
ছবি: প্রতীকী
অনেক সময় বিয়ের কাবিননামায় নাম, জন্মতারিখ, ঠিকানা বা বাবার নামের মতো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ভুলভাবে লেখা হয়। বিষয়টি অনেকে গুরুত্ব না দিলেও এসব ছোটখাটো ভুল ভবিষ্যতে বড় ধরনের জটিলতার কারণ হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার লিমা আঞ্জুমান।
সম্প্রতি একটি ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘বিয়ের কাবিননামা শুধু একটি ধর্মীয় বা সামাজিক দলিল নয়—এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি সার্টিফিকেট, যেটি বিভিন্ন অফিসিয়াল ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়।’ তিনি জানান, বিদেশ ভ্রমণ, উচ্চশিক্ষা, পেনশন, সম্পত্তি উত্তরাধিকার বা সরকারি চাকরির মতো বহু কাজে বিয়ের কাবিননামা গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে উপস্থাপন করতে হয়।
ভুল থাকলে কী সমস্যা হতে পারে?
ব্যারিস্টার লিমা বলেন, ‘আপনার নামের বানান, জন্মতারিখ বা ঠিকানা কাবিননামায় ভুল থাকলে তা জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট বা শিক্ষাগত সনদের সঙ্গে মিলবে না। তখন কাগজপত্রে গরমিল দেখা দেওয়ায় আপনি হয়রানির শিকার হতে পারেন, এমনকি আপনার দাবিও বাতিল হতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই ভুলগুলোকে যতই সামান্য মনে হোক না কেন, আসলে এগুলো একটি সার্টিফিকেটের নির্ভরযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। তাই ভুল খুঁজে পেলে যত দ্রুত সম্ভব তা সংশোধন করা উচিত।’
কীভাবে সংশোধন করবেন?
বিয়ের কাবিননামায় ভুল থাকলে সংশোধনের জন্য প্রথমেই বিয়ে পড়ানো কাজী সাহেবের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন ব্যারিস্টার লিমা। তিনি বলেন, ‘কাজী সাহেবকে লিখিতভাবে একটি সংশোধনের আবেদন দিলে তিনি সাধারণত বালাম খাতায় সংশোধন করে দিতে পারেন। তবে শুধু কাবিননামার সার্টিফাইড কপিতে নয়, মূল রেজিস্ট্রার খাতায়ও সংশোধন হয়েছে কিনা, তা যাচাই করে নেওয়া জরুরি।’
তবে যদি কাজী মারা যান, অথবা বিয়ে বহু বছর আগের হয়ে থাকে এবং সংশ্লিষ্ট কাজী বর্তমানে দায়িত্বে না থাকেন, তাহলে সংশ্লিষ্ট জেলার সাব-রেজিস্টার অফিসে অবস্থিত জেলা কাজী অফিসে আবেদন করার পরামর্শ দেন তিনি। কারণ সেখানে জেলার সব কাজীর রেকর্ড সংরক্ষিত থাকে এবং সঠিক যাচাই-বাছাই করে সংশোধনের সুযোগ থাকে।
ব্যারিস্টার লিমা আঞ্জুমান বলেন, ‘বিয়ের কাবিননামার মতো গুরুত্বপূর্ণ দলিলে ছোট একটি ভুলও হতে পারে ভবিষ্যতের বড় বিপদের কারণ। তাই বিবাহের পরেই বর-কনের উচিত কাবিননামাটি মনোযোগ দিয়ে খুঁটিয়ে দেখা এবং প্রয়োজনে যথাযথভাবে সংশোধনের ব্যবস্থা নেওয়া।’
আইনজীবীদের মতে, এ বিষয়ে সচেতন না হলে পেনশন, উত্তরাধিকার, বিদেশে স্থায়ী হতে চাওয়া কিংবা সরকারি সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে নানা ধরনের জটিলতায় পড়তে হতে পারে।
সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=EdOvvEKhh-A
রাকিব