণ করেন, এবং ঋণগ্রহীতা সময়মতো অর্থ ফেরত না দেন, তাহলে তিনিও সেই সম্পত্তি বিক্রির মাধ্যমে টাকা উদ্ধার করতে পারেন। তবে এই বিক্রি সাধারণত গোপনে, ব্যক্তিগত চুক্তির মাধ্যমে হয়, প্রকাশ্য নিলামে নয়।
ব্যারিস্টার লিমা জানান, প্রকাশ্য নিলামের চিত্র সবচেয়ে বেশি দেখা যায় ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেই। কারণ, এসব প্রতিষ্ঠানের আইনি বাধ্যবাধকতা থাকে—নিলামের মাধ্যমে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করাই তাদের প্রথম করণীয়।
তিনি আরও বলেন, অনেক সময় নিলামের মাধ্যমে সম্পত্তি বিক্রি করেও পুরো ঋণ আদায় সম্ভব হয় না। তখন ব্যাংক অর্থঋণ আদালতের আশ্রয় নিতে পারে। আবার, নিলামে সম্পত্তি বিক্রি করতেই যদি সমস্যা হয়, সেক্ষেত্রেও আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার সুযোগ রয়েছে।
সবশেষে ব্যারিস্টার লিমা আঞ্জুমান পরামর্শ দেন—লোন নেওয়ার আগে কোন সম্পত্তি বন্ধক রাখা হচ্ছে এবং ঋণের শর্তাবলি কী—সে বিষয়ে সচেতন থাকা জরুরি। আর কোনো কারণে কিস্তি পরিশোধে সমস্যা দেখা দিলে সময় নষ্ট না করে ঋণদাতার সঙ্গে যোগাযোগ করে সমঝোতার চেষ্টা করাই হবে সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।
সূত্র: https://www.youtube.com/shorts/XUmLLRTCXao
রাকিব