ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৯ মে ২০২৫, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ক্যান্সার বাড়ায় যে ৫টি খাবার, যা আপনি প্রতিদিন খাচ্ছেন!

প্রকাশিত: ০৪:৪৬, ২৮ মে ২০২৫

ক্যান্সার বাড়ায় যে ৫টি খাবার, যা আপনি প্রতিদিন খাচ্ছেন!

ছবি: সংগৃহীত

বর্তমান সময়ে খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন ও খাদ্যপ্রস্তুতিতে ব্যবহৃত নানা রাসায়নিক পদার্থ মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে বাজারে পাওয়া আটার গুণগতমান থেকে শুরু করে প্রক্রিয়াজাত মাংস, চিনির ব্যবহার ও পপুলার ফাস্ট ফুড আলুর চিপস—সবকিছুতেই লুকিয়ে রয়েছে ক্যান্সারের ঝুঁকি।

আটার পরিশোধন ও ক্লোরিন ব্লিচিং: পুষ্টির বড়ো চুরি
আটাকে সাধারণত আটবার পরিশোধন করা হয়, যা পুষ্টিগুণের প্রায় সবটুকু শেষ করে দেয়। এরপর তা ক্লোরিন গ্যাস দিয়ে ব্লিচ করা হয়, যা দেখতে সাদা ও আকর্ষণীয় হয়, কিন্তু মানবদেহের জন্য একেবারেই ক্ষতিকর। গবেষকরা বলছেন, এই ধরনের আটা শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা হঠাৎ করে বাড়িয়ে দেয়, যা ডায়াবেটিস ও ক্যান্সারের মতো গুরুতর রোগের কারণ হতে পারে।

চিনির পরিবর্তে প্রাকৃতিক মিষ্টি: মধু, গুড় ও ম্যাপেল সিরাপ
বর্তমানে প্রক্রিয়াজাত চিনির ব্যবহার স্বাস্থ্যঝুঁকি বহন করে। ক্যান্সার কোষ প্রক্রিয়াজাত চিনিকে প্রিয় খাবার হিসেবে গ্রহণ করে দ্রুত বৃদ্ধি পায়। তাই চিনির বদলে প্রাকৃতিক মিষ্টিজাতীয় যেমন মধু, গুড় কিংবা ম্যাপেল সিরাপের ব্যবহার স্বাস্থ্যকর বিকল্প।

প্রক্রিয়াজাত মাংস: অগ্নাশয় ক্যান্সারের ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ হাওয়াইয়ের গবেষণায় প্রকাশ পায়, প্রক্রিয়াজাত মাংস ব্যবহারে অগ্নাশয় ক্যান্সারের ঝুঁকি প্রায় ৬৭ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। এই ধরনের মাংসে থাকে উচ্চমাত্রার রাসায়নিক সংরক্ষক, ধোঁয়া ও স্মোকের পদার্থ, যা মানবদেহের জন্য বিষাক্ত। বিশেষ করে ধোঁয়া বা স্মোকের কারণে তৈরি বিষাক্ত পদার্থ শরীরে জমা হয়ে ক্যান্সারসহ নানা জটিলতা সৃষ্টি করে।

মাছ চাষের রাসায়নিক ও আলুর চিপসে ‘অ্যাক্রিলামাইট’: লুকিয়ে থাকা ভয়
আজকাল মাছ চাষে জীবাণু, ভাইরাস ও পরজীবী থেকে বাঁচাতে ব্যবহৃত বিভিন্ন জীবাণুনাশক ও কীটনাশক রাসায়নিক ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। একইভাবে, শিশু ও বড়ো সবার পছন্দের আলুর চিপসকে ক্রিস্পি বা মচমচে করতে উচ্চ তাপমাত্রায় ভাজলে ‘অ্যাক্রিলামাইট’ নামক কারসিনোজেন (ক্যান্সার সৃষ্টি করা পদার্থ) তৈরি হয়।


বর্তমান খাদ্যাভ্যাস আমাদের স্বাস্থ্যকে বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। পুষ্টিগুণহীন প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, রাসায়নিক দ্বারা দূষিত মাছ ও ভাজাপোড়া খাবার আমাদের দেহে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি করছে। তাই প্রয়োজন স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণের প্রতি বিশেষ যত্ন নেওয়া এবং প্রক্রিয়াজাত খাদ্য ও চিনির ব্যবহার কমিয়ে আনা।

স্বাস্থ্যকর খাদ্যের মাধ্যমেই আমরা ক্যান্সারসহ নানা জটিল রোগ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারি। তাই প্রতিদিনের খাদ্য নির্বাচন যেন হয় বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে, পুষ্টিকর ও নিরাপদ।

এসএফ 

×