ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২

টাকা ধার দিয়ে বিপাকে? প্রতিকারে আইনি প্রক্রিয়া জানালেন আইনজীবী

প্রকাশিত: ১৭:৩৫, ১৭ জুন ২০২৫

টাকা ধার দিয়ে বিপাকে? প্রতিকারে আইনি প্রক্রিয়া জানালেন আইনজীবী

ছবি: প্রতীকী

বাংলাদেশের পারিবারিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে আত্মীয়স্বজন কিংবা ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে টাকা ধার দেওয়া একটি সাধারণ ঘটনা। কিন্তু এই আর্থিক সহযোগিতা যদি কোনও লিখিত প্রমাণ ছাড়াই হয়, তাহলে পরবর্তীতে তা হয়ে দাঁড়াতে পারে দুঃস্বপ্নের নাম। টাকা ফেরত না পেলে আইনি লড়াই শুরু করলেও অনেকক্ষেত্রে ফলাফল হয় হতাশাজনক। কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই লেনদেন হয় কোনও লিখিত প্রমাণ ছাড়াই।

সম্প্রতি একটি ভিডিও আলোচনায় আইনজীবী ব্যারিস্টার লিমা আঞ্জুমান এই বিষয়ে সরল ভাষায় তুলে ধরেন আইনি সতর্কতা। তিনি বলেন, ‘বিশ্বাসের জায়গা থেকে টাকা ধার দেওয়া হয় ঠিকই, কিন্তু যখন সেই টাকা ফেরত আসে না, তখন অনেকেই বুঝতেই পারেন না কোথা থেকে শুরু করবেন আইনি লড়াই।’

প্রমাণ ছাড়া পাওনা টাকা আদায় কঠিন

ব্যারিস্টার লিমা বলেন, ‘আপনি যদি কারো কাছে দীর্ঘদিনের পাওনা টাকা ফেরত না পান, তাহলে প্রথমেই দেখা হবেআপনার কাছে সেই পাওনার কোনো লিখিত প্রমাণ আছে কি না। মৌখিক চুক্তি, কথার উপর বিশ্বাসএসব আদালতে খুব একটা গ্রহণযোগ্য নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘এমনকি আপন ভাই বা ঘনিষ্ঠ বন্ধুর কাছেও টাকা ধার দেওয়ার সময় যদি চুক্তিপত্র না থাকে, তাহলে ভবিষ্যতে মামলা করলেও ফল পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।’

তিনটি করণীয় যা রক্ষা করবে আপনার অর্থ

টাকা ধার দেওয়ার আগে কিছু সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেন ব্যারিস্টার লিমা। তার মতে, নিচের তিনটি পদক্ষেপ মানলেই ভবিষ্যতের জটিলতা অনেকটা কমে আসবে:

১. সাক্ষীর উপস্থিতিতে লেনদেন করুন: অন্তত একজন নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি যেন উপস্থিত থাকেন এবং সাক্ষ্য দিতে পারেন।

২. লিখিত চুক্তিপত্র তৈরি করুন: নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে চুক্তি লিখে রাখুন, যেখানে স্পষ্ট থাকবেটাকার পরিমাণ, ফেরতের তারিখ, কিস্তি বা সুদের ধরন ইত্যাদি।

৩. আইনজীবীর পরামর্শ নিন: বিশেষ করে বড় অঙ্কের টাকার ক্ষেত্রে, একজন আইনজ্ঞের সহায়তা নিয়ে বৈধভাবে দলিল তৈরি করুন।

‘বিশ্বাস’ দিয়ে নয়, ‘আইনি প্রক্রিয়া’ মেনে চলুন

বাংলাদেশের সামাজিক বাস্তবতায় দেখা যায়, মান-সম্মান বা ঘনিষ্ঠতার কারণে অনেকেই লিখিত কিছু না করেই অর্থ সহায়তা দেন। ব্যারিস্টার লিমা বলেন, “এই মানসিকতা একদিকে যেমন সম্পর্কের ভার বহন করে, তেমনি অর্থ হারানোর ঝুঁকিও বহন করে। তাই ‘ভালো মনে টাকা দেওয়া’ যেন পরে আপনার জন্য দুঃস্বপ্নে পরিণত না হয়।”

তিনি আরও বলেন, ‘অন্য কেউ নয়, নিজের টাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব আপনারই। আগে থেকে সচেতন হলে, পরে আদালতে দৌড়াতে হবে না।’

 

সূত্র: https://www.youtube.com/shorts/eWnfdxdnyXI

 

রাকিব

×