
ছবিঃ সংগৃহীত
বাংলাদেশে জমি কেনাবেচা একটি সংবেদনশীল ও জটিল প্রক্রিয়া। অনেক সময় দলিল বৈধ থাকা সত্ত্বেও জমি হারানোর ঘটনা ঘটে। আইনজীবী ও ভূমি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জমি কেনার সময় কয়েকটি সাধারণ ভুল ক্রেতাকে আইনি ঝামেলায় ফেলে দেয়। নিচে এমন তিনটি প্রধান কারণ এবং প্রতিকারমূলক করণীয় তুলে ধরা হলো—
১. দলিলে ভুল দাগ নম্বর ও সীমানা উল্লেখ
জমি রেজিস্ট্রির সময় দলিলে ভুলভাবে দাগ নম্বর বা চৌহর্দি (সীমানা) লেখা হলে, সেই জমির উপর আইনি অধিকার প্রতিষ্ঠা করা কঠিন হয়ে পড়ে। এমন ভুল সাধারণত দলিল লেখকের অসতর্কতা, দাতার চাতুরতা কিংবা গ্রহীতার অজ্ঞতার কারণে ঘটে। এতে জমি দখল, নামজারি বা ব্যবহার—সবকিছুতেই জটিলতা দেখা দেয়।
২. অবিভক্ত ওয়ারিশি সম্পত্তির পুরোটা কেনা
বাংলাদেশে অনেক জমিই এখনো ওয়ারিশদের মধ্যে ভাগ হয়নি। কোনো একজন ওয়ারিশ তার অংশ বিক্রি করলেও দলিলে পুরো সম্পত্তির মালিক দেখিয়ে বিক্রি করে থাকেন। কিন্তু বাস্তবে তার মালিকানা ৫০% না হয়ে ১০-১৫% হতে পারে। এ ধরনের ক্ষেত্রে বাকি অংশে নামজারি বা দখল করা সম্ভব হয় না এবং অন্যান্য ওয়ারিশরা বিরোধ তৈরি করেন।
৩. সকল ওয়ারিশের সম্মতি ছাড়া বিনিময় বা বিক্রি
ওয়ারিশি জমি বিনিময়ের সময় যদি সব ওয়ারিশের সম্মতি ও স্বাক্ষর না থাকে, তাহলে ভবিষ্যতে অন্য ওয়ারিশরা আপত্তি জানাতে পারেন। অনেকে নিজের অংশের চেয়ে বেশি জমি বিক্রি করে দেন, যা পরবর্তীতে আইনি ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
কী করবেন জমি কেনার আগে?
বিশেষজ্ঞরা নিচের কয়েকটি করণীয় পরামর্শ দিয়েছেন—
✅ জমি কেনার আগে সরজমিনে গিয়ে চৌহর্দি মিলিয়ে নিন
✅ দলিলে উল্লেখিত দাগ নম্বর ও রেকর্ড তথ্য যাচাই করুন
✅ সব ওয়ারিশদের কাছ থেকে প্রত্যাখ্যান (নাদাবি) সনদ সংগ্রহ করুন
✅ অভিজ্ঞ আইনজীবীর মাধ্যমে দলিলটি ভালোভাবে পড়ে বুঝে রেজিস্ট্রি করুন
✅ অবিভক্ত জমি হলে সবার সঙ্গে আলোচনা করে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করুন
সতর্কতা এবং সচেতনতা থাকলে জমি কেনাবেচা নিরাপদ ও সুষ্ঠু হতে পারে। দলিলই শেষ কথা নয়—আইনি দিক, বাস্তব মালিকানা এবং পারিবারিক অবস্থা যাচাই না করে জমি কেনা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
সূত্র: https://youtu.be/T2QXbcgueAA?si=TYq4CIrE2gJ_Hk4j
আলীম