
ছবি: প্রতীকী
সম্পত্তি বণ্টন নিয়ে ভাইয়ে ভাইয়ে, বাবা-ছেলে কিংবা পরিবারে দীর্ঘদিনের বিবাদ নতুন কিছু নয়। কিন্তু অনেকেই জানেন না—আইন অনুযায়ী বণ্টননামা দলিল ছাড়াও কিছু নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে সম্পত্তি ভাগাভাগি করা সম্ভব। সম্প্রতি একটি ভিডিওতে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট বেলায়েত হোসেন এ বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেন।
তিনি বলেন, মৃত্যুর পর মৃত ব্যক্তির রেখে যাওয়া সম্পত্তি উত্তরাধিকারীদের মধ্যে কে কোন অংশ নেবেন, কে কোন দিক দিয়ে ভোগ করবেন, সেটি নির্ধারণ করে ভাগাভাগির যে পদ্ধতি—তাই মূলত বণ্টন। কিন্তু মৃত্যুর পর সম্পত্তি ভাগাভাগি নিয়ে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে প্রায়ই দ্বন্দ্ব, মামলা-মোকদ্দমা এবং সামাজিক কলহ দেখা যায়। এই বিবাদ এড়াতে সরকার ২০০৫ সাল থেকে বণ্টননামা রেজিস্ট্রি বাধ্যতামূলক করেছে।
তবে অ্যাডভোকেট বেলায়েত হোসেন জানান, জীবিত অবস্থায়ই সম্পত্তি ভাগ করে দিলে বণ্টননামার প্রয়োজন হয় না। এ জন্য আছে দুটি আইনসম্মত উপায়—
১. উইল বা অসিয়ত
একজন মুসলমান চাইলে অসিয়ত (ফারসি শব্দ), আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা উইল (ইংরেজি শব্দ) করে সম্পত্তি ভাগ করতে পারেন। তবে উইল বা অসিয়তের কার্যকারিতা মৃত্যুর পর শুরু হয় এবং একে কার্যকর করতে আদালত থেকে ‘প্রবেট’ নিতে হয়। এই প্রক্রিয়া তুলনামূলক জটিল, সময়সাপেক্ষ এবং আইনি জটিলতায় ভরা।
২. সপক্রয়ে হেবা বা সাফ কবলা
আরেকটি সহজ ও কার্যকর উপায় হলো, জীবিত অবস্থায় সম্পত্তির মালিক নিজে ইচ্ছাকৃতভাবে ও সজ্ঞানে তার উত্তরাধিকারীদের মধ্যে সম্পত্তি হেবা বা সাফ কবলা দলিলের মাধ্যমে লিখে দিয়ে যেতে পারেন। এটি করলে মালিক মৃত্যুর আগেই তার মালিকানাধীন সম্পত্তি অন্যদের নামে লিখে দেন এবং মৃত্যুর পর কোনো ধরনের আইনি জটিলতা থাকে না। এই প্রক্রিয়ায় জমির দখল হস্তান্তরও সহজ হয় এবং ভবিষ্যতে বণ্টননামার প্রয়োজন পড়ে না।
তিনি আরও বলেন, ‘যদি কেউ নিজের সন্তানের কাউকে গোপনে কিছু সম্পত্তি লিখে দিয়ে যান, তাও বৈধ—কারণ তিনি নিরঙ্কুশ মালিক। আর সেই সম্পত্তিতে অন্য কোনো সন্তানের অধিকার থাকবে না। এটি আইনি দৃষ্টিকোণ থেকে প্রশ্নাতীত।’
সুতরাং, ‘যারা ভবিষ্যৎ পারিবারিক কলহ এড়াতে চান, তাদের উচিত জীবিত থাকাকালেই পরিকল্পিতভাবে হেবা বা উইলের মাধ্যমে সম্পত্তি বণ্টনের সিদ্ধান্ত নেওয়া’, বলে মত দেন অ্যাডভোকেট বেলায়েত হোসেন।
সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=jqLHRplLPvo
রাকিব